বাসমতী রপ্তানিতে শীর্ষে ভারত। আর ভারত থেকে বাসমতী আমদানিতে শীর্ষে ইরান। কিন্তু এই বাজার কি থাকবে? সূত্রের খবর, আমেরিকার কারণেই ইরানের সুবিশাল বাজারটি হারাতে বসেছে দিল্লি। ভারত-আমেরিকা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি ঘটছে। অন্যান্য দেশে তথা গোটা বিশ্বে এর মাধ্যমে ভারতের ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠিত হবে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সদ্যসমাপ্ত মার্কিন সফরের পরে এটাই ছিল সাউথ ব্লকের কূটনৈতিক ঘোষণা। এদিকে ইরানে বিপুল ব্যবসা করে ভারতের বাসমতি চাল এবং চা। কিন্তু ইরানের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ঠিক নেই আমেরিকার। তাই সম্ভবত ভারত নিজের কুটনৈতিক সম্পর্কের জেরে এই বাজার হারাচ্ছে।
ইরানের সঙ্গে ভারতীয় টাকার বিনিময়ে অপরিশোধিত খনিজ তেল কেনার চুক্তি হয়েছিল। সেই তেল বিক্রির পরিবর্তে ইরান কৃষিপণ্য-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পণ্য আমদানি করত ভারত থেকে। কিন্তু ২০১৯ সালের মে মাসে ইরানের উপরে আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার জেরে তেহরানের তেল কেনা বন্ধ করে দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। তেহরান তার মজুত টাকা ব্যবহার করে ভারতের কাছ থেকে পণ্য কিনতে থাকে। সেটা চলে মূলত তাদের দেশ থেকে অশোধিত তেল বিক্রি ছাড়াই।
স্বাভাবিক ভাবেই ইরানে ভারতীয় টাকার মজুত এখন তলানিতে এসে ঠেকেছে। এর জেরেই তেহরান ভারতকে জানিয়ে দিয়েছে, বাধ্য হয়েই পাকিস্তান, তুরস্ক বা থাইল্যান্ডের মতো দেশ থেকে বাসমতী চাল কিনতে বাধ্য হবে তারা। কারণ চালের দাম মেটানোর মতো ভারতীয় টাকা তাদের হাতে নেই। আর নিষেধাজ্ঞার কারণে ডলারের মাধ্যমে যে তারা দাম মেটাবে, সেই রাস্তাও বন্ধ।
প্রসঙ্গত, বিশ্বের বাজারে সব থেকে বেশি বাসমতী চাল রপ্তানি করে ভারত। এই চাল আমদানির তালিকায় যে সমস্ত দেশ রয়েছে, তার মধ্যে সকলের উপরে ছিল ইরান। কিন্তু সরকারি নথির পরিসংখ্যান থেকে জানা গিয়েছে, ২০২১ সাল থেকেই ইরানে ভারতের বাসমতি চালের রপ্তানি ২০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৪০ লক্ষ টনে। ২০২২ সালের পরে তা আরও কমে গিয়েছে। আর এই বাজার হারানোর জন্য সংশ্লিষ্ট মহল দায়ী করছে আমেরিকাকেই।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মার্কিন সফরের সাফল্য হিসেবে যখন ভারত-আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক এবং বাণিজ্য সম্পর্ক আরও পোক্ত হওয়ার সুফল তুলে ধরছে সরকারি মহল, তখন সেই দেশের কারণেই বাসমতী চাল রপ্তানিকারীদের লোকসানের মুখে ফেলে ইরানের মতো বিশাল বাজার ছোট হচ্ছে আরও দ্রুত। এটাও ঘটছে এমন এক সময়, যখন বিশ্ব বাজারে সঙ্কটের কারণে রপ্তানি বিপাকে। বেশ কয়েক মাস ধরেই ভারতের বিভিন্ন পণ্যের বিক্রি কমছে আন্তর্জাতিক বাজারে, এমনটাই জানা যাচ্ছে সূত্র মারফৎ।