রাশিয়ার সামরিক অভিযানের ফলে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে এবং সেই দেশের রাষ্ট্রপতি ভোলোদিমির জেলেনস্কি’র সরকার এই বাস্তবতা মেনে নেওয়ার পথে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক রুশ রাষ্ট্রপতি ও বর্তমানে রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা উপ-প্রধান দিমিত্রি মেদভেদেভ।
এসময় উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ইউক্রেনের ভেতরে এখন কোরিয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার, ৮ই ফেব্রুয়ারি, মেদভেদেভ তাঁর টেলিগ্রাম চ্যানেলের একটি পোস্টে এ মন্তব্য করেছেন।
তাঁর পোস্টে মেদভেদেভ আরও বলেন, ইউক্রেনের সাবেক এবং বর্তমান কর্মকর্তারা কোরিয় স্টাইলের ভাগাভাগি মেনে নেওয়ার বিষয়টি এখন আলোচনা করছেন। ১৯৫০ সালের দিকে যেভাবে ভাগাভাগির মধ্য দিয়ে কোরিয় যুদ্ধের অবসান হয়েছিল,তেমন ভাবেই ইউক্রেন দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যেতে পারে।
ভাগাভাগির এই ধারণাকে ইউক্রেনের কিছু লোক ঠেকিয়ে রেখেছেন। তবে চূড়ান্তভাবে তারা এই বিবৃতি দিতে পারেন যে, এ যুদ্ধে কেউ বিজয়ী হতে পারেনি এবং এজন্য বিভক্তির বিষয়টি মেনে নেওয়াই শ্রেষ্ঠ পন্থা।
ভবিষ্যতে, পরাজিত ইউক্রেন দক্ষিণ কোরিয়ার মতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটাবে এবং নয়া নাৎসি বাহিনী তার হারানো ভূখণ্ডের ওপর মালিকানা দাবি করতেই থাকবে উল্লেখ করে মেদভেদেভ বলেন, তবে এখানে পার্থক্য হল- ডানবাস অঞ্চলের জনগণ গণভোটের মাধ্যমে রাশিয়ার সাথে যুক্ত হয়েছে, তারা দক্ষিণ কোরিয়ার মতো স্বাধীন কোনো রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেনি। সে কারণে কোরিয় দৃশ্যপট ইউক্রেনে বাস্তবসম্মত হয়ে উঠবে না।
দুই কোরিয়ার মতন ইউক্রেনের বিভক্তির এই বিষয়টি মূলত কিয়েভের পক্ষ থেকে এসেছে বলে মনে করা হচ্ছে। গত মাসে ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তা উপপ্রধান অ্যালেক্সি দানিলভ দাবি করেছিলেন যে, ইউরোপীয় দেশগুলোর সাথে রাশিয়া কোরিয় কায়দায় ইউক্রেনকে বিভক্ত করার জন্য লবিং করছে যা কিয়েভ প্রত্যাখ্যান করেছে।
যদিও দানিলভের এই বক্তব্য আগেই নাকচ করেছে মস্কো এবং ন্যাটো সামরিক জোট ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য দায়ি করেছে। তবে ভবিষ্যতে ইউক্রেন কোরিয়ার মতন ভাগ হয় কিনা সেই দিকেই এখন নজর বিশ্বের।