ভয় দেখিয়ে, জোর করে ধর্ষণের অভিযোগ করিয়েছে বিজেপি। তাই মামলা তুলে নিতে উদ্যোগী অভিযোগকারিণী। কিন্তু এতেই বিপত্তি। অভিযোগ তুলে নেওয়ার তোরজোড় করতেই নাকি জুটেছে বিজেপির হুমকি। অন্ততঃ এমধটাই অভিযোগ সন্দেশখালির এক অভিযোগকারিণীর। অভিযোগকারিণীর পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে যে রবিবার রাতে অভিযোগ তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত চাউর হতেই বাড়ি বয়ে এসে হুমকি দিয়েছেন রেখা পাত্র সহ বিজেপির কর্মীরা।
ঘটনায় পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন অভিযোগকারিণী। এইদিন অভিযোগকারিণীর ভাই জানিয়েছেন, “দিদি নিরাপত্তা চাইতে সন্দেশখালি থানায় গিয়েছে। কারণ, কাল রাতে রেখা পাত্ররা এসে হুমকি দিয়ে গিয়েছে।” তাঁর বক্তব্য তাঁর দিদি অর্থাৎ অভিযোগকারিণীকে ভয় দেখিয়ে এবং কিছুটা জোর করেই অভিযোগ করতে বাধ্য করেছে ‘ওরা'(বিজেপি)। ঘটনার ঘনঘটা এখানে আরও জটিল। জানা গিয়েছে, সন্দেশখালিতে শিবপ্রসাদ হাজরার পোলট্রি ফার্ম জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল তাঁকে-সহ আরও তিন জনকে। সেই সময়ে সন্দেশখালি আন্দোলনের সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন বলে জানিয়েছেন।
ভাইয়ের জামিনের জন্য স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের কাছে দরবার করেন দিদি। অভিযোগ জামিন করিয়ে দেওয়ার বদলেই এই মামলা করানো হয় তাঁকে দিয়ে। অভিযোগকারিনীর ভাই জানিয়েছেন, সেই সময়েই স্থানীয় বিজেপি নেত্রী মাম্পি দাস তাঁর দিদিকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান। এরপর তাঁকে পরামর্শ দিয়ে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব বলে, “আমরা এঁদের বিরুদ্ধে কেস করেছি। তুইও কর। তা হলে ভাইয়েরা ছাড়া পেয়ে যাবে। না হলে ছাড়া পাবে না। তোর ভাইয়ের কী হবে, কিছু বলতে পারছি না। তাই রেপ কেসটা কর।”
সন্দেশখালি নিয়ে একাধিক ভিডিও বাইরে আসতেই অভিযোগকারিণী মামলা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এই খবর রাতারাতি ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। ঘটনাচক্রে বাড়িতে উপস্থিত হয় স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব, হুমকি দিয়ে সিদ্ধান্ত বদল করাতে চান তাঁরা। বসিরহাট পুলিশ জেলা সূত্রে খবর, সোমবার সকালে অভিযোগকারিনী এসেছিলেন থানায়। এইদিন তিনি আগে যে অভিযোগ করেছিলেন, তা প্রত্যাহার করতে চাওয়ার পাশাপাশি থানায় নিজের জন্য নিরাপত্তারও দাবি করেছিলেন তিনি। এইদিন পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, তাঁকে বিজেপির তরফে হুমকি দেওয়া হয়েছে, তাই তিনি নিরাপত্তার অভাববোধ করছেন। সেই কারণেই এই ব্যাপারে পুলিশের কাছ থেকে সাহায্য চান তিনি। পুলিশ আরও জানা গিয়েছে, তাঁকে ব্যক্তিগত ভাবে সর্বক্ষণের নিরাপত্তা না দেওয়া হলেও তাঁর বাড়ির সামনে পুলিশি প্রহরা বসানো হয়েছে।