মঙ্গলবার, ৭ই মার্চ, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার গুলিস্তান অঞ্চলের একটি বাণিজ্যিক ভবনে বিস্ফোরণে এখনো পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুসারে ১৬ জন হত হয়েছেন ও শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার বেলা ৪.৫৫ মিঃ তে গুলিস্তানে অবস্থিত বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন (বিআরটিসি) এর কাউন্টার লাগোয়া পাঁচতলা বাণিজ্যিক ভবনে বিস্ফোরণ হয়। এই ঘটনায় আহতদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গুলিস্তানের বিস্ফোরণের ঘটনায় ঢাকা সহ গোটা বাংলাদেশে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির অফিসার বাচ্চু মিঞা সংবাদমাধ্যম কে জানিয়েছেন যে গুলিস্তানের বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৬ হয়েছে, যার মধ্যে ১৪জন পুরুষ ও দুইজন নারী রয়েছেন। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ নাজমুল হক সংবাদ মাধ্যমের কাছে ১৬ জনের হত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গুলিস্তানের বিস্ফোরণের ঘটনাস্থল আর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ থেকে ইস্ট পোস্টের নিজস্ব সূত্র জানিয়েছে যে ঘিঞ্জি এলাকায় অবস্থিত এই বাণিজ্যিক ভবনটিতে হওয়া বিস্ফোরণের ফলে চার দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে জানলার ভাঙা কাঁচ, আসবাবপত্র, কংক্রিট আর মানুষের রক্ত। স্থানীয় বাসিন্দারা ও শহরের আশেপাশের অঞ্চল থেকে অনেক মানুষ এসে ভিড় করেন ঘটনাস্থলে, যার ফলে পুলিশ, দমকল ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্ধারকার্য চালাতে অনেক বেগ পেতে হয়।
বিস্ফোরণ হওয়া বাণিজ্যিক ভবনটির পাঁচটি তলার মধ্যে নিচ তলায় একটি স্যানেটারি সাপ্লাইয়ের দোকান ছিল ও উপরের চারতলায় ব্যাঙ্কের কার্যালয় ছিল। মৃত এবং আহতদের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি, তবে ঘটনাস্থলে এখনো ১১টি দমকল ইঞ্জিন কাজ করছে বলে জানিয়েছেন দমকল বিভাগের জনসংযোগ আধিকারিক শাহজাহান শিকদার।
ইস্ট পোস্টার নিজস্ব সূত্রে জানা গেছে যে হাসপাতালে অসংখ্য মানুষ আহতদের রক্তদান করেন। তবে এর মধ্যেই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শাসক আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্র লীগ টেবিল পেতে আহতদের রক্তদানের জন্যে নাম নথিভুক্ত করার ব্যবস্থা শুরু করে। শুধুমাত্র ছাত্রলীগের টেবিলে নাম নথিভুক্ত করিয়েই রক্তদান করা সম্ভব হয়েছে। এই কাজে ছাত্রলীগ কে পুলিশ পূর্ণ সহায়তা করেছে বলে অভিযোগ।
এরই মধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান মোহাম্মদ হারুন রশীদ সহ পুলিশের নানা আধিকারিক ঘটনাস্থলে গেছেন। পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
গুলিস্তানের বিস্ফোরণের কারণ এখনো সরকারি আধিকারিকরা জানাননি। বাংলাদেশের সাংবাদিকদের দমকল বিভাগের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে এই বিস্ফোরণের কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে দুর্ঘটনা বা নাশকতার মধ্যে কোনোটির সম্ভাবনাই এখনো উড়িয়ে দেওয়া হয়নি।