Close

এসের ২০২২ সমীক্ষায় ধরা পড়লো করোনা কালে স্কুল বন্ধ থাকার কুফলের নমুনা

এসের ২০২২ সমীক্ষায় ধরা পড়লো সরকারি স্কুলের শিক্ষার করুণ দশার। পশ্চিমবঙ্গ স্কুলে ভর্তিতে দেশের মধ্যে এগিয়ে থাকলেও সার্বিক ভাবে রাজ্যের শিক্ষার মান পড়ে যাচ্ছে ও গৃহশিক্ষকদের উপর পড়ুয়াদের নির্ভরতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এসের ২০২২ সমীক্ষায় ধরা পড়লো করোনা কালে স্কুল বন্ধ থাকার কুফলের নমুনা

Photo by kavya kodiya on Pexels.com

বুধবার, ১৮ই জানুয়ারি, ভারতের স্কুল শিক্ষা ব্যবস্থার হালহকিকত নিয়ে প্রথম ফাউন্ডেশন শিক্ষার বার্ষিক অবস্থা রিপোর্ট (এসের ২০২২) প্রকাশ করেছে। এসের রিপোর্টে একদিকে যখন ছাত্রদের করোনা পরিস্থিতির শেষে স্বাভাবিক ভাবে ক্লাসরুমে ফিরে আসার চিত্রটি দেখানো হয়েছে, অন্যদিকে শিক্ষার মান যে পশ্চিমবঙ্গ সহ গোটা দেশেই খারাপ হচ্ছে, সেই কথাও বলা হয়েছে। এই নিয়ে অবশ্য রাজ্যে-রাজ্যে নানা রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। 

এসের রিপোর্টটি ভারতের স্কুল শিক্ষা ব্যবস্থার উপর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সমীক্ষা। এসের ২০২২ দেশের ৬১৬টি জেলার, ১৯,০৬০টি গ্রামে করা হয়েছে। এই সমীক্ষায় মোট ৩৭৪,৫৫৪টি পরিবারের ৬৯৯,৫৯৭ জন শিশুর শিক্ষার মান কে জরিপ করা হয়েছে।  

কলকাতায় এসের রিপোর্টটির উপর ও ভারতের সার্বিক স্কুল শিক্ষা ব্যবস্থার উপর আলোচনায় যোগ দেন বিশিষ্ট নোবেল-জয়ী অর্থনীতিবিদ ডাঃ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দোপাধ্যায়। তিনি তাঁর বক্তৃতায় সরকারি স্কুল শিক্ষা ব্যবস্থা কে শক্তিশালী করার উপর জোর দেন।  

এসের ২০২২ সমীক্ষার ফলাফলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সামনে এসেছে, যাতে একদিকে যেমন শিশুদের স্কুলে ভর্তির, বিশেষ করে সরকারি স্কুলে ভর্তির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া গেছে, তেমনি স্কুল শিক্ষার মানের অবনতিও লক্ষ্য করা গেছে।  

এসের ২০২২ এর সমীক্ষায় স্কুলে ভর্তির পরিসংখ্যান  

এসের ২০২২ সমীক্ষায় পাওয়া গেছে যে ২০২২ সালে সার্বিক ভাবে বিগত দুই বছরের তুলনায় ছয় থেকে ১৪ বছর বয়সীদের স্কুলে ভর্তির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৮ সালে ২.৮% ছয় থেকে ১৪ বছর বয়সী স্কুলে ভর্তি ছিল না, আর সেই সংখ্যা বৃদ্ধি পায় ২০২০ সালের করোনার প্রকোপে স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে। ২০২০ সালে ৪.৬% ছয় থেকে ১৪ বছর বয়সীরা স্কুলে ভর্তি ছিল না, যা ২০১৮ সালের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।  

এসের ২০২২ বলেছে যে ২০২০ সালের এই স্কুলে না ভর্তি হওয়ার সংখ্যায় ছয় থেকে দশ বছর বয়সীরা অনুপাতে বেশি ছিল কারণ স্কুল বন্ধ থাকার কারণে তাঁরা ভর্তি হতে পারেনি। ২০২১ সালেও ৪.৬% ছয় থেকে ১৪ বছর বয়সী স্কুলে ভর্তি হয়নি, যা তখন “নিউ নরম্যাল” (নয়া স্বাভাবিক পরিস্থিতি) বলে অনেকে এড়িয়ে গেছিলেন।  

এর পরে, স্কুলগুলো খোলার ফলে, বিশেষ করে সরকারি স্কুল খোলার পরে, ২০২২ সালে স্কুলে ভর্তির সংখ্যা বৃদ্ধি হয়। ফলে ২০২২ সালে মাত্র ১.৬% ছয় থেকে ১৪ বছর বয়সীরা স্কুলে ভর্তি হয়নি, যা ২০১৮ সালের তুলনায় প্রায় অর্ধেক আর শিক্ষার অধিকার আইন প্রণয়ন হওয়ার পরে সর্বনিম্ন। 

অন্যদিকে এটাও দেখা গেছে যে ১৫-১৬ বছর বয়সীদের মধ্যে স্কুলছুটদের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। ২০১০ সালে যেখানে ১৬.১% ১৫-১৬ বছর বয়সীরা স্কুলছুট হয়েছিল, সেটা ২০১৮ সালে সেটা কমে ১৩.১% হয়। পরে ২০২০ সালে সেই সংখ্যা কমে ৯.৯% হয় আর ২০২২ সালে সেটা কমে ৭.৫% হয়। 

শিক্ষার মানের সমস্যা দেখালো এসের ২০২২ 

শিক্ষার মান নিয়ে এসের ২০২২-এর রিপোর্টে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে সেটা বেশ চিন্তাজনক। যদিও ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে তৃতীয় শ্রেণীর ও পঞ্চম শ্রেণীর পড়ুয়াদের দ্বিতীয় শ্রেণীর পাঠ্যবই অনায়সে পড়ার ক্ষেত্রে সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছিল, কিন্তু করোনা কালে যদিও বেশির ভাগ সরকারি পড়ুয়ারা বই পেয়েছিল, কিন্তু তাদের পড়ার সক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। 

২০১৪ সালে যেখানে ২৩.৬% তৃতীয় শ্রেণীর পড়ুয়ারা অনায়সে দ্বিতীয় শ্রেণীর পাঠ্যবই পড়তে পারতো, সেই সংখ্যাটা ২০১৮ সালে বৃদ্ধি পেয়ে ২৭.২% হয়। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউন হওয়ায় এই সক্ষমতা ব্যাপক হারে হ্রাস পায় আর ২০২২ সালে এই সংখ্যাটা এসে ২০.৫%-এ দাঁড়ায়। 

একই ভাবে ২০১৪ সালে যেখানে পঞ্চম শ্রেণীর ৪৮% পড়ুয়া দ্বিতীয় শ্রেণীর পাঠ্যবই অনায়সে পড়তে পারতো, সেই সংখ্যা ২০১৮ সালে বৃদ্ধি পেয়ে ৫০.৪% হয়, কিন্তু করোনার ফলে স্কুল বন্ধ থাকার ফলে সেই অগ্রগতি হ্রাস পেয়েছে এবং ২০২২ সালে এই হার নেমে এসেছে ৪২.৮%-এ। 

এর সাথেই, যেখানে ২০১৪ সালে যেখানে ২৫.৩% তৃতীয় শ্রেণীর পড়ুয়ারা ন্যূনতম বিয়োগ করতে পারতো, সেই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৮ সালে ২৮.১% হয়, আর ২০২২ সালে সেটা হ্রাস পেয়ে ২৫.৯%-এ নেমে আসে। অন্যদিকে, ২০১৪ সালে পঞ্চম শ্রেণীর ২৬% পড়ুয়া সামান্য ভাগ করতে পারতো, সেই সংখ্যা ২০১৮ সালে বৃদ্ধি পেয়ে ২৭.৮% হয়, কিন্তু ২০২২ সালে সেই হার নেমে এসে ২৫.৬% হয়। 

যদিও গণিতের ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের সক্ষমতার হ্রাস পাওয়া পড়তে পারার সক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার চেয়ে তীব্র নয়, কিন্তু এই পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে যে স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার ফলে এই সমস্যাটা গভীর হয়েছে। 

স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে সরকারি স্কুল এগিয়ে  

এসের ২০২২ সমীক্ষার তথ্য দেখাচ্ছে গোটা ভারতে স্কুলে ভর্তির হার যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, তার সাথে সরকারি স্কুলে ভর্তির হারও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ গোটা দেশের ক্ষেত্রে এগিয়ে। যেখানে সারা ভারতে গড়ে ৭২.৯% ছয় থেকে ১৪ বছর বয়সীরা সরকারি স্কুলে ভর্তি হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে সেই হার ৯২.২%, যা গোটা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। 

সমীক্ষায় দেখা গেছে যে সরকারি স্কুলে ছয় থেকে ১৪ বছর বয়সীদের ভর্তির হার ২০১৮ সালের তুলনায় ২০২২ সালে বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে বেসরকারি স্কুলে ভর্তির হার কিন্তু ২০২২ সালে ২০১৮ সালের তুলনায় হ্রাস পেয়েছে।  

শিক্ষালয় ২০১৮ ভর্তির হার ২০২২ ভর্তির হার 
অঙ্গনওয়াড়ি ২৮.১% ৩৫.৩% 
সরকারি প্রাক-প্রাথমিক ২.৮% ৩.৪% 
বেসরকারি এলকেজি/ইউকেজি ২৭.৫% ২৩.৪% 
সরকারি স্কুল ২৩.৩% ২৪.৬% 
বেসরকারি স্কুল ৯.৮% ৭.৩% 
কোনো স্কুলে ভর্তি হয়নি এমন ৮.১% ৫.৫% 
সূত্র এসের ২০২২

যদিও সরকারি স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, কিন্তু এর মানে কিন্তু এই নয় যে সরকারি স্কুলে পঠনপাঠনের মান উন্নত হয়েছে। বরং আশঙ্কা করা হচ্ছে যে করোনার লকডাউনের ফলে যে ভাবে ব্যাপক মানুষ কাজ হারিয়েছেন ও বড় শহর ছেড়ে গ্রামে ফিরে গেছেন, তার ফলে তাঁরা বেসরকারি স্কুলে নিজেদের সন্তানদের পড়ানোর সামর্থ্য হারিয়েছেন। তা ছাড়াও খাদ্যের অভাবের কারণে, যেহেতু পড়ুয়ারা সরকারি স্কুলে মিড-ডে মিল পায়, তাই সেখানে ভর্তির হারও বৃদ্ধি পেয়েছে।    

অন্যদিকে, সরকারি স্কুলে যে কোনো ভাবেই পড়াশুনার মান বাড়েনি সেটার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে টিউশনির নির্ভরতা বেড়ে যাওয়ায়। গোটা দেশে টিউশনির উপর নির্ভরতা সরকারি ও বেসরকারি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের বেড়ে গেছে। যেখানে টিউশনির উপর সরকারি ও বেসরকারি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের ২০১৮ সালে নির্ভরতার হার ছিল ২৬.৪%, সেটা ২০২২ সালে বেড়ে প্রায় ৩০% হয়েছে বলে জানাচ্ছে এসের ২০২২।

এসের ২০২২ রিপোর্টে পশ্চিমবঙ্গের হালহকিকৎ 

এই টিউশনি বা গৃহশিক্ষকতার উপর নির্ভরতার ক্ষেত্রেও পশ্চিমবঙ্গ কিন্তু ভারতের সব রাজ্যের থেকে এগিয়ে। পশ্চিমবঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি স্কুলের ৭৮.২% পড়ুয়ারা গৃহশিক্ষকতার উপর নির্ভর করেন যা দ্বিতীয় স্থান অধিগ্রহণ করা বিহারের ৭১.১%-এর থেকেও ঢের বেশি। 

সরকারি স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে ও গৃহশিক্ষকতার উপর নির্ভরতা বাড়ার ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের এগিয়ে থাকা নিয়ে অন্যমত দিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষক মহলের একাংশ। উত্তরবঙ্গের শিক্ষকদের মতে সরকারি স্কুলে ভর্তির হার বৃদ্ধি ও পড়ুয়া সংখ্যা বেশি থাকার পিছনে রাজ্যের রাজনীতির বড় হাত আছে। অনেকের মতে স্কুলে যেহেতু পড়ুয়া পিছু মাত্র ২০ টাকা বরাদ্দ করে রাজ্য সরকার শিক্ষকদের তাঁদের সপ্তাহে একদিন মুরগির মাংস, কয়েকদিন ডিম ও ফল খাওয়াতে বলেছে, সেই খরচ চালানো স্কুলগুলোর পক্ষে অসম্ভব।  

তাই সরকারি স্কুল ছেড়ে যে সব পড়ুয়ারা ভিন জেলায় বা রাজ্যে কাজের খোঁজে চলে যাচ্ছে বা যাদের পরিবারের লোকেরা অন্য স্কুলে ভর্তি করাচ্ছে, তাদের নাম স্কুল থেকে না কেটে বরং তাদের বরাদ্দ অর্থ দিয়ে শিক্ষকদের অন্যান্য ছাত্রদের মিড-ডে মিল খাওয়াতে হচ্ছে। ফলে এসের ২০২২ সমীক্ষা চলাকালীন পশ্চিমবঙ্গের সরকারি স্কুলে উপস্থিতির হার ৬৮.২% দেখা গেছে। 

এর সাথেই, যেহেতু পর্যাপ্ত পরিমাণে স্কুল শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি এবং শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে নানা অভিযোগ উঠেছে, ফলে রাজ্যের স্কুলগুলোয় শিক্ষক-পড়ুয়া অনুপাতে ব্যাপক গরমিল হচ্ছে। এসের ২০২২ সমীক্ষায় দেখা গেছে ২০১৪ সালে পশ্চিমবঙ্গে ৪৬.৯% স্কুল সঠিক শিক্ষক-পড়ুয়া অনুপাত বজায় রাখতে পেরেছিল, ২০১৮ সালে অবস্থার উন্নতি হওয়ায় ৬৪.৩% এই অনুপাত বজায় রাখে, কিন্তু ২০২২ সালে এই সংখ্যা কমে ৬১.১% হয়ে যায়। উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক একটি মামলার শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্যের প্রাথমিক স্কুলগুলোর থেকে, বিশেষ করে গ্রামের স্কুলগুলোর থেকে, শিক্ষকদের শহরে, নিজেদের বাসস্থানের কাছে বদলি নেওয়ার হিড়িকের সমালোচনা করে। 

এহেন অবস্থায় রাজ্যের নানা অঞ্চলের শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ যে স্কুলগুলো কে বর্তমানে রাজ্য সরকার নানা জনকল্যাণ প্রকল্প ও সরকারি কাজকর্ম চালাবার জন্যে ব্যবহার করায়, শিক্ষকদের পড়ুয়াদের শিক্ষাদান না করে অন্যান্য কাজে লিপ্ত থাকতে হচ্ছে আর তার ফলে পঠনপাঠন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

পূর্ব ও উত্তর পূর্বের অন্যান্য রাজ্যে স্কুল শিক্ষার অবনতি

এসের ২০২২ এর সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে পূর্ব ও উত্তর-পূর্বের স্কুল শিক্ষার মান হ্রাস পেয়েছে করোনার ফলে স্কুল বন্ধ থাকায়। যদিও আসাম, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, ও অরুণাচল প্রদেশে ২০১৮ সালের তুলনায় ২০২২ সালে শিক্ষক-পড়ুয়া অনুপাতে ব্যাপক পরিবর্তন হয়নি, সেখানেই ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গে এই ক্ষেত্রে অবনতি হয়েছে। ক্লাসরুম-পড়ুয়া অনুপাতে আসাম, মিজোরাম, ও সিকিমে অবনতি হয়েছে ২০১৮ সালের তুলনায়।

মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গে ৬০-এর চেয়ে কম পড়ুয়াদের নিয়ে চালানো স্কুলের সংখ্যা ২০১৮ সালের তুলনায় বেড়ে গেছে। যদিও এর থেকে প্রমাণ হয়না যে কম পড়ুয়া ভর্তি হয়েছে বা ব্যাপক হারে স্কুলছুটের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।

যদিও কেন্দ্রীয় সরকার ২০২০ সালে আনা নয়া শিক্ষা কর্মসূচীতে কারিগরি শিক্ষা ও প্রযুক্তি শিক্ষার উপর জোর দিয়েছে, কিন্তু এসের ২০২২ সমীক্ষায় দেখা গেছে যে ২০১৮ সালের মতনই ২০২২ সালেও সারা দেশে ১৪.৮% স্কুলে কম্পিউটার রয়েছে আর ২০১৮ সালে যেখানে ৬.৫% পড়ুয়া কে কম্পিউটার ব্যবহার করতে দেখা গেছিল, ২০২২ সালে সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়ায় ৭.৯% তে।

সামগ্রিক ভাবে সরকারি স্কুলগুলোয় কম্পিউটার শিক্ষার ব্যাপ্তি না ঘটালে ও সমস্ত শ্রেণীর পড়ুয়াদের জন্যে বিভিন্ন ধরণের সিলেবাস তৈরি না করলে অচিরে আগামী দিনে সরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের চরম সংকটে পড়তে হতে পারে। প্রতিযোগিতার বাজারে তাদের পিছিয়ে পড়ার ঘটনা আরও বৃদ্ধি পাবে।

এসের ২০২২ সমীক্ষায় দেখা গেছে যে সামগ্রিক ভাবে করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় চরম ক্ষতি হয়েছে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের স্কুলের পড়ুয়াদের। পশ্চিমবঙ্গ সহ পূর্ব ও উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোতে এই স্কুল বন্ধ থাকার খেসারত কিন্তু পড়ুয়ারা দিচ্ছে, তাদের শেখার মানের স্খলনের মধ্যে দিয়ে। বর্তমানে এসের ২০২২ রিপোর্টের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলো কী কী উদ্যোগ নেয় অবস্থার আমূল পরিবর্তন করতে সেটাই এখন দেখার।

লেখক

Leave a comment
scroll to top