রবিবার, ৮ই জানুয়ারি ২০২৩-এ অভ্যুথানের মাধ্যমে ব্রাজিলের সদ্য নির্বাচিত ল্যুইস ইনাসিও লুলা দি সিলভা সরকারকে উচ্ছেদের প্রচেষ্টা চালালো সেই দেশের উগ্র দক্ষিণপন্থীরা। রবিবার ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় ব্যাপক তান্ডব চালালো গত নির্বাচনে পরাজিত উগ্র দক্ষিণপন্থী প্রার্থী তথা প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জায়ের বলসেনারোর সমর্থকরা। এই ঘটনাকে ২০২২ সালের মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর ডোনান্ড ট্রাম্প সমর্থকদের দ্বারা মার্কিন সংসদ ক্যাপিটল হিলে হিংসাত্মক আক্রমণ চালানোর সাথে তুলনা করছেন অনেকে।
অভ্যূথানে অংশগ্রহণকারী উগ্র-দক্ষিনপন্থীরা ব্রাজিলের পার্লামেন্ট, রাষ্ট্রপতি ভবন এবং সুপ্রিম কোর্টে ব্যাপক হামলা চালায়। এই ঘটনার জেরে ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আলেকজান্ডার ডি মোরাএস ৯০ দিনের জন্য বরখাস্ত করেছে ব্রাসিলিয়া ফেরারেল জেলার গভর্নর ইবানিস রোচা কে। রোচার বিরুদ্ধে অভ্যূথানকারীদের সমর্থন করা এবং কতৃপক্ষের সমস্ত নিরাপত্তা পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার আবেদন অমান্য করার অভিযোগ এনেছেন বিচারক৷ বিচারপতি বলেছেন “সন্ত্রাসী অপরাধীদের দ্বারা ব্রাজিলের গণতন্ত্র কে উচ্ছেদ করা দূরস্ত, নাড়ানোও সম্ভব নয়।”
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ব্রাসিলিয়ায় জরুরী অবস্থা জারি করেছে লুলা সরকার। চলতি মাসের শেষ পর্যন্ত চলবে জরুরী অবস্থা।ব্রাজিলের এই অভ্যুথানের প্রচেষ্টার প্রতিবাদ করেছেন প্রতিবেশী দেশগুলো। কলম্বিয়ার বামপন্থী রাষ্ট্রপতি গুস্তাভ পেত্র ট্যুইট করে বলেছেন “ফ্যাসিবাদ ক্যু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দক্ষিণপন্থীরা অ-হিংসার নীতি বজায় রাখতে পারেনা।”
আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রপতি আলবার্তো ফার্নান্ডেজ বলেন “ব্রাজিলের জনগণের সাথে গনতন্ত্রকে রক্ষা করা এবং দক্ষিণপন্থীদের দ্বারা সংগঠিত ক্যু দানবকে আর ফিরে আসতে দেবো না।
ব্রাজিলের নির্বাচনের নিয়ম হল ৫০% এর উপরে ভোট না পেলে নির্বাচনে জয়ী হওয়া যায় না। ২রা অক্টোবার ২০০২-এ সাধারণ নির্বাচনে লুলা ৪৮.৪৩ ভোট পান। অন্যদিকে জৈর বলসেনারো পান ৪৩.২% ভোট। ফলে কোনো প্রার্থী ৫০% ভোট না পাওয়ায় দ্বিতীয় রাউন্ড নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় সব চেয়ে বেশী ভোট পাওয়া এই দুই প্রার্থীর মধ্যে।
৩০শে অক্টোবর হওয়া দ্বিতীয় দফার ভোটে দেখা যায় লুলা ৫০.৯% এবং বলসনারো ৪৯.১% ভোট পেয়েছেন। সাধারণ নির্বাচনে এই হার মানতে নারাজ বলসনারো সমর্থকরা। অভিযোগ নির্বাচনের আগে ও পরে ব্যাপক হিংসা ছাডাও গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন সেনা ব্যারাকের সামনে জমায়েত হয়ে অভ্যুত্থান করার আবদার জানিয়ে প্রচার চালাচ্ছিলো বলসনারোর সমর্থকেরা।