ভারতের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের এক নতুন দোটানা শুরু হল। কিছুদিন আগেও ভারতের রাশিয়ার থেকে তেল কেনা নিয়ে বা ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখার কারণে যথেষ্ট ক্ষুন্ন হওয়া যুক্তরাষ্ট্র বারবার নানা মঞ্চে আর নানা ভাবে নয়া দিল্লী কে খুঁচিয়েছে। সমালোচনাও করেছে আবার যেহেতু চীন বিরোধী সামরিক জোটে তাদের ভারতকে দরকার তাই বেশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে বেশি উত্যক্ত করার রাস্তায় হাঁটেনি যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনের সরকার। কিন্তু বর্তমানে আবার দুই দেশের সম্পর্ক অবনতির দিকে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্যে বিভ্রাট
এই কিছুদিন আগেই চীনা সরকার ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে মধ্যস্থতা করে মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই যুযুধান শিবির কে এক সাথে আনার ব্যবস্থা করে ও তাদের বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক যেমন করায় আবার দুই দেশই একে অপরের দেশে যাতে তাদের বন্ধ দূতাবাস খোলে, সেই বন্দোবস্তও করে। এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যের দীর্ঘকালীন একটি তিক্ততার সম্পর্কে বরফ গলার আভাস পাওয়া যায়। এরই মধ্যে চীনারা জানায় তারা নাকি সিরিয়া ও ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন দ্বন্দ্ব সমাধানের জন্যেও তৎপর হয়েছে তবে যেহেতু এই দ্বন্দ্বগুলো দ্বিপাক্ষিক নয়, বরং অনেক গুলো শক্তি এর মধ্যে জড়িত, তাই সৌদি ও ইরানের দ্বন্দ্বের মতন এর চটজলদি সমাধান সম্ভব নয়।
ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকেই মার্কিন-নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা জোট যে নিষেধাজ্ঞার বোঝা রুশ রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের সরকারের ঘাড়ে চাপায়, তার ফলে মস্কোকেও দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের নয়া-উপনিবেশ হিসাবে পরিচিত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে নিজের প্রভাব বিস্তার শুরু করে। নিজ প্রভাব বিস্তারের সাথে সাথে, মস্কো মধ্যপ্রাচ্যের সেই দেশের সরকারগুলোকে, যেমন সৌদি আরব, সংযুক্ত আমিরশাহী, প্রভৃতিকে, সঙ্কটে নিমজ্জিত যুক্তরাষ্ট্রের জোটের প্রভাব থেকে বের করে আনা শুরুও করে যা ওয়াশিংটন কে আতঙ্কিত করে, যা ফাঁস হওয়া পেন্টাগন দলিলে উল্লেখিত হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক হামলা কে পরাজিত করা সিরিয়ার সাথে রাশিয়া আর চীনের উদ্যোগে আবার আরব দুনিয়ার সখ্যতা তৈরী হয়। সিরিয়া কে একঘরে করে দেওয়া মধ্যপ্রাচ্যের রাজতন্ত্রগুলো আবার তাকে আরব লীগে ফিরিয়ে আনার প্রয়াস শুরু করে। সংযুক্ত আমিরশাহীর সরকারের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত করে দামাস্কাস আর এর সাথে সৌদি আরবের সাথেও সম্পর্ক ভাল করার প্রয়াস শুরু হয়। বারবার সিরিয়ায়, বিশেষ করে বিধ্বংসী ভূমিকম্পের পরেও, ইজরায়েলের হামলা চলার বিরোধিতা করে আরব দেশগুলো। অন্যদিকে ইয়েমেনের শান্তি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি দীর্ঘকালীন সংঘাতও শেষ হওয়ার মুখে।
মধ্যপ্রাচ্যে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের রেল রণনীতি
এই অবস্থায়, ব্যাকফুটে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্র কে মধ্যপ্রাচ্যে নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে আবার ঝাঁপিয়ে পড়তে হয়েছে। আর তার মদদ করার জন্যে সে নিয়ে এসেছে ভারত কে। যদিও ভারতের উদ্দেশ্য সেখানে রাশিয়ার স্বার্থে ঘা দেওয়া নয়, কিন্তু চীনের প্রস্তাবিত বেল্ট রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) আটকাতে নয়া দিল্লী তার প্রভাব খাটিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র কে মদদ করতে ঢুকছে।
কিছুদিন আগেই, যুক্তরাষ্ট্র ভারত সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল কে দিয়ে সংযুক্ত আমিরশাহী ও সৌদি আরব কে সেখানে রেল পরিকাঠামো গড়ে তোলার ও রেলপথে যোগাযোগ মাধ্যম কে সম্প্রসারণ করে বন্দরের সাথে সংযুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মস্তিস্কপ্রসূত এই প্রকল্পে ভারত আর যুক্তরাষ্ট্র এক সাথে চীনের বিআরআই থেকে এই দেশগুলোকে দূরে রাখতে সেখানে রেল পরিকাঠামো গড়ে তুলতে চায়। কিন্তু সেই ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে অন্য জায়গায়।
রেল ও পরিকাঠামোগত ক্ষেত্রে ভারত কি চীন কে টেক্কা দিতে পারবে?
বর্তমানে ভারতের রেল পরিকাঠামোর হাল চীনের থেকে অনেক অংশেই পিছিয়ে আছে। ভারতে গড়ে ১০০ কিমি প্রতি ঘন্টা গতিতে ট্রেন চালানো মুশকিল হয়ে যায় বেশির ভাগ রুটেই। ভারতের সর্বাধিক গতির ট্রেন হল বন্দে ভারত, যার সর্বাধিক গতি হল ১৮০ কিমি প্রতি ঘন্টা। ভারতের মোট রেলপথের দৈর্ঘ হল ৬৮,০৪৩ কিমি, যার মধ্যে ২০২৩ সালের এপ্রিল মাস অবধি ৫৮,৮১২ কিমি রেলপথের বৈদুতিকরণ হয়েছে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে মোট রেলপথ আছে ২২০,৪৮০ কিমি, যা বিশ্বের সর্বাধিক, তবে তার মধ্যে মাত্র ২,০২৫ কিমি রেলপথ বৈদুতিকরণ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের আমট্র্যাক কোম্পানির যাত্রীবাহী আসেল কানেক্টিকাট ও রোড আয়ল্যান্ডের মধ্যে সর্বাধিক ২২৫ কিমি প্রতি ঘন্টা গতিতে ট্রেন চলাচল করে। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যক্তিমালিকানাধীন রেলপথগুলোর অধিকাংশই এখনো ডিজেল লোকোমোটিভ চালানোর উপযোগী হওয়ায় সেখানে বৈদ্যুতিক, দ্রুতগতির রেল চলাচল করে না।
সেই দিক থেকে দেখতে গেলে চীনা রেলপথের দৈর্ঘ বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক – ১৫০,০০০ কিমি, যার মধ্যে ১০০,০০০ কিমি রুট ইতিমধ্যে বৈদুতিকরণ হয়ে গেছে, যা সামগ্রিক রেলপথের ৬৬.৬৭%। চীনের সর্বাধিক গতির ট্রেন হল সাংহাই মাগলেভ যা ঘন্টায় সর্বাধিক ৪৩১ কিমি প্রতি ঘন্টা গতিতে ছোটে। চীনের সাধারণ শ্রেণীর দ্রুতগতির ট্রেনগুলো গড়ে ২০০ থেকে ৩৫০ কিমি প্রতি ঘন্টা গতিতে ছোটে, যা মার্কিন আর ভারতের রেলের থেকে অনেক বেশি।
এই অবস্থায়, বর্তমানে নিজের দেশের রেলপথের সংস্কার ও পরিকাঠামো উন্নয়ন না করে, এবং ট্রেনের গড় গতি বৃদ্ধি না করে, ভারত যদি এখন চীনের সাথে মধ্যপ্রাচ্যে বা আফ্রিকায় রেলপথ গড়া নিয়ে প্রতিযোগিতা করে, তাহলে সে গতি ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকবে। এই ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের নিজের কোনো বিরাট সাফল্য নেই। ফলে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর কাছে ভারতের ভূমিকা গুরুত্ব পাবে না এবং তার অন্যান্য ব্যবসায় এর প্রভাব পড়তে পারে।
কোয়াড নিয়ে সঙ্কট
মোদীর নেতৃত্বাধীন ভারত একদিকে যেমন চীনের সাথে ব্যাপক হারে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি করে চলেছে, তেমনি আবার যুক্তরাষ্ট্রের চীন-বিরোধী সামরিক চক্র কোয়াড এর সদস্যও। যুক্তরাষ্ট্র ভারত, জাপান আর অস্ট্রেলিয়া কে নিয়ে চার শক্তির কোয়াড বানিয়েছে ইন্ডো-প্যাসিফিক বা ভারত মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরে চীনের প্রভাব কমাতে ও চীন কে সামরিক ভাবে ঘিরে ফেলতে। কিন্তু এখানেও যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মতের অমিল হয়ে চলেছে।
ভারতের বিদেশ নীতি কোনো ধরণের যুদ্ধ জোটের অংশ হওয়ার বিরোধী। তাই ভারত বারবার জোর দিয়ে বলেছে যে কোয়াড কোনো শক্তির বিরুদ্ধে (পড়ুন চীনের বিরুদ্ধে) সামরিক জোট নয়, বরং এর সদস্য দেশগুলোর অভিন্ন স্বার্থ রক্ষা করার ও আঞ্চলিক সুরক্ষার জন্যে করা একটি সমঝোতা। তবে চীন বারবার কোয়াড চক্র কে একটি সামরিক চক্র হিসাবে চিহ্নিত করে তার বিরোধিতা করেছে। ইউক্রেন প্রশ্নে পশ্চিমাদের বিরাগভাজন হওয়া রাশিয়াও ভারতের নাম না করে এই কোয়াড গঠনের বিরোধিতা করেছে।
তাই, যুক্তরাষ্ট্র বারবার জোর দিয়ে কোয়াড কে চীন বিরোধী সামরিক জোট বললেও ভারত এই প্রশ্নে নীরব থেকেছে। এরই মধ্যে এই বছরের কোয়াড শীর্ষ বৈঠক হওয়ার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়াতে। কিন্তু অর্থনৈতিক সঙ্কটে জর্জরিত বাইডেন প্রশাসন এখনো জুন মাস থেকে দেশের খরচ চালানোর জন্যে সরকারের ঋণ নেওয়ার সীমা বৃদ্ধি করতে পারছে না, যার ফলে দেশে একটি বিরূপ প্রভাব পড়ছে ও মার্কিন অর্থনীতি একটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে চলছে। এমতাবস্থায়, রাশিয়া কে যুদ্ধে হারাতে যুক্তরাষ্ট্র যে অর্থ ঢালছে, তাতেও খাঁড়ার কোপ পড়ছে। ফলে কোয়াডের আসন্ন বৈঠকটি, যেখানে মোদী ও বাইডেন যেতেন, সেটি বাতিল করা হয়েছে।
এমতাবস্থায় ভারতের পক্ষে কোয়াডের মতন একটি সামরিক জোটে থেকে প্রতিবেশী দেশের সাথে সম্পর্ক তিক্ত রাখার এবং রাশিয়ার মতন পুরানো বন্ধু কে ক্ষুন্ন করা কূটনৈতিক ভাবে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। সারা বিশ্বে যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব শিথিল হচ্ছে এবং ওয়াশিংটনের যুদ্ধং দেহি মনোভাব এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলো মানতে পারছে না, তখন সেই আর্থিক ভাবে বিপর্যস্ত দেশটির সাথে জোটে থাকা, তাও আবার নিজের প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে, দীর্ঘকালীন সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
মার্কিন-ভারত দ্বন্দ্ব
রাশিয়ার থেকে তেল কেনা থেকে ইউক্রেন নিয়ে নিরপেক্ষ অবস্থান নেওয়ার জন্যে যুক্তরাষ্ট্রের থেকে বারবার সমালোচনা করা হয়েছে ভারতের। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের থেকে ধর্মের স্বাধীনতা সংক্রান্ত যে রিপোর্ট সেখানকার পররাষ্ট্র দফতর প্রকাশ করেছে সেখানে মোদীর হিন্দুত্ববাদী নীতির ফলে দেশের ভিতর ক্রমবর্ধমান সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ও সংখ্যালঘু মুসলিমদের ধর্মবিশ্বাস ও ধর্মপালনের স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ করার জন্যে নয়া দিল্লীকে সমালোচনা করা হয়েছে। এতে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপত্র অরিন্দম বাগচী নয়া দিল্লীর সাউথ ব্লকে ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রের রিপোর্ট কে সমালোচনা করেন। সেটি কে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রনোদিত বলে চিহ্নিত করেন এবং জানান যে ভারত সরকার এর সারবত্তা স্বীকার করে না। এই রিপোর্ট এমন সময় প্রকাশ পেয়েছে যখন মোদীর জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্র সফরের কথা ঘোষণা হয়ে গেছে এবং বাইডেন তাঁর আথিতেয়তা করতে প্রস্তুত বলে জানা গেছে। ভারতের পশ্চিমাপন্থী বিরোধীদের তরফ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের মোদী সরকারের সাম্প্রদায়িক নীতির সমালোচনা করার ঘটনা নিয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক যদিও প্রভাবিত হবে না, কিন্তু পশ্চিমা শক্তির সাথে হাত মিলিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে বা ভারত মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরে যুদ্ধ জোট তৈরি করেও যে ভারতের বিশ্বের মঞ্চে ও কূটনৈতিক স্তরে কোনো লাভ হচ্ছে না সেটা বোঝা যাচ্ছে।
ভারতের পথ
বিশ্বায়নের যুগে ভারতের অর্থনীতির উদারীকরণের ফলে যে কতিপয় ধনী ও উচ্চ মধ্যবিত্ত ছাড়া কারুর লাভ হয়নি তা প্রতিবার অক্সফ্যাম কতৃক প্রকাশিত রিপোর্টে বোঝা যায়। ভারতের আয় বৈষম্য যেমন দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে তেমনি করোনা অতিমারীর পরে অসংখ্য মানুষ দারিদ্র্যের চোরাবালিতে পড়েছেন। যে অর্থনৈতিক উন্নয়নের মডেল ভারতের বিভিন্ন শাসকদল, যেমন কংগ্রেস বা মোদীর ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) গ্রহণ করেছে, তার ফলে আপামর জনগণের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়নি আর কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পায়নি।
এমতাবস্থায়, বিদেশে নিজের প্রভাব বিস্তার করার ও পশ্চিমা শক্তির স্বার্থে অন্য দেশের সাথে বিতন্ডা বাড়িয়ে ভারতের দীর্ঘকালীন কোনো লাভ নেই। তাই ভারতের উচিত এখন সামগ্রিক ভাবে ব্যাপক জনগণের জীবনের মান উন্নত করার উপর জোর দেওয়া এবং সেই সংক্রান্ত আর্থিক ও কূটনৈতিক নীতি গ্রহণ করা। কোনো দেশের নিজস্ব, স্বাধীন উন্নয়নের মডেলের বিরোধিতা না করে, ভারতের উচিত নিজের আর্থিক উন্নয়নে অন্যান্য উদীয়মান শক্তিগুলো কে সামিল করানো যাতে দ্রুত গতিতে জনগণের জীবনের মান উন্নত করা যায় এবং প্রযুক্তিগত ভাবে পশ্চিমা প্রভাবমুক্ত হওয়া যায়। পশ্চিমা প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে মোদীর “আত্মনির্ভর ভারত” গড়ার কর্মসূচী কিন্তু দীর্ঘকালীন পরিপ্রেক্ষিতে একটি পরিহাসে পরিণত হবে।
বিশ্ব জুড়ে বিডলারিকরণের একটা প্রবাহ চলছে, যাতে করে যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ব্যবহার করে বিশ্ব বাণিজ্য করার প্রচলিত ব্যবস্থার বাইরে নিজ-নিজ দেশের মুদ্রা ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশ নিজেদের বৈদেশিক বাণিজ্য করতে উদ্যোগী হয়েছে। সেই ক্ষেত্রে ভারতের মতন একটি স্থিতিশীল ও আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে চলা দেশেরও নিজ মুদ্রায় বৈদেশিক বাণিজ্যে জোর দেওয়া উচিত যাতে যুক্তরাষ্ট্রের উপর দীর্ঘকালীন নির্ভরতা কমিয়ে আনা যায় ও আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হওয়া যায়।