Close

শহর থেকে যেতে হবে গ্রামে, শিক্ষা দফতরের নির্দেশ নিয়ে কী বলছেন শিক্ষক নেতারা?

পড়াতে হবে শহর থেকে গ্রামে গিয়ে, শিক্ষা দপ্তরের নির্দেশিকা নিয়ে কী বললেন শিক্ষক নেতারা ?

সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু গ্রামের স্কুলগুলোর শিক্ষক সঙ্কট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। শিক্ষক বদলি সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু পর্যবেক্ষণে বলেন, “পড়ুয়া অত্যন্ত কম থাকলে স্কুলের অনুমোদন প্রত্যাহার করে নিন। সেই সমস্ত স্কুলের জন্য অযথা শিক্ষক রেখে লাভ নেই। প্রয়োজনে যেখানে ছাত্রছাত্রী রয়েছে সেখানে শিক্ষকদের পাঠান।” এরপর রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শহরাঞ্চলের উদ্বৃত্ত শিক্ষকদের আশেপাশের পঞ্চায়েত এলাকায় পাঠানোর।

রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর একটি তালিকা প্রকাশ করে যাতে দেখা যায় যে ৮,২০৭ টি স্কুলে ৩০ জনের কম শিক্ষক আছে। এর পর স্কুলগুলোকে বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলে হাইকোর্ট। পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় ছাত্ররা স্কুলের প্রতি অনুৎসাহিত হয়ে পড়ছে, ফলে কমছে ছাত্র সংখ্যা। তাই শিক্ষকদের আবার গ্রামমুখি করার উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য শিক্ষা দফতর। এই নিয়ে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষক নেতারা।

পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি দিব্যেন্দু মুখার্জি বলেন, রাজ্য সরকার চিন্তা ভাবনা করছে, আগে চিন্তা ভাবনা করুক, উদ্বৃত্ত টিচারদের বসে বসে মাইনে দেওয়ারতো যুক্তি নেই। তাকে তো রি-সাফেল করতেই হবে।

বিটিইএ সম্পাদক স্বপন মন্ডল বলেন,হাইকোর্টের কোনো রায় নেই। বিচারপতি একটা মন্তব্য করেছিলেন। সেই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে শিক্ষা দপ্তর এখন প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে উঠেছে। বেকার ছেলেদের চাকরির কথা না ভেবে…উচ্চ প্রাথমিকের প্যানেল-টা নয় বছর ধরে আটকে আছে। বিশ্বজিৎ বসু মন্তব্য করছেন, কিন্তু চাকরি প্রার্থীদের ব্যাপারটা সিরিয়াসলি দেখছেন না। এসএসসি প্যানেল জমা দেওয়ার কথা বলেছিলো গত সপ্তাহে…হেয়ারিংটা ইচ্ছা করে দেরি করে দিলো। তাদের চাকরি নয় বছর ধরে হচ্ছে না,তারা পরীক্ষা দিয়ে বসে আছে, সেই চাকরির ব্যবস্থা না করে, বদলির মাধ্যমে গ্রামের স্কুলকে বাঁচানোর চেষ্টা একটা প্রহসন বলা যায়।… যদি র‍্যাশেনালাইজেশনের মাধ্যমে বদলি করতে হয় তবে শিক্ষকদের সাথে কথা বলে কাউন্সিলিং এর মাধ্যমে বদলি করা উচিৎ।

এবিটিএ সম্পাদক সুকুমার পাইন বলেন ” গ্রামের স্কুলগুলো তো ফাঁকা ছিলোনা, উৎসশ্রী পোর্টাল বা বিভিন্ন স্পেশাল ট্রান্সফারের নামে, এরা আর্থিক দুর্নীতির মধ্যে দিয়ে গ্রামের স্কুল গুলোকে শিক্ষক শূন্য করে দিয়েছে। এখন আবার শাস্তির মত গ্রামে পাঠাতে চাইছে। দেখুক সরকার পারে কিনা।”

তবে সুকুমার পাইন মনে করেন মোদি সরকারের জাতীয় শিক্ষা নীতির সাথেও এর সম্পর্ক আছে। তিনি বলেন “জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী অঞ্চলবস্থা সৃষ্টি করো, ক্লাস হবেনা, শিক্ষক নিয়োগ হবে না, পরিকাঠামোর উন্নয়ন হবে না, অবিভাবকদের মধ্যে অসন্তোষ হবে, তার পর বেসরকারিকরণের দিকে যাবে”

প্রসঙ্গত গতবারের থেকে এই বারে চার লক্ষ মাধ্যমিক পরিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে। নবম শ্রেনীতে রেজিস্ট্রেশন করা ছাত্রদের থেকে ২ লক্ষ কম ছাত্র মাধ্যমিকে বসেছে।

Leave a comment
scroll to top