Close

বিক্ষোভ দমনে নতুন আইন করছে ব্রিটেন

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বিক্ষোভ দমন করার জন্যে পাবলিক অর্ডার বিল নামক একটি কড়া আইন আনার প্রচেষ্টা করছেন যার বিরোধিতা করেছে বিরোধীরা।

ব্রিটেনে গণ বিক্ষোভ দমনের জন্যে নয়া আইন আনছেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক

Photo by Sides Imagery on Pexels.com

ব্রিটেনে বিক্ষোভ দমনের জন্য নতুন প্রস্তাব ঘোষণা করতে চলেছে প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সরকার। এই প্রস্তাব গুরুতর পরিস্থিতি রোধে পুলিশের কর্মকাণ্ডের পরিধি বিস্তৃত করবে।

বিক্ষোভ দমনের এই আইন নিয়ে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে ব্রিটেনের বিরোধী দল লেবার পার্টি সহ বামপন্থী দল এবং ট্রেড ইউনিয়নগুলো ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো

সোমবার, ১৬ই জানুয়ারি, ১০ ডাউনিং স্ট্রিট থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সুনাক বলেন, প্রতিবাদ করার অধিকার আমাদের গণতন্ত্রের একটি মৌলিক নীতি, তবে এটি নিরঙ্কুশ নয়।

‘আমরা ক্ষুদ্র সংখ্যালঘু দ্বারা পরিচালিত প্রতিবাদ মেনে নিতে পারি না যেটি সাধারণ জনগণের জীবনকে ব্যাহত করে । এটি গ্রহণযোগ্য নয় এবং আমরা এটি শেষ করতে যাচ্ছি’, বলেন তিনি।

সরকার বলছে, নতুন আইন পাশ হলে এর অর্থ হবে পুলিশ আগে থেকেই বিক্ষোভ বন্ধ করে দিতে পারবে।

সাম্প্রতিক সময়ে সাধারণত পরিবেশগত ইস্যুতে বিক্ষোভের কারণে সেন্ট্রাল লন্ডনের একটি বড় অংশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এবং মূল মহাসড়কগুলোতে ট্র্যাফিক অবরুদ্ধ হয়েছে। যার ফলে বিশৃঙ্খলা বন্ধ করাতে পুলিশকে আরও শক্তি দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে দক্ষিণপন্থী টোরি শিবিরের তরফ থেকে।

রাশিয়া, চীন, প্রভৃতি দেশে জনগণ কে বিক্ষোভ দেখানোর জন্যে উস্কানি দেওয়া, বা সেই সব দেশে বিশৃঙ্খল দাঙ্গা দমন কে মানবাধিকার লঙ্ঘন বলা ব্রিটিশ সরকার নিজ দেশে বিক্ষোভ দমন করতে ২০২২ সালে একটি আইন পাস করে। তবে পাবলিক অর্ডার বিল নামে পরিচিত একটি নতুন আইন নিয়ে তারা আরও অগ্রসর হওয়ার পরিকল্পনা করছে।

শাসক টোরি দলের তরফ থেকে উগ্র-দক্ষিণপন্থী প্রীতি প্যাটেল ও এপসমের লর্ড শার্প এই বিলটিকে প্রযোজনা করছেন। বিলটি গত বছর প্রকাশিত হয় এবং বর্তমানে সংসদে বিতর্কের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এটি নাগরিক অধিকার গোষ্ঠীগুলোর কাছ থেকে ব্যাপক সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে, যাদের দাবি এটি গণতন্ত্রবিরোধী এবং পুলিশকে খুব বেশি ক্ষমতা দেয়।

সরকার ‘গুরুতর ব্যাঘাত’-এর আইনি সংজ্ঞা প্রসারিত করতে, পুলিশকে আরও নমনীয়তা দিতে এবং নতুন ক্ষমতা কখন ব্যবহার করা যেতে পারে সে সম্পর্কে আইনি স্পষ্টতা দিতে আইন হওয়ার আগে পাবলিক অর্ডার বিলটি সংশোধন করতে চায়।

বিলটি পাস হলে কোনও বিক্ষোভকারী যদি নিজেদেরকে কোনও ভবনে বা বস্তুর সাথে তালাবদ্ধ করতে চান তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা যাবে। তার সাথে আদালত কিছু প্রতিবাদকারীদের স্বাধীনতা সীমিত করার অনুমতি পাবে যাতে তারা গুরুতর ব্যাঘাত সৃষ্টি না করে।

এই বিলটি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রাক্তন লেবার নেতা জেরেমি করবিন। তিনি বলেন, ‘পাবলিক অর্ডার বিলটি আমাদের এতগুলো স্বাধীনতা কে খর্ব করে দেবে যে কোথা থেকে শুরু করবো সেটা বলাই মুশকিল – মত প্রকাশের স্বাধীনতা, কর্মের স্বাধীনতা, চলাফেরার স্বাধীনতা এবং বাক স্বাধীনতা, বিশেষ করে যখন জনগণ আমাদের শোষণমূলক চরিত্রের অন্যায্য অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাঠামোর বিরুদ্ধে, যার দ্বারা তাঁরা নিষ্পেষিত হচ্ছেন, সংগ্রাম করতে চান।’

করবিন লিখেছেন, ‘বিলটি আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকারের উপর একটি আক্রমণ এবং স্পষ্টতই নিজেকে এবং আমাদের শোষণমূলক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে রক্ষা করার জন্য সরকারের একটি কৌশলগত পদক্ষেপ।’

Leave a comment
scroll to top