দক্ষিণবঙ্গে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের যুব নেতার নারীবিদ্বেষী ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের ঘটনা এর আগেই ছড়িয়েছিল। এবার সেই ঘটনার ছায়া দেখা গেল তৃণমূলেরই ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদে। ছাত্রনেত্রীকে কুপ্রস্তাব এবং তাঁর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল ওই কলেজেরই প্রাক্তন ছাত্রনেতা তথা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তিন নেতার বিরুদ্ধে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এক ছাত্রনেত্রীকে দেওয়া হল ‘কুপ্রস্তাব’। এখানেই শেষ নয়, রাজি না হওয়ায় তৃণমূল কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে শ্লীলতাহানিরও অভিযোগ উঠেছে! অন্ততঃ এমনটাই অভিযোগ করেছেন নির্যাতিতা নিজে।
এ নিয়ে অভিযোগ দায়ের হয়েছে পুলিশের কাছে। পুলিশকে ‘নির্যাতিতা’ জানিয়েছেন, কুপ্রস্তাবে আপত্তি করায় তিনি হুমকি পেয়েছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন এক দিন তৃণমূলের একটি দলীয় কার্যালয়ে তাঁকে কাজের সূত্রে ডেকে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখাও হয়েছিল। ‘নির্যাতিতা’ ছাত্রীর অভিযোগ, তাঁকে বেশ কয়েক বার আপত্তিকর এবং ইঙ্গিতপূর্ণ কথাবার্তা বলেছেন তাঁর দলেরই তিন নেতা। পরে তাঁকে শারীরিক ভাবে নিগ্রহ করেছেন তাঁরা। প্রথমে এ নিয়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু লাভ হয়নি কোনও। তাই তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। অন্য দিকে, এই অভিযোগের পিছনে যথারীতি ‘পরিকল্পিত চক্রান্ত’ দেখছেন অভিযুক্তরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, পূর্ব বর্ধমান জেলার বাসিন্দা ওই ছাত্রনেত্রী অভিযোগ করেছেন তাঁর কলেজেরই প্রাক্তন ছাত্র নেতা তথা বর্তমানে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এক সহ-সভাপতি এবং আরও দুই নেতার বিরুদ্ধে। পুলিশকে ‘নির্যাতিতা’ জানিয়েছেন, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ওই নেতা তাঁকে বার বার কুপ্রস্তাব দিতেন। এরপর তাঁকে দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে তাঁর শ্লীলতাহানি করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশের কাছে তিনি এ-ও অভিযোগ করেন যে, ওই ঘটনার কথা কাউকে বললে তাঁকে প্রাণে মারারও হুমকি দেওয়া হয়েছে। তাঁর ব্যবসায়ী বাবার ‘ভাতের জোগান’ বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও শাসানো হয়েছে।
ছাত্রনেত্রীর কথায়, ‘‘তৃণমূলের ছাত্র নেতাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আমার কলেজে যাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এখন পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘নেতৃত্বকে জানিয়েও কোন ফল মেলেনি। তাই পুলিশের কাছে গিয়েছি।’’ অন্য দিকে অভিযুক্তদের মধ্যে এক জন ওই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘‘এটা পরিকল্পনামাফিক ষড়যন্ত্র।’’ কিন্তু কেন এই ষড়যন্ত্র হতে পারে তা তিনি খেলসা করে বলেননি।