শনিবার, ১লা এপ্রিল, দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে জানার অধিকার যাঁদের রয়েছে, তাঁরা গুজরাট হাইকোর্টের রায়ে “স্তম্ভিত” হয়েছেন। গুজরাট হাইকোর্ট শুক্রবার, ৩১শে মার্চ, কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনের (সিআইসি) সাত বছরের পুরানো একটি আদেশ বাতিল করেছে যা গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়কে কেজরিওয়ালকে মোদীর ডিগ্রির তথ্য সরবরাহ করতে বলেছিল।
হাইকোর্ট মোদীর শিক্ষাগত যোগ্যতা জানতে ডিগ্রি চাওয়ায় কেজরিওয়ালকে ২৫,০০০ টাকার জরিমানা করেছে এবং তাঁকে গুজরাট স্টেট লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটির (জিএসএলএসএ) কাছে চার সপ্তাহের মধ্যে এই টাকা জমা করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
“গোটা দেশ হাইকোর্টের আদেশে হতবাক কারণ গণতন্ত্রে, তথ্য চাওয়া এবং প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার স্বাধীনতা থাকা উচিত।” কেজরিওয়াল দিল্লীতে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন।
কেজরিওয়াল আরো বলেন “হাইকোর্টের আদেশ প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা নিয়ে সন্দেহ বাড়িয়েছে,”। দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির নেতা আরও বলেন যে প্রধানমন্ত্রী যদি গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয় বা দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করতেন তবে তাদের এটি উদযাপন করা উচিত ছিল। পরিবর্তে তারা তথ্য গোপন করছে।
তিনি মোদীর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে তুলে প্রশ্ন করেন, “মোদীর বৈধ ডিগ্রি থাকলে গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয় কেন তা দেখাচ্ছে না”। তিনি বলেন যে গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয় কেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতার তথ্য দিতে প্রস্তুত নয় তার দুটি কারণ হতে পারে – এটা হয় মোদীর অহংকার, অথবা তাঁর ডিগ্রী জাল হতে পরে।
তবে তিনি যোগ করেছেন যে নিরক্ষর হওয়া “অপরাধ বা পাপ” নয় কারণ দেশে প্রচুর দারিদ্র্য রয়েছে। “আমাদের মধ্যে অনেকেই এমন অবস্থায় নেই যে পরিবারের আর্থিক অবস্থার কারণে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করাতে পারেন।” স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও এই ধরনের দারিদ্র্য দেশকে পীড়িত করে চলেছে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।
কেজরিওয়াল মোদীর শিক্ষা নিয়ে তাঁর প্রশ্নে জোর দিয়ে বলেছেন, “শীর্ষপদে আসীন হওয়ার পর থেকে প্রশ্নটি অপরিহার্য হয়ে ওঠে। দেশের ব্যবস্থাপক, মোদীকে প্রতিদিন অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হয়, যার মধ্যে বিজ্ঞান ও অর্থনীতি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত রয়েছে”।
“প্রধানমন্ত্রী যদি শিক্ষিত না হন তবে কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন ধরণের লোক এসে যে কোনও জায়গায় তাঁর স্বাক্ষর পেয়ে যাবেন। তাঁর কাছ থেকে নোটবন্দির (বিমুদ্রাকরণ) মতন কিছু পাস করা হয়েছিল যার কারণে দেশের অনেক ক্ষতি হয়েছিল”, বলে প্রশ্ন তোলেন তিনি। “প্রধানমন্ত্রী মোদী যদি শিক্ষিত হতেন তবে তিনি নোটবন্দি কার্যকর করতেন না,” বলে কেজরিওয়াল মন্তব্য করেন।
এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী বা তাঁর সরকার এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।