চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং তার দুইদিনের মস্কো সফর শেষ করে বুধবার, ২২শে মার্চ দেশে ফিরলেন। গত সোমবার, ২০শে মার্চ, রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি পুতিনের সাথে শি-র আনুষ্ঠানিক কোনো কথা না হলেও দুইজনেই এই সফরকে ঘিরে উচ্ছ্বাস ব্যক্ত করেছিলেন।
মঙ্গলবার, ২১শে মার্চ, শি এবং পুতিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিক কথা শুরু হয় বিভিন্ন বিষয়ে। দুজনে একটি যৌথ বিবৃতিও পেশ করেন। যৌথ বিবৃতিতে ইউক্রেনে হস্তক্ষেপ নিয়ে পশ্চিমের তীব্র সমালোচনা করেন পুতিন।
শি এবং পুতিন উভয়ই একটি শক্তিশালী চীন–রাশিয়া সম্পর্কের প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে বলেন যে বহুমেরুর পৃথিবী ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের লক্ষ্যে চীন ও রাশিয়া বহুদিন ধরে উদ্যোগ নিয়ে আসছে ও ভবিষ্যতেও তারা তাই করবে।
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও মজবুত করে তোলার পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিষয়ে কৌশলগত মতৈক্য প্রকাশ করার জন্যও যে দুই দেশ উদ্যোগ নিয়েছে তা এই যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়। যৌথ বিবৃতিতে আরও বলা হয় যে চীন এবং রাশিয়ার দ্বিপাক্ষিক বানিজ্য ২০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
এছাড়াও কৃষিক্ষেত্রে চীন এবং রাশিয়ার দ্বিপাক্ষিক বানিজ্য যে ৪১% বেড়েছে তাও যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আদানপ্রদানের মাধ্যমে চীন এবং রাশিয়ার সম্পর্ক মজবুতের কথা ছাড়াও ইউক্রেনে পশ্চিমা হস্তক্ষেপের দিকে আঙুল তোলা হয় এই যৌথবিবৃতিতে।
পুতিন যুক্তরাজ্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন যে চীন এবং রাশিয়া যখন ইউক্রেন সংঘর্ষের শান্তি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করছে তখন যুক্তরাজ্য ইউক্রেনে ট্যাঙ্ক এবং পারমাণবিক উপাদান পাঠাচ্ছে, এর থেকেই বোঝা যায় যে পশ্চিম ইউক্রেনে হস্তক্ষেপ করেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার মনোভাব নিয়েই।
শি পশ্চিমের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক কিছু না বললেও পুতিনের সুরেই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি ও বহুমেরুর বিশ্ব স্থাপনের লক্ষ্যে কাজ করাকে প্রাধান্য দেন। জাতিসংঘের নির্দেশিকা মেনে ইউক্রেন সংঘর্ষের বিরতির উপায় খোঁজাকেও তিনি উল্লেখ করেন এবং বারংবার চীন ও রাশিয়ার সম্পর্ককে আরও মজবুত করার লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার বিষয়ে কথা বলেন।
শি-র মস্কো সফর শেষের দিন ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ পশ্চিমকে তীব্র সমালোচনা করে জানান যে চীন রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের মস্কো সফরই রাশিয়ার কাছে প্রাধান্য পাবে, পশ্চিমা শত্রুতামূলক প্রতিক্রিয়া নয়। রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের সহ সভাপতি দিমিত্রি মেদভেদেভ পশ্চিমা প্রতিক্রিয়াকে বিদ্রুপ করে জানান যে চীন এবং রাশিয়ার উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের সাপেক্ষে পশ্চিমা প্রতিক্রিয়া আসায় তিনি খুশী।