Close

যমুনার জলস্তর ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ। ভাসছে রাজধানী!

অতি বৃষ্টিতে যমুনার জলস্তর গত ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ। ভাসছে দিল্লি। বিপর্যস্ত শহরের যাবতীয় পরিসেবা। অপ্রয়োজনে বাড়ি থেকে না বেরোনোর নির্দেশ।

অতি বৃষ্টিতে যমুনার জলস্তর গত ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ। ভাসছে দিল্লি। বিপর্যস্ত শহরের যাবতীয় পরিসেবা। অপ্রয়োজনে বাড়ি থেকে না বেরোনোর নির্দেশ।

মাত্র কয়েক দিনের বৃষ্টি, আর তাতেই যমুনা নদীর জলোচ্ছ্বাসে ভাসছে দিল্লি। ভারী বর্ষায় এই বৃহস্পতিবার দেশের রাজধানীর অবস্থা আরও বেহাল। ১৯৭৮ সালের বন্যার রেকর্ডও ভেঙে দিল যমুনার বর্তমান জলস্তর। যমুনার জলে লালকেল্লার আশপাশের অঞ্চল ভাসছে। শুধু লালকেল্লা চত্বরই নয়। দিল্লির অন্য এলাকাগুলিরও একই হাল।

১৯৭৮ সালের বর্ষায় দিল্লিতে যমুনার জলস্তর ২০৭.৪৯ মিটার ছিল। বুধবার সেই রেকর্ড ভেঙে গিয়েছে। বুধবার দুপুর ১টায় দিল্লি রেলসেতুর কাছে যমুনার জলস্তর উঠেছিল ২০৭.৫৫ মিটার। যা গত ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ। বৃহস্পতিবার সেই জলস্তর আরও বাড়ল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় যমুনার জলস্তর ছুঁয়েছে ২০৮.৬৬ মিটার। হরিয়ানার হাথনিকুণ্ড বাঁধ থেকে ক্রমাগত জল ছাড়া হচ্ছে নদীতে। যার জেরেই যমুনার জলস্তর ক্রমশ বাড়ছে বলে জানা গিয়েছে।

দিল্লির বহু রাস্তা প্লাবিত হওয়ায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ব্যাপক যানজটের ছবি ধরা পড়েছে রাজধানীর বুকে। শহরের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা প্লাবিত হওয়ার কারণে যানবাহন ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে দিল্লিবাসীকে। কোথাও কোমর পর্যন্ত, কোথাও বুক পর্যন্ত জল জমে গিয়েছে। রাস্তাঘাটে চলাফেরা করা যাচ্ছে না। জমা জলের পরিমাণ ক্রমে বেড়েই চলেছে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে রয়েছে জি২০ সম্মেলন। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। হরিয়ানার হাথনিকুণ্ড বাঁধ থেকে তুলনামূলকভাবে কম হারে জল ছাড়ার আর্জি জানিয়েছেন তিনি।

যমুনার জল বাড়তে থাকায় ওয়াজ়িরাবাদ, চন্দ্রওয়াল এবং ওখলা জল শোধনাগারগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে রাজধানী বর্তমানে পানীয় জলের সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়ে। এমনকি, মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের বাসভবনের এলাকাতেও জল ঢুকে পড়েছে। শহরের নানা প্রান্তে দুর্যোগ কবলিতদের উদ্ধারকাজ শুরু করেছে প্রশাসন। চলমান এই পরিস্থিতিতে রবিবার পর্যন্ত সমস্ত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিল্লি সরকার। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে প্রশাসন। বেসরকারি সংস্থাগুলিতে বাড়ি থেকে কাজের (ওয়ার্ক ফ্রম হোম) পরামর্শ দিয়েছেন নয়াদিল্লির মুখ্যমন্ত্রী।

সূত্রের খবর, দিল্লির মেট্রো পরিসেবাতেও প্রভাব পড়েছে এই বন্যার। দিল্লি মেট্রো কর্পোরেশন (ডিএমআরসি) জানিয়েছে, যমুনার জল বাড়তে থাকায় যমুনা ব্যাঙ্ক মেট্রো স্টেশন বরাবর রাস্তা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ফলে স্টেশনে ঢোকার মতো পরিস্থিতি নেই। তাই ওই স্টেশনে ঢোকা এবং বেরোনোর পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যমুনার উপরে চারটি মেট্রোরেল সেতু রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ওই সেতুর উপরে ট্রেনের গতি কমানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই সেতুর উপরে ঘণ্টায় ৩০ কিমি বেগে ট্রেন চালানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ডিএমারসির তরফ থেকে। তবে মেট্রোর অন্য রুটে পরিষেবা স্বাভাবিক বলে জানিয়েছে ডিএমআরসি।

Leave a comment
scroll to top