ইউক্রেনের মাটিতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটোর ছায়া যুদ্ধের মাঝেই ভারতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে G20 দেশ গুলোর বিদেশ মন্ত্রীদের বৈঠক। G20 বৈঠককে পশ্চিমারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে আয়োজক ভারতকে চাপ দিচ্ছিলোই। কিন্তু বৈঠকের শুরুর দিনেই রুশ মার্কিন শিবির ভাগাভাগিতে না জড়িয়ে নিজেদের স্বার্থ নিয়ে সোচ্চার হল ভারত।
ভারত ১লা ডিসেম্বর ২০২২ থেকে, ৩০ নভেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত G20-এর সভাপতিত্বের দায়িত্ব পেয়েছে৷ ভারতের G20 প্রেসিডেন্সির থিম হল – “বসুধৈব কুটুম্বকম” বা “এক পৃথিবী। এক পরিবার। এক ভবিষ্যত”
বৃহস্পতিবার, ২রা ফেব্রুয়ারি, দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে অনুষ্ঠিত G20 দেশ গুলোর বিদেশ মন্ত্রীদের বৈঠক শুরু হয় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভিডিও বার্তার মধ্যে দিয়ে। ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী মোদি স্পষ্ট ভাবে উত্তর গোলার্ধের ধনী দেশ গুলোর সমালোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন “আমাদের মানতে হবে যে বহুপাক্ষিকতাবাদ সংকটে আছে।… বিগত কিছু বছরের অভিজ্ঞতা অর্থনৈতিক সংকট,আবহাওয়া পরিবর্তন, মহামারী, সন্ত্রাসবাদ এবং যুদ্ধ এটা স্পষ্ট ভাবে দেখাচ্ছে যে বিশ্ব প্রশাসন ব্যার্থ হয়েছে।” প্রধানমন্ত্রী বলেন “এই ব্যার্থতার ফল সব চেয়ে বেশী ভুগতে হয়েছে উন্নয়নশীল দেশ গুলোকেই… যা ধনী দেশ গুলোর সৃষ্টি। সেই কারণে ভারতের জি২০ সভাপতিত্ব দক্ষিণ গোলার্ধের আওয়াজ হয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। কোনো গোষ্ঠী বিশ্বের নেতা হিসেবে নিজেকে দাবি করতে পারে না, সেই সমস্ত অংশের কথা না শুনে, যারা তাদের সিদ্ধান্তের দ্বারা সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত।”
প্রধানমন্ত্রী রেশ ধরেই ভারতের বিদেশ মন্ত্রী সুভ্রমনিয়ম জয়শঙ্কর জি২০ আলোচনার প্রারম্ভে জাতিসংঘের কাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। জয়শঙ্কর বলেন “বর্তমান বৈশ্বিক স্থাপত্য তার আট দশকে রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে জাতিসংঘের সদস্য সংখ্যা চারগুণ বেড়েছে। এটি আজকের রাজনীতি, অর্থনীতি, জনসংখ্যা বা আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করে না।” তিনি আরো বলেন “বিশ্বের সিদ্ধান্তগ্রহণ পদ্ধতির গণতান্ত্রিকরণ হতে হবে,যদি এর কোনো ভবিষ্যৎ থাকতে হয়।”
আন্তর্জাতিক স্তরে উন্নয়নশীল দেশ গুলোর হয়ে ভারত যখন পশ্চিমাদের বিধছে, তার মাঝেই “গুজরাট ফাইলস” এর লেখিকা রানা আয়ুব ট্যুইট করে ভারতের অভ্যন্তরে মুসলিম বিদ্বেষের কথা মনে পারিয়ে দিয়েছেন।