বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮.১০ কোটি মার্কিন ডলার রিজার্ভ চুরি সংক্রান্ত মামলায় বাংলাদেশের পক্ষে রায় দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গত ১৩ই জানুয়ারি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের সুপ্রিম কোর্ট এ রায় দিয়েছে।
এদিকে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে ফিলিপাইনের অভিযুক্ত ব্যাংক রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশন (আরসিবিসি)।
২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে, হ্যাকাররা নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮.১০ কোটি ডলার চুরি করে বলে অভিযোগ ওঠে।
টাকা হাতিয়ে নিতে হ্যাকাররা আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার সুইফটে অর্থ স্থানান্তরের ৩৫টি ভুয়া বার্তা পাঠান। এর মধ্যে মাত্র দুই কোটি ডলার উদ্ধার করা হয় শ্রীলঙ্কা থেকে। বাকি ৬.১০ কোটি ডলার ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংক হয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে চলে যায়, যা এখনো ফেরত পায়নি বাংলাদেশ।
রিজার্ভের অর্থ চুরির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক আরসিবিসি ব্যাংক ও কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে দায়ি করে থাকে। তবে ম্যানিলা-ভিত্তিক রিজাল ব্যাংক শুরু থেকেই অভিযোগটি প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
অর্থ ফিরে পেতে বাংলাদেশ নিউইয়র্কের সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে। মামলাটি বাতিল করে দিতে দুটি আবেদন জানায় রিজাল ব্যাংক। কিন্তু নিউইয়র্কের সুপ্রিম কোর্ট রায় দেন, এ মামলার কার্যক্রম চলবে।
এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক এবং রিজাল ব্যাংককে মধ্যস্থতা করতেও নির্দেশ দেন আদালত। এ রায়ের জবাবে রিজাল ব্যাংক জানায়, তারা আইনি লড়াই চালিয়ে যাবে।
অপরদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক নিউইয়র্কের সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়েছে। একটি বিবৃতি দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, এ রায়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় আইনি লড়াই চালিয়ে যেতে পারবে।
ওই অর্থ উদ্ধারে ২০১৯ সালের ২রা জানুয়ারি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে আরসিবিসিসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সে বছরের ৬ই মার্চ ফিলিপাইনের সিভিল কোর্টে পাল্টা মানহানির মামলা করে আরসিবিসি।
নিউইয়র্কের সুপ্রিম কোর্টের এ রায়কে স্বাগত জানিয়ে দেওয়া এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বলে, এ রায়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় আইনি লড়াই চালিয়ে যেতে পারবে। তবে আন্তর্জাতিক ব্যাংক বিশেষজ্ঞদের মতে আরসিবিসিকে এখন বাংলাদেশের সঙ্গে মধ্যস্থতা করতে হবে, না হলে দীর্ঘ আইনি লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।