Close

নির্বাচনে হিংসা নিয়ে বিস্মিত হাইকোর্ট! বুধবার ছিল মামলার শুনানি

হাইকোর্ট কমিশনকে ৬হাজার বুথে পুনর্নির্বাচনের বিষয়ে ভাবার নির্দেশ দিল। নির্বাচনে এই পরিমাণ অশান্তি নিয়ে বিস্মিত হাইকোর্ট।

হাইকোর্ট কমিশনকে ৬হাজার বুথে পুনর্নির্বাচনের বিষয়ে ভাবার নির্দেশ দিল। নির্বাচনে এই পরিমাণ অশান্তি নিয়ে বিস্মিত হাইকোর্ট।

অশান্তি এবং পুননির্বাচনের দাবিতে তিনটি নতুন জনস্বার্থ মামলা করেছেন শুভেন্দু অধিকারী, প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল এবং ফরহাদ মল্লিক। রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটে অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে রাজ্য নির্বাচনের কাছে কৈফিয়ত তলব করে যে উত্তরগুলি পাওয়া গিয়েছে তা যথেষ্ট নয় বলছে কলকাতা হাইকোর্ট। পঞ্চায়েত মামলার শুনানিতে এই পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়ে বুধবার কলকাতা হাইকোর্ট-এর প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে মামলাকারীদের সব তথ্য আদালতে জমা দিতে হবে। আগামী ১৮ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি।

কমিশনের কোনও অফিসার বুধবারের এই শুনানিপর্বে আদালতে আসেননি। কমিশনের প্রতিনিধির অনুপস্থিতিতেই প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে অসহযোগিতার বিষয় বিশেষ ভাবে কোর্ট দেখবে। কমিশনকে পুনর্নিবাচন নিয়ে আবার ভেবে দেখতে হবে। যে বুথগুলির প্রসঙ্গ মামলায় এসেছে সেগুলি খুঁটিয়ে দেখতে হবে। যে ঘটনা ঘটেছে তার দায়িত্ব নিতে হবে কমিশনকে। রাজ্য সরকার ভোটের ফলাফলের পরেও কোনও অশান্তি সামলাতে পারেনি, এই ঘটনায় আদালত অবাক হয়েছে বলেও জানিয়েছে বেঞ্চ। শুনানির দিন প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘রাজ্য যদি নিজের নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে না পারে তা হলে সেটা গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে নোট করবে আদালত। কমিশনকে নির্দেশ হলফনামা দেওয়ার। আদালতের নজরে সব রয়েছে।’’

হাইকোর্ট জানিয়েছে জয়ী প্রার্থীদের উদ্দেশে নির্বাচন কমিশনকে ঘোষণা করতে হবে যে, আদালতের নির্দেশের উপর তাঁদের ফল নির্ভর করবে। ৫০০০ বুথে পুননির্বাচনের যে দাবি করা হয়েছে নির্বাচন কমিশনারকে তা নিয়ে বিবেচনা করে দেখতে হবে বলেও জানিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।

হাইকোর্ট মনে করছে মানুষের জীবনধারণের স্বাধীনতার সঙ্গে আপস করা হচ্ছে। এবং পুলিশ নিরীহ মানুষকে সাহায্য করছে না বলে অভিযোগ। সাধারণ মানুষের শান্তি যাতে ভঙ্গ না হয় তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাজ্যের। যদি এটি তারা না করতে পারে তা খুবই উদ্বেগের। এবং এটিকে গুরুতর বিষয় হিসাবে আদালত নথিবদ্ধ করবে। কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবীও কমিশনকে দুষে বলেন, ‘‘আজ পর্যন্ত কমিশনের কাছ থেকে আমরা স্পর্শকাতর বুথের তালিকা পাইনি। বিকেল সাড়ে ৩টের সময় কমিশনারকে ডেকে পাঠানো উচিত। কেন তিনি আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও সহযোগিতা করেননি?’’

মামলায় আবেদনকারীর আইনজীবী প্রিয়ঙ্কা জানিয়েছেন, ‘‘অভিযোগ জানানোর জন্য আমি একটি ইমেল আইডি খুলেছি। এখনও অবধি ২৫০টি অভিযোগ পেয়েছি। রাজ্য জুড়ে অশান্তি চলছে। পরাজিত প্রার্থীদের উপর অত্যাচার হচ্ছে। গণনাকেন্দ্র থেকে পরাজিত এই মহিলা প্রার্থীকে চুলের মুঠি ধরে বার করে দেওয়া হচ্ছে। আর এ সবে ভূমিকা রয়েছে পুলিশের। শাসকদলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তারা কাজ করছে। বাড়ি, দোকান ভাঙচুর চলছে। ক্ষমতা দখলের জন্য তৃণমূল এত কেন ক্ষুধার্ত? আমি বলব, তৃণমূল ক্ষমতায় থাকলে ভোট দিতে যাবেন না। আপনারা ক্ষমতায় থাকুন। আমাদের শুধু বাঁচতে দিন। সন্ত্রাস, হিংসা করবেন না।’’

হাইকোর্ট-এর প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানম সে সময় বলেছেন, ‘‘আমরা যা নির্দেশ দিয়েছিলাম তার কি কোন প্রভাব আছে? শুরুতেই দেরি হয়েছে। বাহিনী নিয়ে প্রথমে ১৩ জুন দেওয়া হয়েছিল নির্দেশ। খুব দুর্ভাগ্যজনক নির্দেশ দেওয়ার পরেও কাজ না হওয়া। রাজ্য আইনশৃঙ্খলা সামলাতে পারেনি। পুলিশ নিজেই আক্রান্ত।’’ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী জিষ্ণু সাহা জানান, প্রিসাইডিং অফিসারের রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে কয়েকশো বুথে পুনর্নির্বাচন হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘৬ হাজার বুথে পুননির্বাচন হবে কি না, বিবেচনার জন্য অন্ততঃ দুইদিন সময় দেওয়া হোক।’’

Leave a comment
scroll to top