Close

৯৫ বছর বয়সে প্রয়াত পাঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিং বাদল

পাঞ্জাবের পাঁচবারের মুখ্যমন্ত্রী এবং শিরোমণি আকালি দলের প্রাণপুরুষ প্রকাশ সিং বাদল গত হয়েছেন। ৯৫ বছর বয়সী বাদল শ্বাসের সমস্যা‍য় ভুগছিলেন।

৯৫ বছর বয়সে প্রয়াত পাঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিং বাদল

২৫শে এপ্রিল, মঙ্গলবার, রাত ৮ টায় মোহালিতে পাঞ্জাবের পাঁচবারের মুখ্যমন্ত্রী এবং শিরোমণি আকালি দলের (SAD) প্রাণপুরুষ, প্রকাশ সিং বাদল গত হয়েছেন। ৯৫ বছর বয়সী বাদল শ্বাসের সমস্যা নিয়ে মোহালির ফর্টিস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

১৯৯৫-এর দশকে একজন গ্রাম প্রধান হিসাবে বাদল রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন এবং ১৯৫৭ সালে প্রথমবার বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, তখন তাঁর বয়স ছিল ৩০। ১৯৭০ সালের মার্চে তিনি ৪৩ বছর বয়সে পাঞ্জাবের সর্বকনিষ্ঠ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দ্বায়িত্ব নেন। ২০১২ সালে শেষ মেয়াদের শপথগ্রহণের সময় পাঞ্জাবের সবচেয়ে বয়স্ক মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি।

১৯৭২ থেকে ১৯৭৭ সালের মধ্যে, বাদল পাঞ্জাব অ্যাসেম্বলিতে বিরোধী দলনেতা ছিলেন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ঘোষিত জরুরি অবস্থার সময় তিনি কারাবরণ করেন। জরুরি অবস্থার পরপরই, মোরারজি দেশাই সরকারে ১৯৭৭-এর মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রী হন বাদল ।

পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তার দ্বিতীয় মেয়াদ ১৯৭৭ সালের জুন মাসে শুরু হয়েছিল এবং ১৯৮০ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের মাধ্যমে শেষ হয়েছিল। তিনি ইন্দিরা গান্ধীর ‘অপারেশন ব্লু স্টার’-এর একজন সোচ্চার সমালোচক ছিলেন। ‘অপারেশন ব্লু স্টার’ হল একটি সামরিক অভিযান, যা ১৯৮৪ সালে শুরু হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল শিখদের পবিত্রতম অমৃতসরের স্বর্ণ মন্দির থেকে দমদমি তকসাল নেতা জার্নাইল সিং ভিন্দ্রানওয়ালে এবং তার অনুসারীদের বহিস্কার করা।

১৯৮২ SAD সালের এপ্রিলে গঠিত হওয়ার পর অতি-ডান, অতি-জাতীয়তাবাদী, ভারতীয় জনতা পার্টির (BJP) প্রথম মিত্র হয়ে ওঠে। SAD এবং BJP জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (NDA) গঠন করে, যা পাঁচবার ভারত শাসন করেছে এবং বর্তমানে শাসন করছে।

তিনি ১৯৭৭ সালে তৃতীয় বারের জন্য পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হন এবং ২০০২ পর্যন্ত তিনি এই পদে বহাল ছিলেন। ২০০৭ এবং ২০১২ সালে SAD-BJP জোট যথাক্রমে বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর তিনি চতুর্থ এবং পঞ্চমবারের মতো মুখ্যমন্ত্রী হন। তাঁর পুত্র সুখবীর সিং বাদল ২০০৮ সালে SAD এর নেতা হিসাবে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকারের তিনটি বিতর্কিত কৃষি আইনের বিরোধিতা করার পরে বাদলের SAD NDA থেকে বেরিয়ে আসে। বিতর্কিত কৃষি আইনের বিরুদ্ধে পাঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের কৃষকরা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিরতে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল। এই আইনের প্রতিবাদে করে বাদল পদ্মবিভূষণ পুরস্কার ফিরিয়ে দেন। বাদল ২০১৫ তে এই পুরস্কারে ভুষিত হয়েছিলেন। যা ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার।

SAD ২০২২ সালের পাঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনে মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টির (BSP) সাথে জোট করে এবং হেরে যায়। ক্ষমতাসীন আম আদমি পার্টি (AAP) এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের (INC) পরে মাত্র তিনজন বিধায়ক নিয়ে সুখবীরের দল এখন রাজ্যে তৃতীয় স্থানে। বাদলের শেষ দফার শাসনকালে সুখবীরের বিরুদ্ধে কোটি কোটি ডলার মূল্যের বিভিন্ন ব্যবসা চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী মোদী, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, INC নেতা মল্লিকার্জুন খার্গ এবং রাহুল গান্ধী বাদলের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। AAP থেকে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানও বাদলের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন।

Leave a comment
scroll to top