পঞ্চায়েত ভোট-এর মনোনয়ন পত্র জমা নেওয়া শুরু হতেই রাজ্যের নানা প্রান্তে অশান্তি শুরু হয়েছে বলে খবর। পঞ্চায়েত ভোট এলেই রাজ্যে খুন-জখমের চিত্র ভেসে ওঠাই এখন স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যে মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামে খুন হয়েছেন এক কংগ্রেস কর্মী। দিনহাটায় গুলিবিদ্ধ তৃণমূল কর্মী। ডোমকলে স্থানীয় তৃণমূল অঞ্চল সভাপতিকে বিডিও অফিস চত্বরে হাতে নাতে রিভলবার-সহ গ্রেফতার পুলিশের। যদিও তাঁকে হেফাজতে নেয়নি পুলিশ। তাহলে এবারও কি পঞ্চায়েত ভোট-এ দেখা যাবে ২০১৮-এর প্রতিচ্ছবি? এই প্রশ্নেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসার পর তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন থেকে তিনি ঘোষণা করে আসছেন ২০২৩ শান্তিপূর্ণ পঞ্চায়েত ভোট হবে। ২০১৮-এর পঞ্চায়েত ভোটের প্রভাব লোকসভা নির্বাচনে পড়েছিল বলেও স্বীকার করে নিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তা সত্ত্বেও এবারও যেভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচনে দোর গোড়ায় অশান্তি শুরু হয়েছে। এই নিয়ে আতঙ্কিত রাজ্যবাসী।
শনিবার নবজোয়ার যাত্রাকালীন অভিষেক ব্যানার্জি বলেছেন, মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে কেউ যেন কোনওরকম প্ররোচনায় পা না দেয়। কেউ এই ধরনের ঝামেলায় যেন না জড়ায়। তাঁর বক্তব্য, “মনোনয়ন নিয়ে অশান্তি করবেন না, করতেও দেবেন না।” রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, তাহলে কি তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতৃত্ব সাধারণ সম্পাদকের কথায় কর্ণপাত করছেন না? বিরোধীরা ইতিমধ্যেই বলতে শুরু করেছে তাহলে সাধারণ মানুষের কোটি কোটি টাকা খরচ করে ভোটের প্রয়োজন কেন?
২০১৮-তে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট-এ অশান্তি প্রত্যক্ষ করেছে সাধারণ মানুষ। পাঁচ বছরের মাথায় ভোট ঘোষণা হতেই সেই ইতিহাস যেন ফিরে দেখার পালা চলছে। তৃণমূল কংগ্রেসের পাশাপাশি প্রশাসনের দিকেও আঙ্গুল তুলছে বিরোধী শিবির।
রাজনৈতিক মহলের মতে, মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করেই যদি এত অশান্তির ঘটনা ঘটে তবে, ভোট কি শান্তিতে মিটবে? এই আতঙ্ক গ্রাস করেছে রাজ্যবাসীকে। অভিজ্ঞ মহলের বক্তব্য, দুবছর ধরে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অশান্তিহীন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আশ্বাস দেওয়ার পরও কিভাবে চতুর্দিকে গন্ডগোল ঘটছে তা ভাবাচ্ছে রাজনৈতিক মহলকে।