Close

গোলা-বারুদ-মানুষে হচ্ছে না; সঙ্গের সাথী ‘হুল’

সীমান্তে এবার হুল ফোঁটাবে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স। কিন্তু কেন? আর কিভাবে। জানা গেছে পাচার আটকাতেই এই পরিকল্পনা।

সীমান্তে এবার হুল ফোঁটাবে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স। কিন্তু কেন? আর কিভাবে। জানা গেছে পাচার আটকাতেই এই পরিকল্পনা।

এমনিতে ঝগড়াঝাঁটি হলে হুল ফোঁটাতে আমরা কেউই বোধহয় বিন্দুমাত্র কসুর করি না। তাই বলে প্রতিরক্ষাতেও হুল ফোঁটানোই দস্তুরমত কাজ হবে এমনটা কে কবেই বা ভেবেছিলাম? কিন্তু এমনটা হতে চলেছে, অন্ততঃ পশ্চিমবঙ্গের বাংলাদেশ সীমানা বরাবর বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স তাই বলছে। কিন্তু কেন? আর তার চেয়েও বড় প্রশ্ন কিভাবে?

প্রতিরক্ষায় নানা দেশের সরকার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ নিয়ে কাটাছেঁড়া করছে। কিন্তু আমাদের ভারতবর্ষ বরাবর ‘জুগাড়’-এ বিশ্বাসী। কম কষ্টে এবং একেবারে অর্গানিক পদ্ধতিতে সীমান্তে পাচার আটকাতে বদ্ধপরিকর বিএসএফ। বাংলাদেশ সীমান্ত ঘিরে পশু থেকে মানুষ, অস্ত্র থেকে মাদক পাচার যে একটা বড় সমস্যা তা অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু সব কর্মক্ষেত্রের মতোই এখানেও যেন মনুষ্য নিয়োগে অনীহা আছে। সরকারের পরিকল্পনায় তাই একপাল ক্ষিপ্ত রক্ষীর আনাগোনা যারা ঝাঁকে ঝাঁকে ঘিরে ফেলতে পারবে কালপ্রিটদের। তাই সীমান্ত পাহারায় এ বার সেই ব্যবস্থাই করতে চাইছে বিএসএফ।

জানা গিয়েছে সীমান্তে সেনা জওয়ানদের পাশাপাশি, এ বার ‘প্রশিক্ষিত’ মৌমাছিদের সীমান্ত পাহারায় কাজে লাগানোর কথা ভেবেছে তারা। বিএসএফ সূত্রে খবর, এই ব্যবস্থার মহড়াও চলছে জোর কদমে। মহড়া সফল হলে পুরোপুরি ভাবে তা চালু হয়ে যাবে সীমান্তে। রাজ্যে সম্ভবত এই প্রথম সীমান্তে ‘বি কেজ’ তৈরি করে ‘জৈব প্রতিরক্ষা’ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছে বিএসএফ। বিএসএফের তরফে জানা গিয়েছে, নদিয়ায় ২২২ কিলোমিটার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকা জুড়েই এই ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাইছে তারা। ইতিমধ্যেই নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকের কাঁদিপুর অংশে কাঁটাতারের পাশে মৌমাছিদের চাষ শুরু হয়েছে। সীমান্ত লাগোয়া অংশে বসানো হয়েছে মৌমাছির খাঁচা।

এবার প্রশ্ন হল এই প্রহরী মৌমাছিরা কী ভাবে এই কাজ করবে? জানা গিয়েছে, সীমান্তের কাঁটাতার নড়ে উঠলেই খাঁচা থেকে বেরিয়ে আসবে মৌমাছিরা। আক্রমণ করবে অনুপ্রবেশকারী কিংবা চোরাচালানকারীদের উপর। কাঁটাতার পেরিয়ে লুকানোর চেষ্টা করলেও তাঁদের ধাওয়া করবে তারা। এমন ভাবেই তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।শুধু মৌমাছির বাক্সই নয়, কাঁটাতার বরাবর বিভিন্ন ভেষজ উদ্ভিদ চাষেরও পরিকল্পনা নিচ্ছে বিএসএফ। বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজি একে আর্য বলেছেন, ‘‘জৈব প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং ভেষজ উদ্ভিদের চাষ শুরু হচ্ছে সীমান্তে। সফল হলে বড় এলাকা জুড়ে এই ব্যবস্থা কার্যকর করা যাবে।’’ পরিবেশ সুরক্ষা এবং সীমান্ত প্রতিরক্ষার এমন মজাদার মিশেল কার কোথাও সৃষ্টি হয়েছে কিনা তা ভাববার বিষয়।

লেখক

  • ইন্দ্রাণী চক্রবর্তী

    ইন্দ্রাণী চক্রবর্তী কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর সাংবাদিকতার ছাত্রী ও ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক, যিনি শ্রম, কৃষি ও রাজনীতি নিয়ে রিপোর্টিং করেন।

    View all posts

ইন্দ্রাণী চক্রবর্তী কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর সাংবাদিকতার ছাত্রী ও ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক, যিনি শ্রম, কৃষি ও রাজনীতি নিয়ে রিপোর্টিং করেন।

Leave a comment
scroll to top