বৃহস্পতিবার, ১৬ই মার্চ টানা তৃতীয় দিনের জন্য সংসদ মুলতুবি হয়ে গেল বিরোধী দল আর ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) মধ্যে তুমুল হট্টগোলের জন্য।
ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের সাংসদ রাহুল গান্ধীর কেমব্রিজে দেওয়া বক্তব্য ও আদানি গোষ্ঠীর উপর করা হিন্ডেনবার্গের গবেষণা নিয়ে শ্লোগান, পাল্টা শ্লোগানে সংসদে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল।
অন্যান্য দিনের মতোই সংসদের উভয় কক্ষে বিজেপি সাংসদরা কেমব্রিজে রাহুলের কথিত ভারত বিরোধী বক্তৃতার জন্য তার ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানাতে থাকে, অন্যদিকে কংগ্রস এই দাবি উড়িয়ে দিয়ে আদানি গোষ্ঠীর উপর ওঠা অভিযোগের তদন্তের জন্য যৌথ সংসদীয় কমিটি আহ্বানের দাবী জানাতে থাকে।
কংগ্রেস এবং সাথে বিরোধী দলের অন্যান্য সদস্যরা অভিযোগ করেছে যে যুক্তরাজ্যে গান্ধীর মন্তব্য সম্পর্কিত বিষয়টি সংসদে উত্থাপন করা আসলে বিজেপির একটি ভণিতা। তারা অভিযোগ আনে যে যৌথ সংসদীয় কমিটির তদন্তকে দেরী করানোর জন্যই বিজেপির এই হট্টগোল।
এর আগে, ২৮শে ফেব্রুয়ারি, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের জাজ বিজনেস স্কুলের (জেবিএস) একটি অনুষ্ঠানে, রাহুল বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করেছিলেন। সেই অনুষ্ঠানে তিনি বিজেপিকে অভিযুক্ত করে বলেন যে ভারতের গণতন্ত্রকে আসলে বিজেপি দুর্বল করে দিচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে দমন করে এবং উগ্র ডানপন্থী দলগুলিকে সমর্থন যুগিয়ে।
এরপরে বিজেপি রাহুলকে বিদেশের মাটিতে ভারত বিরোধী বক্তৃতা দেওয়ার জন্য এবং বিদেশী প্রতিনিধিদের সামনে ভারতের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য দোষারোপ করে ও সংসদে রাহুলকে ক্ষমা চাওয়ার দাবী জানাতে থাকে।
কংগ্রেস জানিয়েছে এই দাবি পূরণ করা হবেনা এবং এই বিষয়ে তারা বিরোধীদেরও সমর্থন পেয়েছে। টেকনোক্র্যাট এবং কংগ্রেস রাজনীতিবিদ স্যাম পিত্রোদা অভিযোগ করেছেন যে বিজেপি ইচ্ছাকৃতভাবে রাহুলের মন্তব্যকে বিকৃত করে কংগ্রেস এবং গান্ধী পরিবারের মানহানি করছে।
অন্য দিকে, অন্যান্য বিরোধী দলগুলি বিজেপি এবং আদানি গোষ্ঠীর মধ্যে কথিত যোগসাজশের দিকে ইঙ্গিত করে আদানির ঘটনায় জেপিসি তদন্তে ইচ্ছাকৃতভাবে বাধা দেওয়ার জন্য বিজেপিকে অভিযুক্ত করেছে। একের পর এক টুইট বার্তায়, বিরোধী দলের সংসদীয় প্রতিনিধিরা সংসদে বিরোধী সাংসদদের মতপ্রকাশে বাধা দেওয়ার অভিযোগে লোকসভার স্পিকার এবং রাজ্যসভার সভাপতিকে সমালোচনা করেছে।
এর আগে, বুধবার, ১৫ ই মার্চ, বিরোধী নেতারা আদানি ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের জন্য এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) অফিসে একটি স্মারকলিপি জমা দিতে গেছিল। তাদের সেই দলটিকে বাধা দেওয়ার জন্য তারা কেন্দ্রীয় সরকারের নিন্দা করেছিল৷
বিরোধী নেতারা অভিযোগ করেছিল যে ইডি অফিসে যাওয়ার সময় তাদের বাধা দেওয়ার জন্য পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করে এবং বিজয় চকের রাস্তা অবরুদ্ধ করে রাখে।
গান্ধী, যাকে ঘিরে এই সমস্ত গোলমাল, তিনি বলেছেন যে আত্মপক্ষ সমর্থন এবং কেমব্রিজ জেবিএস-এ তার বক্তৃতার সপক্ষে যুক্তি দিতে তিনি প্রস্তুত যদি তাকে তা করার অনুমতি দেওয়া হয়।