আফগানিস্তান জুড়ে তীব্র শীতে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। দেশটিতে ভয়াবহ শৈত্য প্রবাহের ফলে গত এক সপ্তাহে অন্তত ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে পশ্চিমা বার্তা সংস্থা রয়টার্স। পাশপাশি বৈরী আবহাওয়ার কারণে মারা গেছে ৭০ হাজার গবাদিপশু।
১০ই জানুয়ারি থেকে কাবুল এবং অন্যান্য কয়েকটি প্রদেশে পারদ নামছে। দেশটির ঘোর প্রদেশে চলতি সপ্তাহে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা মাইনাস ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস (-৩৩) রেকর্ড করা হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে এটিই আফগানিস্তানে রেকর্ড করা সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
আফগানিস্তানের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় মানুষ ও গবাদি পশুর মৃত্যুর এই সংখ্যা নিশ্চিত করেছে।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বুধবার, ১৮ই জানুয়ারি জানিয়েছেন, চলমান ভয়াবহ শৈত্য প্রবাহে আফগানিস্তানে মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
আফগানিস্তানের ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তিক্ত ঠান্ডা আবহাওয়ার দ্বারা প্রভাবিত প্রদেশগুলোর মধ্যে রয়েছে জাবুল, গজনি, হেরাত, পাঞ্জশের, লাঘমান, কুনার, নুরিস্তান, পাকতিয়া, ঘোর, কান্দাহার, বাঘলান, নানগারহার, কাপিসা, পারওয়ান এবং বামিয়ান।
আফগানিস্তানের আবহাওয়া অফিসের প্রধান কর্মকর্তা মো: নাসিম মুরাদি বলেন, আমরা ধারণা করছি আরও এক সপ্তাহ এই ভয়াবহ ঠাণ্ডা অব্যাহত থাকবে।
তালেবান সরকারের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ প্রচণ্ড ঠান্ডায় আফগান নাগরিকদের মৃত্যুর জন্য গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং নিহতদের স্বজন ও পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানিয়েছেন।
যাতে তীব্র শীতে আর কোনো মৃত্যু না হয় সে ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা এবং কর্মকর্তাদেরকে দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুজাহিদ।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, তীব্র শীতে স্থানীয় দরিদ্র মানুষ বেশি কষ্ট পাচ্ছে। রান্নার জন্য বা নিজেদের শরীর গরম রাখার জন্য দেশটিতে প্রয়োজনীয় জ্বালানিকাঠের অভাব তীব্র আকার ধারণ করেছে।
এমন এক সময় আফগানিস্তানে তীব্র শীত দেখা দিলো যখন, দেশটির জনগণ তালিবান শাসনের অধীনে দারিদ্র্য, বেকারত্ব এবং নারী অধিকারের নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।