পাঁচ বছর পেরিয়ে গেছে, এখনও হয়নি বিচার। এতদিন সিবিআইকে নোটিশ ইস্যুর নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। মালদহের কালিয়াচক আবাসিক মিশন স্কুলের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী ছিল নাজিমা খাতুন। ২০১৮ সালের ৩০শে অক্টোবর স্কুলের হস্টেলের ৫ তলা থেকে পড়ে যায় নাজিমা। অভিযোগ ছিল, বাড়িতে খবর না দিয়েই ওই ছাত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যায় স্কুল কর্তৃপক্ষ। শেষপর্যন্ত যখন এক অভিভাবকের কাছ থেকে খবর পেয়ে যখন হাসপাতালে পৌঁছন বাড়ির লোকেরা, ততক্ষণের মেয়েকে মৃত বলে ঘোষণা করেছেন চিকিৎসকরা।
মৃতার পরিবারের দাবি, স্কুলের তরফ থেকে জানানো হয়, হস্টেলের পাঁচ তলার ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে নাজিমা। অথচ দেহের কোথাও আঘাতের কোনও চিহ্ন ছিল না! স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পরিবারের সদস্যরা ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ দায়ের করে কালিয়াচক থানায়। পরিবারের লোকেদের দাবি, ওই আবাসিক স্কুলটি যিনি চালান, তিনি প্রভাবশালী। সেকারণেই ৩০৬ এবং ১২০ ধারায় মামলায় রুজু করে পুলিস। শুধু তাই নয়, বেশ কয়েকজন অভিযুক্ত জামিনে ছাড়া পেয়ে যান। বাকিরা স্বাভাবিকভাবেই নিরুদ্দেশ। বস্তুত, নিম্ন আদালতের চার্জশিটে সেকথাও উল্লেখ করেছিল পুলিশ। কেবল অভিযুক্তের প্রভাবের ফেরেই কি আটকে বিচার?
তারপরে মেয়ের মৃত্যুর সুবিচার চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে জানিয়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি তাতেও। এরপর যখন নিম্ন আদালতের রায় পুর্নবিবেচনার আর্জি জানানো হয়, তখন সেই আবেদন মঞ্জুর করেন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। কিন্তু তদন্তভার থাকে পুলিসের হাতেই। মামলা গড়ায় কলকাতা হাইকোর্টে।
এইদিন হাইকোর্টের শুনানিতে মামলাকারীর আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী আদালতে জানান, ‘একজন মানুষ যদি পাঁচ তলা ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে তাহলে শরীরের হাড় আস্ত থাকে না। কিন্তু ময়নাতদন্তে রিপোর্টে তেমন কিছু উল্লেখ পাওয়া যায়নি। বরং হাড়ে কোনও আঘাত নেই বলেই উল্লেখ করা হয়েছে’। তাঁর অভিযোগ, ঘটনার পর অনেকক্ষণ জীবিত ছিল ওই ছাত্রী। কিন্তু জীবিত থাকাকালীন তার জবানবন্দি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। প্রশাসন, আদালত, বিচার ব্যবস্থার হাল দেখে হতাশ মৃতার পরিবার।