Close

তৃণমূল-এর হয়ে প্রার্থীর নথি বিকৃতি! নির্বাচন বাতিল করল হাই কোর্ট

পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসক বিরোধী উভয় প্রার্থীদের নথি বিকৃতি। ফল স্বরূপ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী।

পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসক বিরোধী উভয় প্রার্থীদের নথি বিকৃতি। ফল স্বরূপ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী।

পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসক-বিরোধী উভয় প্রার্থীদের নথি বিকৃতি। ফল স্বরূপ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছেন শাসক দলের প্রার্থী। এই বিষয়কে কেন্দ্র করে ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক (বিডিও)-সহ তিন আধিকারিককে সাসপেন্ড করার সুপারিশ করল কলকাতা হাই কোর্ট দ্বারা নিযুক্ত তথ্যানুসন্ধান কমিটি। আজ বৃহস্পতিবার ওই কমিটির সদস্যেরা হাইকোর্টে তাদের রিপোর্ট জমা দেন। সেখানেই তিন আধিকারিককে সাসপেন্ড করার সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

আদালতের নির্দেশে এর আগে প্রার্থীদের নথি সংক্রান্ত বিষয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী আদালতের পর্যবেক্ষণ, উলুবেড়িয়ার এসডিও শমীককুমার ঘোষ, বিডিও নিলাদ্রীশেখর দে, জাতি শংসাপত্র বিভাগের অতিরিক্ত ইনস্পেক্টর কৃপাসিন্ধু সামইয়ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। যে আসন নিয়ে এই তদন্ত, উলুবেড়িয়ার সেই সংশ্লিষ্ট আসনটি ওবিসি সংরক্ষিত। ওই আসনের সিপিআইএম প্রার্থী কাশ্মিরা ওবিসি সম্প্রদায়ের মানুষ। কিন্তু তদন্তের সময় তৃণমূল প্রার্থী লুৎফানেসা বেগম স্বীকার করে নেন যে তিনি ওবিসি সম্প্রদায়ের নন। অথচ তদন্তে দেখা গিয়েছে অসত্য তথ্য দিয়েই তাঁকে ওবিসি সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ, ওই তৃণমূল প্রার্থীর ওই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কোনো যোগ্যতাই নেই।

এদিকে তথ্য বিকৃত করে সিপিআইএম প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করায় ওই আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন তৃণমূল প্রার্থী। তদন্তের সূত্রে জানা গিয়েছে এই সমস্ত প্রক্রিয়াটিতেই আপাদমস্তক সরকারি আধিকারিকেরা যুক্ত। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আদালত নির্দেশ দিয়েছে, ওই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করতে হবে এবং তাঁদের সাসপেন্ড করার বিষয়ে যত দ্রুত সম্ভব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।

প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নপত্র বিকৃত করার অভিযোগ তুলে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন উলুবেড়িয়ার দুই নির্বাচন প্রার্থী। ওই ব্লকের বিডিও-র বিরুদ্ধে মনোনয়নপত্র বিকৃত করার অভিযোগ তুলেছিলেন তাঁরা। তাঁদের হয়ে মামলাটি লড়ছেন আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়। উলুবেড়িয়া ১নং ব্লকের কাশ্মীরা বিবি, ওমজা বিবির অভিযোগ ছিল, তাঁদের নথি বিকৃত করা হয়েছে। তার ফলেই মনোনয়নের স্ক্রুটিনি থেকে বাদ চলে যায় তাদের নাম। বিডিও-র কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে দাবি করেছিলেন তাঁরা।

ইতিপূর্বে এই মামলাটি বিচারপতি অমৃতা সিংহের বেঞ্চে উঠেছিল। শুনানির পর এই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল আদালতের বেঞ্চ। নথি সত্যিই বিকৃত করা হয়েছিল কি না, কেন্দ্রীয় সংস্থাকে বিচারপতি খতিয়ে দেখতে বলেছিলেন। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য সরকার। সেই মামলায় বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি দেবীপ্রসাদ দে-র নেতৃত্বে একটি এক সদস্যের তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করে। সৈই তদন্ত কমিটিকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলা হয়। কমিটি তদন্ত শেষ করে বৃহস্পতিবার। বৃস্পতিবার তদন্ত কমিটি আদালতে তাদের রিপোর্ট জমা দিয়েছে। উক্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, মামলাকারীদের অভিযোগ সত্যি। সংশ্লিষ্ট বিডিও, এসডিও এবং আরও এক আধিকারিককে সাসপেন্ড করার সুপারিশ করা হয়েছে কমিটির রিপোর্টে।

কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছে, এসডিও এবং বিডিও এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তাঁরা তৃণমূল প্রার্থীকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতাতে সাহায্য করেছেন। এই কমিটির তথ্যানুসন্ধানে খুশি আদালত। এই মামলায় উলুবেড়িয়ার সংশ্লিষ্ট আসনটিতে পুনর্নির্বাচনের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বলা হয়েছে, উলুবেড়িয়ার বহিরা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের আসন শূন্য হিসাবে ঘোষণা করতে হবে। একই সাথে, আদালত জানিয়েছে, রাজ্যকে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে আসনটিতে পুনর্নির্বাচনের দিন ঠিক করতে হবে।

Leave a comment
scroll to top