শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের প্রভাবে দলবদলের হিড়িক লেগেছে পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে। দলে দলে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা যোগদান করছে বিরোধিদলে। গত বিধানসভা ভোটের সময় নবগঠিত আইএসএফ(ISF)ও এর বাইরে নয়।
ইতিমধ্যে, গত মে মাসেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার গঙ্গাধরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সহ শাসক দলের কর্মীরা একযোগে দল ছেড়ে যোগ দেয় আইএসএফ(ISF)-এ।
এই দলবদল প্রসঙ্গেই এইদিন বিধানসভার সামনে দাঁড়িয়ে বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী বাইরন বিশ্বাস-এর শাসকদলে যোগদান প্রসঙ্গে মন্তব্য করলেন। “আমার মনে হয় বাইরনবাবু লোভের কাছে বশ্যতা স্বীকার করেননি, কোনও ভয়ের কাছে তিনি নিজেকে সঁপে দিয়েছেন। এখন তিনি বলছেন শাসকদলের সঙ্গে না থাকলে উন্নয়ন করা যাবে না; এটা বোকা বোকা কথা। এসব কথা বলে ড্যামেজ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছেন।” বলছেন নওশাদ।
প্রসঙ্গত, গত বিধানসভা নির্বাচনে বামেদের সমর্থনে ভাঙড় থেকে জিতেছিলেন আইএসএফ নেতা সিদ্দিকী। এরপর সাগরদিঘির উপনির্বাচনে শাসকদলের ভরাডুবির পর রীতিমতো অস্বস্তি বেড়েছিল ঘাসফুল শিবিরের। বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাসের জয়ের পর পঞ্চায়েত ভোটে বাম-কংগ্রেস জোট নিয়েও নতুন করে চর্চা শুরু হয়ে যায়। এরইমধ্যে আচমকা দলবদলে তৃণমূলে ভিড়েছেন বাইরন। যা নিয়ে বিগত কয়েকদিন ধরেই রাজনৈতিক মহলে আলচনা তুঙ্গে।
তবে নওসাদও কি এবার দলবদল করতে চাইছেন? উত্তরে নওশাদের সাফ জবাব, “আমি সংযুক্ত মোর্চার ব্যানারে আইএসএফের পক্ষ থেকে ভাঙড়ে লড়েছিলাম। ভাঙড়ের মানুষ আমাকে ভরসা-বিশ্বাস করে ভোট দিয়েছে। এই ভোটারদের আমি কোনোদিন অসম্মান করতে পারব না। তাঁদের বিশ্বাস-আস্থাকে আমি নষ্ট করতে পারব না।”
এরপরই বাইরন বিশ্বাসকে এক হাত নিয়ে তিনি বলেন, “বাইরনবাবুর সঙ্গে নওশাদের এখানেই তো পার্থক্য। কোনও পরিস্থিতিতেই নওশাদ সিদ্দিকী দলবদল করবে না। ২০২৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের সময় আমি দাঁড়ালে একই প্রশ্ন করা হলে আমি একই উত্তর দেব। দলবদলের কোনও প্রশ্নই আসছে না। সম্ভাবনাও নেই।”
তবে বিধায়ক নওশাদের সিদ্দিকীর মতে দলবদলের পিছনে নির্দিষ্ট দুটি কারণ কাজ করে থাকে। নওশাদের মতে, “দলবদলের দুটো কারণ থাকতে পারে বলে আমি মনে করি। প্রথমটা লোভ, দ্বিতীয়টা ভয়। আমার ক্ষেত্রেও এই দুটো এসেছে। কিন্তু, আমি দুটোকেই উপেক্ষা করেছি। আমাকেও প্রথমে লোভ দেখানো হয়েছিল, তারপর ভয়ও দেখানো হয়েছিল। অনৈতিকভাবে জেলে রাখা হয়েছিল। আমার মনে হয় বাইরনবাবু লোভের কাছে বশ্যতা স্বীকার করেননি, কোনও ভয়ের কাছে তিনি নিজেকে সঁপে দিয়েছেন।”