Close

সৌর প্রযুক্তি রফতানিতে নিষেধ– উভয় সঙ্কটে চীন

বিশ্ব উষ্ণায়নের সংকটের সময় বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে দেশ গুলির প্রযুক্তি আদানপ্রদান পৃথিবী এবং মানব সমাজের জন্য মঙ্গলজনক হতে পারতো। কিন্তু চীন-মার্কিন বানিজ্য যুদ্ধ থেকে বিশ্ব উষ্ণায়ন, আবহাওয়া পরিবর্তনের মত গুরুতর সমস্যাও বাদ গেল না।

সৌর প্রযুক্তি রফতানিতে নিষেধঃ উভয় সঙ্কটে চীন

Photo by Pixabay on Pexels.com

চীন সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রক গত ৩০শে ডিসেম্বর ২০২২ সৌর প্রযুক্তি সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব নিয়ে আসে। এই প্রস্তাবে অত্যাধুনিক সৌর প্রযুক্তির রফতানির উপর বিধিনিষেধ আনার কথা বলা হয়। এই প্রস্তাব সম্পর্কে জনগণের মতামত জানতে চায় চীনের সরকার। মতামত জানানোর শেষ তারিখ ধার্য হয় ২৮শে জানুয়ারী।

প্রসঙ্গত, বিশ্বে সবচেয়ে বেশী সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনকারী এবং সৌর বিদ্যুৎ সংক্রান্ত সরঞ্জামগুলির বৃহত্তম নির্মাতা দেশ চীন। কয়লা, পেট্রলের মত ফসিল জ্বালানির উপর থেকে নির্ভরতা কমিয়ে ব্যাপক ভাবে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকেছে দেশটি।

চীনের এই সৌর প্রযুক্তিগুলি বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়ায়, যার ফলে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ ব্যাপকভাবে কমে যায়। জলবায়ু পরিবর্তন এবং বিশ্ব উষ্ণায়নের সঙ্কটকালে ফসিল জ্বালানির বিকল্প হিসেবে উচ্চমানের চীনা সৌর প্রযুক্তি মানুষের জীবনযাত্রার উন্নত মান বজায় রাখতে সহায়ক।

৩০শে ডিসেম্বর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রক দ্বারা প্রকাশিত রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের উপর একটি সার্কুলারে প্রযুক্তিগুলি “সীমাবদ্ধ” বিভাগে আইটেমগুলির তালিকায় যুক্ত করার প্রস্তাব রাখা হয়েছিল।

সরকারের এই প্রস্তাবের  সমালোচনা করে হংকং-স্থিত সংবাদ সংস্থা সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে শুক্রবার, ২৭শে জানুয়ারী।

ডাইওয়া ক্যাপিটাল মার্কেটের ইউটিলিটি রিসার্চের রিজিওনাল প্রধানের মন্তব্য উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থাটি বলেছে “প্রস্তাবিত নিষেধাজ্ঞা চীনা সৌর সরঞ্জাম প্রস্তুতকারকদের বিদেশী সম্প্রসারণ পরিকল্পনাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে, যেমন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় যেখানে তারা দক্ষ সমন্বিত ওয়েফার-টু-সোলার প্যানেল উৎপাদন লাইন তৈরি করতে চায়।”

২০২২ সালে অক্টোবর মাসে মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন চিপ তৈরিতে চীনা অগ্রগতি রুখতে, চীনা উৎপাদকদের সেমিকন্ডাক্টর যন্ত্রপাতি রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করেন। এর ফলেই চীন উচ্চমানের সৌর প্রযুক্তি রফতানিতে বিধিনিষেধ আনছে।

পৃথিবীতে উৎপাদিত সৌর ওয়েফারের ৯৭% চীনে তৈরি হয়। চীন ব্যাপকভাবে পরিবেশ বান্ধব বিকল্প শক্তির দিকে ঝুঁকলেও অন্যান্য দেশ গুলি ফসিল জ্বালানির বিকল্প ব্যবহার অনেক পরে শুরু করেছে। বর্তমানে আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ভারত নিজেদের প্রযুক্তি গড়ে তোলার চেষ্টা করছে।

চীন তার উন্নতমানের সৌর প্রযুক্তির রফতানিতে রাশ টানতে বাধ্য হলে অন্য দেশের এখনো পর্যন্ত দূর্বল প্রযুক্তি বাজার বহির্ভূত সুবিধা পাবে।বিশ্ব উষ্ণায়নের সংকটের সময় বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে দেশ গুলির প্রযুক্তি আদানপ্রদান পৃথিবী এবং মানব সমাজের জন্য মঙ্গলজনক হতে পারতো। কিন্তু চীন-মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধ থেকে বিশ্ব উষ্ণায়ন, আবহাওয়া পরিবর্তনের মত গুরুতর সমস্যাও বাদ গেল না।

Leave a comment
scroll to top