নেপালে ভয়াবহ ভূমিকম্পে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। মাঝরাতের উচ্চমাত্রার ভূমিকম্পের পর লাগাতার ১৫৯টি আফ্টারশকে কাঁপলো নেপাল। এখনও পর্যন্ত ১৪০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আহত অসংখ্য। আহতদের মধ্যে অনেকেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক। বিপর্যস্ত মানুষের ভীড়ে উপচে পড়ছে স্থানীয় হাসপাতালগুলি। নেপালের পুলিশ এবং সেনাবাহিনী যৌথভাবে উদ্ধার অভিযানে নেমেছে। ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এখনও চলছে উদ্ধারকাজ। ভূমিকম্পের জেরে প্রচুর বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নীচে অনেকেরই আটকে থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দাহল(প্রচণ্ড) মেডিকেল টীম সহ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শন করেছেন। বলা হচ্ছে, নেপালে ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে জাজারকোট ও রুকুম জেলায়। ভারতের জাতীয় ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের মতে ৬.৪ মাত্রার ভূমিকম্পের পরে লাগাতার ১৫৯টি আফটারশক হয়েছে। প্রত্যেকটি আফটারশকেই তীব্র কম্পণ অনুভব করা গিয়েছিল। ৪.৫ মাত্রার বেশ কয়েকটি অফটারশকে কেঁপেছে নেপালের একাধিক রাজ্য। সেই সময়ছ বিষয়টি এমন জায়গায় যায় যে ভয়ে রাতে অনেকেই বাড়ি ফেরেননি।
ভারত সীমান্ত থেকে ভূমিকম্পের উৎসস্থলটি ছিল কাছেই। এই আবহে দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড সহ ভারতের বহু জায়গা সেই কম্পন অনুভূত হয়েছিল। উত্তরাখণ্ডের পিথোরাগঢ়ের পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বে ২০৮ কিমি, জোশীমঠের দক্ষিণ-পূর্বে ৩১৭ কিমি, উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের উত্তর ও উত্তর-পূর্বে ২৫৩ কিমি এবং উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যার উত্তরে ২২৭ কিমি দূরে অবস্থিত ছিল এই কম্পনের উৎসস্থল। ভারতের জাতীয় ভূতাত্ত্বিক কেন্দ্রের তরফ থেকে জানানো হয়, শুক্রবার রাত ১১টা ৩২ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডে নেপালে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। কম্পনের উৎসস্থল নেপালের রাজধানী কাঠমাণ্ডু থেকে পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে ৩৩১ কিমি দূরে অবস্থিত ছিল।
ভারতের জাতীয় ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের মতে।ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়। গত কয়েকমাস আগের মতোই এই ভূকম্পনও ভূপৃষ্ঠের নীচের অগভীর অঞ্চলে তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল যত অগভীর হবে ততই তা শক্তিশালী হবে। ২০১৫ সালের ভূমিকম্পের পর গত আট বছরে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প হিসেবে গতকালের বিপর্যয়কে চিহ্নিত করা হয়েছে। নেপালের ভূমিকম্পে প্রাণহানি এবং ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে দুঃখপ্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।