রাশিয়ার প্রতিবেশী দেশ সুইডেনের উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থা বা NATO তে যোগ দেওয়া আবার অনিশ্চিত হয়ে পড়লো। সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী টোবিয়াস বিলস্ট্রম শনিবারস্থানীয় সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেসেনকে বলেছেন যে দেশটির NATO-তে যোগ দেবার প্রক্রিয়া থমকে গেছে, “গত কয়েক সপ্তাহের ঘটনাগুলি অস্থায়ীভাবে প্রক্রিয়াটিকে থামিয়ে দিয়েছে,” বিলস্ট্রম পত্রিকাকে বলেছেন, সুইডিশ সরকার এখন প্রক্রিয়াটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করার জন্য শক্তি এবং সময় নিয়োগ করছে৷
২১ জানুয়ারি সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে তুরস্কের দূতাবাসের সামনে পবিত্র কোরআন পোড়ান অতি দক্ষিণপন্থীনেতা রাসমুস পালুদান। এই ঘটনার পর মুসলিম অসন্তোষের মধ্যেই আবার ২৭ জানুয়ারী ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনের পাশে একটি মসজিদের সামনে ও দেশটিতে তুরস্কের দূতাবাসের সামনে কুরআন পোড়ানো হয়। ফলত দুনিয়ার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ গুলোয় ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
২৪ জানুয়ারী আধা-সরকারি সংস্থা আনাদোলু জানাচ্ছে সুইডেনের NATO তে প্রবেশের আবেদনে তুরস্কের সমর্থন জানানো উচিৎ কিনা এই নিয়ে তারা ট্যুইটারে ২৪ ঘন্টার একটি সার্ভে করে। এই সার্ভেতে ৫০,১৫৫ জন অংশগ্রহণ করে। ফলাফলে দেখা গেছে ৯২.৫ % ভোট পড়েছে সুইডেনকে সমর্থন করার বিপক্ষে!
নতুন কোনো দেশকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য, NATO এর সদস্যদের সর্বসম্মত অনুমোদনের প্রয়োজন, যার মধ্যে তুরস্ক একটি। তুর্কী দূতাবাসের সামনে কুরআন পোড়ানোর পর সুইডেনের আবেদন মঞ্জুর করতে বেঁকে বসে তুরস্ক। বিলস্ট্রোম বলেছেন তা সত্ত্বেও, সুইডিশ সরকার এই গ্রীষ্মে ন্যাটোতে যোগ দিতে আশাবাদী।
হাঙ্গেরি এবং তুরস্ক হল ৩০-সদস্যের পশ্চিমা সামরিক জোটের দুটি দেশ যারা ফিনল্যান্ড এবং সুইডেনের আবেদনে স্বাক্ষর করেনি। যদিও হাঙ্গেরি ফেব্রুয়ারিতে এটি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু বৃহস্পতিবার বলেছেন যে সুইডেন এবং ফিনল্যান্ডের ন্যাটো সদস্যপদ নিয়ে আলোচনার জন্য ব্রাসেলসে একটি পরিকল্পিত বৈঠক স্থগিত করা হয়েছে।
মার্কিন সংবাদ সংস্থা এসোসিয়েট প্রেস জানাচ্ছে ইসলাম বিরোধী রাজনৈতিক নেতা পালুদান, যিনি ড্যানিশ এবং সুইডিশ উভয় নাগরিকত্ব ধারণ করেছেন, উভয় দেশেই অতি-ডানপন্থী দলগুলি প্রতিষ্ঠা করেছেন যারা জাতীয়, আঞ্চলিক বা পৌরসভা নির্বাচনে কোনো আসন জিততে ব্যর্থ হয়েছে। সুইডেনে গত বছরের সংসদীয় নির্বাচনে, তার দল দেশব্যাপী মাত্র ১৫৬টা ভোট পেয়েছিল। তার কোরআন পোড়ানোর ফলে তুরস্কে পাল্টা প্রতিবাদ শুরু হয়, যেখানে বিক্ষোভকারীরা তার ছবি এবং একটি সুইডিশ পতাকা পুড়িয়ে দেয়।