রাশিয়াকে পরাজিত করতে ন্যাটো সামরিক জোট ও পশ্চিমা মিত্রদের কাছে আরও যুদ্ধ সহায়তার জন্য অনুরোধ জানিয়ে আসছে ইউক্রেন। নতুন অস্ত্র ছাড়া রাশিয়ার বিরুদ্ধে জয় পাওয়া সম্ভব না বলে মনে করে কিয়েভ। এই বিষয়ে ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভোলোদিমির জেলেনস্কি প্রশাসনকে এতদিন সহায়তা করলেও এবার এই নিয়ে বিভক্তি দেখা দিয়েছে পশ্চিমা জোটে।
সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানায়, শুক্রবার, ২০শে জানুয়ারি, ইউক্রেনকে লেপার্ড-২ ট্যাংক সরবরাহে সিদ্ধান্ত নিতে জার্মানিতে বৈঠকে বসেছিলেন জোটটির কর্মকর্তাসহ ৫০টি দেশের প্রতিনিধিরা। সম্মেলনজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রে ছিল জার্মানির যুদ্ধ ট্যাংক ইউক্রেনকে পাঠানোর বিষয়টি।
তবে, জার্মান নেতারা লেপার্ড-২ ট্যাংক পাঠাবেন কিনা অথবা অন্য দেশগুলোকে তাদের অস্ত্রভাণ্ডারে থাকা জার্মানি নির্মিত ঐ ট্যাংক পাঠানোর অনুমতি দেবেন কিনা, সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি।
যদিও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ট্যাংক পাঠানোর বিষয়ে জার্মানি আগ বাড়িয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে চাচ্ছে না। দেশটির জনগণের একটা বড় অংশ রাশিয়ার সাথে নতুন করে কোনো দ্বন্দ্ব চায় না, ফলে অভ্যন্তরীণ চাপে রয়েছে জার্মান সরকার। যুক্তরাষ্ট্র আগে ট্যাংক না পাঠালে জার্মানিও ট্যাংক পাঠাবে না, এ অবস্থানে অনড় জার্মানি। ফলে জোটের একাধিক দেশ নতুন করে নিজেদের লাভ-ক্ষতির হিসেব কষছে।
জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াসের ভাষ্যানুযায়ী, আমরা সত্যিই দ্বিধা করছি না, আমরা শুধুমাত্র খুব সতর্কতার সাথে সমস্ত ভালো-মন্দ দিকের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখছি। আমরা কেবল কাউকে কিছু দেওয়ার বিষয়ে কথা বলছি না।
পিস্টোরিয়াস আরও বলেন, মিত্ররা যদি একমত হতে পারে, তাহলে তখনই কেবল দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য তারা প্রস্তুত থাকবেন।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের নেতারাও এক্ষেত্রে একই অবস্থান নিয়েছেন। জোটের শক্তির ওপর জোর দেওয়ার মধ্য দিয়ে, তারাও নিজেদের ট্যাংক প্রদান করা থেকেও বিরত রয়েছেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লয়েড অস্টিনের ভাষ্যমতে, তিনি এই বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী যে, এই জোট ঐক্যবদ্ধ থাকবে, গতিবেগ তৈরি অব্যাহত রাখবে, এবং দীর্ঘ সময় ধরে রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে সমর্থন দিয়ে যাবে।
মার্কিন জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল মার্ক মিলির ভাষ্যানুযায়ী, চলতি বছরের শেষ নাগাদ দখলকৃত অঞ্চল থেকে সমস্ত রুশ বাহিনীকে হটিয়ে দেওয়া ইউক্রেনীয়দের জন্য কঠিন হবে।
অন্যদিকে রাশিয়া বলেছে, ট্যাংক পাঠালেও কোনো লাভ হবে না। সব জ্বালিয়ে দেওয়া হবে। পশ্চিমাদের অস্ত্র ইউক্রেনকে আরও দীর্ঘ যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে মনে করে মস্কো।