চন্দ্রবিন্দুর গান ছিল ‘প্রধানমন্ত্রী আমায় একটা মেয়ে দেখে দিন’। এ গানের দাবি আজব মনে হলেও প্রধানমন্ত্রীর কাছে চাকরির দাবি করা আজব কি? তাও আবার সেই প্রধানমন্ত্রী যিনি ফি বছর ২ কোটি চাকরি দেওয়ার দাবি করেছিলেন! কিন্তু তাই বলে একেবারে নিজের দলের সক্রিয় কর্মী এমন দাবি করবে তা বোধহয় প্রধান সেবক কল্পনাও করতে পারেননি। গতকাল বারাণসীতে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু বিপত্তি তার পিছু ছাড়েনা একেবারেই! রীতিমতো নিরাপত্তা লঙ্ঘন করে মোদীর কনভয়ের সামনে লাফিয়ে পড়েন এক যুবক। দাবি ‘প্রধানমন্ত্রী আমায় একটা চাকরি খুঁজে দিন’। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছে, এই যুবক নাকি সক্রিয় বিজেপি কর্মী!
উত্তরপ্রদেশ পুলিশ জানিয়েছে, যুবকের নাম কৃষ্ণ কুমার। উত্তরপ্রদেশের গাজ়িপুরের বাসিন্দা তিনি। মোদীর সঙ্গে দেখা করতেই তিনি বারাণসীতে এসেছিলেন। এদিকে উত্তরপ্রদেশের বারাণসী প্রধানমন্ত্রী মোদীর নির্বাচনী কেন্দ্র। সেখান থেকেই লোকসভা ভোটে জিতে সাংসদ তিনি। বারাণসীর রুদ্রাক্ষ সেন্টারের কাছে মোদীর কনভয়ের সামনে আচমকা ঝাঁপ দিয়ে পড়েন ওই যুবক। নরেন্দ্র মোদী তখন লালবাহাদুর শাস্ত্রী বিমানবন্দরের দিকে যাচ্ছিলেন। নিরাপত্তাকে ফাঁকি দিয়ে মোদীর গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে চাকরির দাবি জানান। যদিও নিরাপত্তারক্ষীরা প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই যুবককে ধরে ফেলেন এবং সরিয়ে নিয়ে যান।
উত্তরপ্রদেশ পুলিশের দাবি ওই যুবক মানসিকভাবে সুস্থ নয়। তবুও এহেন মানসিকভাবে অস্থিতিশীল ব্যক্তি দেশের প্রধানমন্ত্রীর কনভয়ের নিরাপত্তা টপকে তাঁর গাড়ির ২০ মিটারের মধ্যে কিভাবে পৌঁছিয়ে গেল সেই নিয়ে বাক্য ব্যায় করেনি পুলিশ। সুতরাং এই ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আরও এক বার প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। বর্তমানে তাঁকে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ আটক করেছে বলে জানা গিয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে গত ২০শে সেপ্টেম্বর আজিম প্রেমজি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সমীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে যে ভারতে করোনা প্যানডেমিক পরবর্তী সময়ে ২৫ বছর অনূর্ধ্ব স্নাতক যুবক যুবতীদের বেকারত্বের হার ৪২% ছুঁয়েছে। সমীক্ষা অনুসারে, প্যানডেমিক পরবর্তী সময়ে বেকারত্বের হাল আগের তুলনায় ভালো হলেও ২৫ বছরের কম বয়সী যুব সমাজের ক্ষেত্রে তা আশঙ্কা জনক।আবার সংগঠিত ক্ষেত্রে তফসিলি জাতির অংশগ্রহণের প্রবণতাও অসংরক্ষিত নাগরিকদের তুলনায় অনেক কম।
অন্য দিকে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে বারাণসীতে একটি আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট স্টেডিয়াম তৈরি করা হবে। শনিবার তারই ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করতে গিয়েছিলেন মোদী। আগামী ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ওই স্টেডিয়াম তৈরির কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। এই নিয়ে তৃতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম পাচ্ছে উত্তরপ্রদেশ। কিন্তু গোটা দেশের নাগরিকদের ভরণপোষণ নিয়ে কী ভাবছেন তিনি? নাকি এটা স্রেফ একজন ‘মাথা খারাপ’ বিজেপি কর্মীর দাবি বলে উড়িয়ে দেবেন তিনি?