Close

২৫ জন পদ্মে, ২৩ স্বস্তিতে; ‘ওয়াশিং মেশিন ভাজপা’ বলছেন বিরোধীরা

দুর্নীতির মামলার পরেই বিজেপি যোগ ২৫ জন রাঘব বোয়াল বিরোধী নেতার। বিজেপিকে ওয়াশিং মেশিন বলে কটাক্ষ বিরোধীদের।

দুর্নীতির মামলার পরেই বিজেপি যোগ ২৫ জন রাঘব বোয়াল বিরোধী নেতার। বিজেপিকে ওয়াশিং মেশিন বলে কটাক্ষ বিরোধীদের।

লোকসভা নির্বাচনের আগেই বাড়ছে দুর্নীতি মামলার বহর। তার মধ্যেই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে প্রকাশ মোদী জামানায় ২৫ জন বিরোধী পদ্মগামী হয়েছেন। তার মধ্যে ২৩ জন আপাতত স্বস্তিতে রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে প্রতিবেদন মারফৎ।

কেন্দ্রীয় শাসকদল বিজেপিকে অ-গণতান্ত্রিক, স্বৈরতান্ত্রিক বলে দাগিয়ে দিচ্ছে বিরোধী দলের নেতারা। জুটেছে ‘ওয়াশিং মেশিন’-এর মতো তকমাও। এরই মধ্যে দলমত নির্বিশেষে বিজেপিতে ভীড়ছেন একের পর এক ‘হেভি-ওয়েট’ বিরোধী। চলতি লোকসভা নির্বাচনের আগেই পদ্ম শিবিরে ভিড়েছেন ছয় জন। এঁরাই যখন বিরোধী দলে ছিলেন, তখন ইডি এবং সিবিআই তাঁদের বিরুদ্ধে ভীষণ রকম তৎপর ছিল। তাঁদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্ত চলাকালীনই এই পরিবর্তন ঘটেছে বলে ৩রা এপ্রিল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

এঁদের মধ্যে কংগ্রেস থেকে দলবদল করেছেন ১০ জন, শারদ পাওয়ারের এনসিপি এবং শিবসেনা থেকে যথাক্রমে চারজন করে, তৃণমূল কংগ্রেসের ৩ জন, তেলুগু দেশম পার্টির ২ জন এবং সমাজবাদী পার্টি এবং ওয়াইএসআরসিপি থেকে একজন করে বিজেপির সাথে পথ চলছেন বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এ প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, গেরুয়া শিবিরে বা বিজেপির জোট শরিক হওয়ার পর রাতারাতি ধামাচাপা পড়ে গিয়েছে ২৩ জনের মামলা। এর মধ্যে তিনটি মামলা বন্ধ হয়ে গিয়েছে এবং বাকী ২০ টি মামলা আপাতত হিমায়িত।

এই ২৩ জনের মধ্যে রয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। ২০১৯ সালে নারদ কেলেঙ্কারি মামলায় সিবিআই শুভেন্দুর বিরুদ্ধে তদন্ত করতে লোকসভার স্পিকারের অনুমোদনের জন্য কার্যত হাপিত্যেশ করে বসেছিল। ২০২০ সালে বিজেপিতে যোগদান করেন শুভেন্দু এবং তারপর বিধানসভা ভোটে বিজেপির পক্ষ থেকে জয়লাভ করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা হন। ঠান্ডা হয়ে যায় মামলা।

ওই একই ঘটনা ঘটে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা এবং প্রাক্তন মারাঠা মুখ্যমন্ত্রী অশোক চব্যনের ক্ষেত্রেও। তাঁদের মামলাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে খবর। ২০১৪ সালে সারদা কেলেঙ্কারির সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় হেমন্তকে। ২০১৫ সালে বিজেপিতে যোগদান করেন তিনি। তার আগে পর্যন্তই এই কেস চলেছিল বলে খবর।

২৫ জনের এই তালিকার ১২ জন তাবড় তাবড় নেতাই হলেন মারাঠা। এনারা ২০২২ বা তার পরে বিজেপিতে ভিড়েছেন বলে জানা গিয়েছে। এনসিপি, শিবসেনা ও কংগ্রেস ছেড়ে এই নেতারা আপাতত মোদীর নেতৃত্বে বিকশিত ভারত গড়ার লক্ষ্যে নিয়েছেন। তারপর থেকেই অতীতের কলঙ্ক ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে বলে দাবি বিরোধীদের। শুধু তাই নয়, বিজেপিতে যোগদান করার পর প্রাক্তন কংগ্রেস এমপি জ্যোতি মির্ধা এবং প্রাক্তন তেলুগু দেশম পার্টির এমপি ওয়াইএস চোধুরির বিরুদ্ধে কোনও সাক্ষ্যপ্রমাণ জোগাড় করতেই ব্যর্থ হয় ইডি। যদিও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিবিআই অফিসারের বক্তব্য, ‘আমরা প্রমাণের ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিই। প্রমাণ না পেলেও ফাইল খোলা থাকে।”

ইন্দ্রাণী চক্রবর্তী কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর সাংবাদিকতার ছাত্রী ও ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক, যিনি শ্রম, কৃষি ও রাজনীতি নিয়ে রিপোর্টিং করেন।

Leave a comment
scroll to top