বাংলাদেশের উৎখাত হওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতের আশ্রয়ে থেকে তাঁর আওয়ামী লীগের নেতা ও কর্মীদের সামাজিক মাধ্যমে লাইভে এসে ভাষণ দেওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে কিছু মৌলবাদী শক্তি ঢাকার ৩২ নম্বর ধানমন্ডিতে অবস্থিত শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত বাসভবনে হামলা করেন, গাঁইতি, হাতুড়ি দিয়ে, বুলডোজার চালিয়ে সেই ঐতিহাসিক স্থাপনাকে ধ্বংস করে ফেলেন গত ৫ই ফেব্রুয়ারি রাতে। যদিও এই ঘটনার পিছনে মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ইন্ধন ছিল, ও রাষ্ট্র যন্ত্রের প্রত্যক্ষ প্রশ্রয় ছিল, ৩২ নম্বর ধানমন্ডির মুজিবের বাসভবন ভাঙার ঘটনা ঘিরে বাংলাদেশে একটি বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে।
একদিকে যেমন জামাত-এ-ইসলামী ও অন্যান্য ইসলামী দলগুলো এই ঘটনায় উল্লাস প্রকাশ করেছে, তেমনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী পার্টি (বিএনপি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতৃত্বাধীন বাম গণতান্ত্রিক জোট প্রভৃতি ৩২ নম্বর ধানমন্ডির মুজিবের বাসভবন ভাঙার ঘটনাকে নৈরাজ্যবাদ বলে চিহ্নিত করেছে ও সামগ্রিক ভাবে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করতে ব্যর্থ হওয়ার জন্যে অশীতিপর ইউনূস সরকারের সমালোচনা করেছে।
কিন্তু বাংলাদেশে যখন ৩২ নম্বর ধানমন্ডির মুজিবের বাসভবন ভাঙার ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে উঠেছে, ঠিক সেই সময়ে এই ঘটনার সমালোচনা ও নিন্দা করে বিবৃতি দিয়ে প্রতিবেশী ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রক আগুনে ঘি ঢালার কাজ করেছে বলে ঢাকার ভূ-রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। আর নয়া দিল্লি এই বিষয়ে মন্তব্য করে নিজের জন্যে উভয় সঙ্কট সৃষ্টি করেছে।
একদিকে ৩২ নম্বর ধানমন্ডির মুজিবের বাসভবন ভাঙার নিন্দা করে ভারত বাংলাদেশেই ভারত-বিরোধিতার পালে বাতাস দিয়েছে আর অন্যদিকে ভারতের ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থকেও বিপর্যস্ত করেছে।
কেন ৩২ নম্বর ধানমন্ডির মুজিবের বাসভবন ভাঙার নিন্দা ভারতেরই ক্ষতি করেছে?
৩২ নম্বর ধানমন্ডির মুজিবের বাসভবন ভাঙার ঘটনা সম্পর্কে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রক একটি বিবৃতিতে ৬ই ফেব্রুয়ারি বলে, “এটা পরিতাপের বিষয় যে, দখলদার ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণের বীরত্বপূর্ণ প্রতিরোধের প্রতীক শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বাসভবন ২০২৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ধ্বংস করা হয়।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “বাংলার স্বকীয়তা ও গর্ব-লালনকারী স্বাধীনতা সংগ্রামকে যারা সম্মান করেন তারা সকলেই বাংলাদেশের জাতীয় চেতনার জন্য এই বাসভবনের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন। এই ধ্বংস কাণ্ডের তীব্র নিন্দা করা উচিত।”
বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞদের কাছে ৩২ নম্বর ধানমন্ডির মুজিবের বাসভবন ভাঙার ঘটনাকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রক নিন্দা করে নিজের জন্যে সঙ্কট তৈরি করেছে।
এই ঘটনার নিন্দা করে নয়া দিল্লির পররাষ্ট্র মন্ত্রক বাংলাদেশ সম্পর্কে নিজের দ্বিচারিতা কে ও দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষেত্রে তার আগ্রাসী সম্প্রসারণবাদী চরিত্র কে পরিস্ফুটিত করেছে বলে বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।
২০২৪ সালের ১৫ই জুলাই থেকে বাংলাদেশে সাবেক আওয়ামী লীগ সরকার যেভাবে প্রতিবাদী “বৈষম্য-বিরোধী” ছাত্র-যুবদের ব্যাপক গণহত্যা শুরু করে, তার নিন্দায় সরব হয় বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষ ও সংগঠন।
কিন্তু আওয়ামী লীগের সাথে ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী হাসিনার সাথে সুমধুর সম্পর্ক থাকায় এই ঘটনার কোনো বিরোধিতা ভারত করেনি বরং বাংলাদেশের প্রতিবাদীদের যে করেই হোক দমন করার সালিশি করেছিল বলে বিশেষ সূত্রে জানা গেছে।
৫ই আগস্ট গণঅভ্যূথানের মধ্যে দিয়ে হাসিনার সরকার কে উৎখাত করার পরে, বিশেষ করে ৮ই আগস্ট দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার স্থাপন হওয়ার পর থেকে ছাত্র-যুব হত্যার ঘটনা বন্ধ হয়ে যায়। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন অনুসারে, ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত “বৈষম্য-বিরোধী” ছাত্র আন্দোলনে অন্তত ৬৩১ জন ছাত্র-জনতা প্রাণ হারিয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১৯ হাজার ২০০ জনের বেশি।
এই বিরাট সংখ্যার মানুষ কে তাদের দোরগোড়ায় হত্যা হয়ে যেতে দেখেও নয়া দিল্লি এর কোনো বিরোধিতা করেনি, বরং চুপ থেকেছে এবং হাসিনার পতন হওয়ার সাথে সাথে তাঁকে ভারতে রাজনৈতিক শরণার্থীর মর্যাদা দিয়ে বিশেষ বন্দোবস্ত করে রেখে দিয়েছে। এর ফলে ভারত সম্পর্কে বাংলাদেশের সাধারণ জনগণের বিতৃষ্ণা আরও বেড়ে যায়।
যখন হাসিনা “বৈষম্য-বিরোধী” আন্দোলন দমন করতে সশস্ত্র রাষ্ট্রীয় বাহিনী কে পথে নামান, গুলি চালানোর নির্দেশ দেন, তখন সেটার নিন্দা না করার কারণ হিসাবে ভারতের যুক্তি ছিল যে সেগুলো বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং তাই এতে নাক গলানোর কোনো অভিপ্রায় নয়া দিল্লির নেই।
অথচ ফেব্রুয়ারি মাসে যখন কোনো ভাবেই রাষ্ট্রীয় মদদে রাস্তায় গণহত্যা হচ্ছে না, ইসলামী নৈরাজ্যবাদী শক্তি স্বৈরতন্ত্র-বিরোধী রাষ্ট্রের প্রচ্ছন্ন মদদে শুধু কিছু ইমারত ধ্বংস করছে ও যার বিরোধিতা সে দেশের মূলস্রোতের রাজনৈতিক দলগুলো, যেমন বিএনপি বা সিপিবি কঠোর ভাবে করছে, তখন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের ৩২ নম্বর ধানমন্ডির মুজিবের বাসভবন ভাঙার নিন্দা নয়া দিল্লির দ্বিচারিতা প্রকাশ করছে।
বাংলাদেশের মানুষের জীবনের থেকে সেখানকার স্থাপত্য ও ইমারত নিয়ে ভারত বেশি চিন্তিত, এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে সেটাই প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।
এই ঘটনা ইঙ্গিত করছে যে ভারত বাংলাদেশ সম্পর্কে একটি কূটনৈতিক সংঘর্ষের রাস্তায় চলতে চায় যদিও বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার বারবার ভারতের সাথে সমতার ভিত্তিতে ভাল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রেখে চলার কথা বলেছে।
কারণ ৩২ নম্বর ধানমন্ডির মুজিবের বাসভবন ভাঙার নিন্দা করার আগেই, সেই ৫ই আগস্ট অভ্যুথানের পর থেকেই ভারত কিন্তু পদে পদে বাংলাদেশের বিরোধিতা করে এসেছে যার নজির পূর্বে দেখা যায়নি।
একদিকে ভারত তার নিজ দেশে মুসলিম ও খ্রিস্টান সংখ্যালঘু নিপীড়ণের ঘটনাগুলো নিয়ে করা যে কোনো বিদেশী সমালোচনাকে তীব্র ভাবে বিরোধিতা করে এই বলে যে তার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বলার অধিকার অন্য কারোর নেই।
কিন্তু সেই ভারতই প্রতিবেশী দেশে সংখ্যালঘু হিন্দু নির্যাতন হচ্ছে বলে বারবার দাবি করে, যদিও ভারতের মতন বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নিপীড়ণের ঘটনায় রাষ্ট্রীয় মদদ থাকে না এবং সরকারি ভাবে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি বঞ্চনা করা হয় না। তাদের ব্যবসা বা বাণিজ্য করার ক্ষেত্রে সরকারি নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয় না।
অন্যদিকে ভারতে প্রধানমন্ত্রী মোদীর ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) শাসিত রাজ্যগুলোয়, বিশেষ করে দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে, মুসলিমদের ব্যবসা করার উপর নানা ধরণের প্রতিবন্ধকতা চাপানো হয় এবং তাদের ধর্মীয় উপসনা স্থলগুলো কে হিন্দু উপসনালয়ে পরিবর্তন করার প্রয়াসও দেখা যায়।
ভারতের বিরোধী দলগুলোর দাবি মোদী সরকার আর বিজেপি নিজেদের রাজনৈতিক ভবিষ্যত সুরক্ষিত রাখতে, হিন্দু সম্প্রদায়কে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের মাধ্যমে নিজের বশে রাখতেই নানা ধরণের সাম্প্রদায়িক কর্মকান্ডে সামিল হয়। দেশের কোটি কোটি মুসলিমের সাথে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকের মতন ব্যবহার করা হয় বলে মানবধিকার সংগঠনগুলো অভিযোগ করে।
যে নয়া দিল্লি বর্তমানে বাংলাদেশে ৩২ নম্বর ধানমন্ডির মুজিবের বাসভবন ভাঙার নিন্দা করেছে, সেই মোদী সরকার ১৯৯২ সালে হিন্দুত্ববাদী জঙ্গী গোষ্ঠীর হাতে গুড়িয়ে দেওয়া পনেরো শতাব্দীর প্রাচীন বাবরি মসজিদের জমিতে একটি রাম মন্দির তৈরি করা নিয়ে সরকারি ভাবে উল্লাস প্রকাশ করেছে। ভারতের বিরোধীরা, বিশেষ করে বামপন্থীরা, এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও বিরোধিতা করেছে।
অতএব, যেহেতু বাংলাদেশের “অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে” জুলাই গণহত্যার সময়ে ভারত নাক গলায়নি, তাই তাকে এখন, যখন আর কোনো গণহত্যা হচ্ছে না, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাতে নিষেধ করছেন সে দেশের প্রতিবাদী ছাত্র-যুব ও ইসলামী শক্তিগুলো।
কেন হাসিনা কে প্রশ্রয় দেওয়া নিয়ে ক্ষোভ?
যেহেতু মোদী সরকার ভারতে হাসিনা কে আশ্রয় দিয়েছে, তাই ঢাকার সাথে নয়া দিল্লির সম্পর্কে শীতলতা এসেছে। ভারত যতই বলুক যে হাসিনা নিজ ব্যক্তিগত উদ্যোগে সামাজিক মাধ্যমে লাইভে গিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা ও কর্মীদের সাথে কথা বলেছেন, ভাষণ দিয়েছেন ও রাষ্ট্র-বিরোধী কর্মকান্ডে সামিল হতে মানুষ কে উস্কেছেন, ঢাকার কাছে, বাংলাদেশের ব্যাপক মানুষের কাছে ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের ইন্ধনে।
হাসিনার শাসনকালে নয়া দিল্লি যদিও দাবি করেছিল তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনো হস্তক্ষেপ করে না, ঘটনাবলী দেখিয়েছে যে ভারত সরকার বাংলাদেশের সরকারকে শুধু নিজ স্বার্থে ব্যবহারই করেনি বরং নানা ভাবে পশ্চিমা বিশ্বের সমালোচনা থেকে তাকে রক্ষা করেছে।
২০২৩ সাল থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক জো বাইডেন সরকার হাসিনার উপর চাপ বাড়ায় সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচন করার দাবি জানিয়ে। পশ্চিমা বিশ্বও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দাঁড়ায় কারণ বছরের পর বছর হাসিনার জন-বিরোধী স্বৈরতান্ত্রিক ও সন্ত্রাসী ভূমিকার তারাও বিরোধিতা করেছিল। কিন্তু বাইডেন সরকারের সাথে তার সখ্যতা কে ব্যবহার করে, বিশেষ করে জুন ২০২৩-এ নিজের মার্কিন সফর কে ব্যবহার করে, মোদী হাসিনার সরকার কে আবার একটি পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে সাহায্য করে।
বাংলাদেশের মূলস্রোতের সব কটি দলই—ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় পার্টি ও অন্য কিছু দল ছাড়া—নির্বাচন বয়কটের ডাক দেয়। এর ব্যাপক সাড়াও পরে ২০২৪ সালের নির্বাচনে। তবুও বিরোধীরা অভিযোগ করেন যে হাসিনা ব্যাপক কারচুপি ও সন্ত্রাস করে জিতে ফিরে আসেন ক্ষমতায়।
আর এই ফিরে আসার পিছনে ভারতের অবদান কে আওয়ামী লীগ কখনোই অস্বীকার করেনি, বরং এই কারণে ভারতের ব্যবসায়িক স্বার্থ কে তারা পদে পদে বেশি করে রক্ষা করেছে।
“২০১৪ সালেও নির্বাচন নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছিল। ভারতবর্ষ আমাদের পাশে ছিল। ২০১৮ সালের নির্বাচনকেও বিতর্কিত করার এবং সে নির্বাচন নিয়ে অনেক প্রশ্নের উত্থাপন করা হয়েছিল। ভারতবর্ষ আমাদের পাশে ছিল। এবারও গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে ভারতের অবস্থানটা কী ছিল বা কী আছে, তা আপনারাই জানেন,” সাবেক বাংলাদেশী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার সাথে সাক্ষাৎ করার পরে ১৫ই জানুয়ারি ২০২৪ সালে বলেন।
আওয়ামী লীগের থেকে রাজনৈতিক সূত্রে জানা যাচ্ছে যে সাধারণ নির্বাচনের জন্যে টিকিট পেতে দলের দফতরে নয়, তাদের নেতাদের তদ্বির করতে হতো নয়া দিল্লির বিজেপির দফতরে। বিজেপির থেকে অনুমোদিত প্রার্থী তালিকাই নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে দাঁড়াতে পারতো বলে গোপনীয়তার শর্তে জানাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রাক্তন নেতৃত্বের পরিবারের সদস্যরা।
এই ভাবে যখন ভারত তার সাথে আওয়ামী লীগ কে একাত্ম করে দেখায় বাংলাদেশের মানুষকে তখন এটাই স্বাভাবিক যে সেই ভারতই হাসিনা কে দেশের ক্ষমতায় ফেরানোর জন্যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে ও আওয়ামী লীগের ক্ষয়ে যেতে থাকা সমর্থন ভিত্তিকে রক্ষা করার চেষ্টা চালাতে থাকবে। এই কারণে হাসিনা ভারত সরকারের ঘেরাটোপে থেকেও ইন্টারনেট ব্যবহার করে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ কর্মীদের রাষ্ট্র-বিরোধী কর্মকান্ডে যোগ দিতে উস্কানি দেওয়ার সাহস পান।
যদি ভারত ৩২ নম্বর ধানমন্ডির মুজিবের বাসভবন ভাঙার নিন্দা না করে হাসিনার মানুষ মারার নিন্দা করতো, বৈষম্যমূলক ব্যবহার না করে বাংলাদেশের সাথে সমতার ভিত্তিতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রক্ষায় জোর দিত, এবং নিজ দেশ থেকে মানবধিকার লঙ্ঘন ও গণহত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত হাসিনা কে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে হস্তান্তরিত করতো তাহলে দক্ষিণ এশিয়ায় বন্ধুহীন হয়ে, একঘরে হয়ে থাকার দিন ভারতের শেষ হতো ও বাংলাদেশ কে আগামীতে পাকিস্তানের ভারত-বিরোধী ষড়যন্ত্রে সামিল করানোর থেকে আটকানোই শুধু যেত না, বরং বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করে উত্তর-পূর্ব ভারতে জঙ্গী কার্যকলাপ করার প্রচেষ্টাও বন্ধ করা যেত।
কিন্তু নিজের অবস্থানে অনড় থেকে ভারত দীর্ঘকালীন ভিত্তিতে আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতির ময়দানে নিজের ক্ষতি নিজে করছে আর এর প্রভাব সুদূরপ্রসারী হতে পারে।