CAA নিয়ে এবার বিতর্কিত মন্তব্য করলেন ভারতীয় জনতা পার্টির বর্ষীয়ান নেতা তথাগত রায়। রবিবার, ১৭ই মার্চ সামাজিক মাধ্যম এক্স (পূর্বতন টুইটার)-এ তিনি পোস্ট করে সিএএর আওতায় নাগরিকত্ব অর্জনের জন্য, আবেদনকারীদের নিজেদের অমুসলিম প্রমান করার জন্য পুরুষাঙ্গ পরিক্ষার কথা বলেছেন। এছাড়াও যে নারীরা সুন্নাত না করা পুরুষদের সাথে থাকবেন, তাদের অমুসলিম ধরে নাওয়ার কথা বলেন তিনি। প্রসঙ্গত রায় মেঘালয়, ত্রিপুরা এবং অরুনাচল প্রদেশের প্রাক্তন রাজ্যপাল, প্রাক্তন রাজ্য বিজেপির সভাপতি ছিলেন।
বিজেপি নেতার এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ উদ্বাস্তু মতুয়া সম্প্রদায়ের নেতারা। সারা ভারত বাঙালি উদ্বাস্তু সমিতির সর্বভারতীয় সভাপতি আশীষ ঠাকুর, যিনি নিজে ঠাকুর পরিবারের সদস্য এবং বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের সম্পর্কে দাদু, ইস্ট পোস্ট বাংলাকে বলেন “এই লোকটাকে (তথাগত রায়) মধ্যযুগে পাঠিয়ে দেওয়া উচিৎ। এই যুগে চলবে না। আর এটা প্রমাণ হল যে তথাগত রায় বিজেপির অন্যান্য নেতাদের থেকে একটুও আলাদা নয়।”
অন্যদিকে জয়েন্ট একশন কমিটি ফর বাঙালি রিফিউজিস এর সাধারণ সম্পাদক সুকৃতি রঞ্জন বিশ্বাস বলেন “এই সব অসভ্যতামির উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন মনে করি না। কিন্তু ওরা কি আদৌ নাগরিকত্ব দেবে?যা আইন বানিয়েছে তাতে নাগরিকত্ব হবে না।”
২০১৯ সালের শীতকালীন অধিবেশনে পাস হওয়া নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের(CAA) রুল প্রকাশিত হয়েছে চার বছর তিন মাস পর গত ১১ই মার্চ। প্রকাশিত রুলে আবেদনকারীকে বাংলাদেশ পাকিস্তান বা আফগানিস্তানের নাগরিক হওয়ার প্রমাণ স্বরূপ সিডিউল ১এ তে নয়টি নথির মধ্যে একটি জমা দিতে বলা হয়েছে, সিডিউল ১বি তে ২০টি নথির মধ্যে একটি জমা দিয়ে ২০১৪ সালের আগে ভারতে বসবাসের প্রমাণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে এবং সিডিউল ১সি এর অধীনে পাসপোর্ট আইন এবং বিদেশী আইনে ছাড় পেয়েছেন এই মর্মে হলফনামা জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যদিও বলা হয়েছে মিথ্যা হলফনামা দাখিল হলে সারা জীবনের জন্য নাগরিকত্ব হাতাতে হবে।
প্রসঙ্গত ২০১৫ সালে মোদী সরকার পাসপোর্ট আইন, এবং বিদেশী আইন থেকে তিন দেশ থেকে আগত, ছয়টি অমুসলিম ধর্মের মানুষ যারা ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে ভারতে এসেছেন তাদের ছাড় দেওয়া হয়েছে বলে ঘোষণা করে।
এর পরই প্রশ্ন ওঠে যাদের কাছে উক্ত তিন দেশের অবস্থানের নথি যাদের কাছে নেই তারা কীভাবে আবেদন করবেন বা নথি থাকলেও ধর্মীয় নিপীড়ন কীভাবে প্রমাণ করবেন। এই আশংকার মধ্যেই বিতর্কিত মন্তব্য করলেন বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা তথাগত রায়।