জো বাইডেনের বদলে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিসেবে কমলা হ্যারিসের নাম উঠে আসার পর থেকে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বিষয়টা খুব একটা সুখকর নয় বলা যেতেই পারে তার কাছে চ্যালেঞ্জটা কঠিনতর হয়ে উঠেছে ।
গতকাল বৃহস্পতিবার টেক্সাক্স রাজ্যের হিউসটনে আমেরিকান ফেডারেশন অব টিচার্স এর সমাবেশে যোগ দেন ৫৯ বছরের কমলা হ্যারিস। সেখানে অর্থনৈতিক নীতি ও শ্রমিকদের অধিকার, স্বাস্থ্যসেবা ও শিশু পরিচর্যার পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একের পর এক গুলি চালনার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সংসদে লাগু হওয়া অস্ত্র আইন আটকে দেওয়ার জন্য রিপাবলিকানদের কঠোর সমালোচনা করেন তিনি।
কমলা বলেন, ‘আমাদের লড়াই ভবিষ্যতের জন্য। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ মৌলিক স্বাধীনতা নিয়ে লড়াইয়ের মধ্যে আছি।’
বর্তমান মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন গত রোববার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে ডোনান্ড ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিসের মধ্যে । বিভিন্ন সংবাদ প্রতিষ্ঠান দ্বারা করা জনমত সমীক্ষায় দেখা যায় ট্রাম্প তার প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিসের চেয়ে সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। এই সমীক্ষায় ৪৮ শতাংশ মার্কিন ভোটার ট্রাম্পকে এবং ৪৬ শতাংশ কমলাকে সমর্থন জানান।
অথচ জুলাইয়ের শেষ দিকে একই প্রতিষ্ঠানের করা জনমত সমীক্ষায় দেখা যায় ট্রাম্পের প্রতি ৪৯ শতাংশ ও বাইডেনের প্রতি ৪১ শতাংশ ভোটার সমর্থন জানিয়েছিলেন। তবে হাতে গোনা কয়েকটি রাজ্যের ফলাফল পুরো হিসাব–নিকাশ পাল্টে দিতে সক্ষম। ফলে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কে জয়ী হবেন, সেটা অনেকটা নির্ভর করে । গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য আরিজোনা, জর্জিয়া, মিশিগান, পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিনে ট্রাম্পের সঙ্গে কমলার ভোটের ব্যবধান কমে আসছে। উইসকনসিন ছাড়া বাকি পাঁচ রাজ্যে কমলার চেয়ে সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন ট্রাম্প। উইসকনসিনে দুজনে সমানে সমান।
রিপাবলিকান পার্টির ঝকমকে জাতীয় সম্মেলনের পর এসব রাজ্যে ট্রাম্পের সমর্থন যেভাবে বাড়বে বলে তাঁর পার্টির থেকে আশা করা হচ্ছিল, তেমনটি হয়নি। মাত্র পাঁচ দিনের নির্বাচনী প্রচারে কমলা হ্যারিসের এই তৎপরতার প্রভাব দেখা যাচ্ছে জনমত সমীক্ষায় । এ জন্যই হয়তো গত বুধবার রাতে নর্থ ক্যারোলাইনায় নির্বাচনী সমাবেশ থেকে শুরু করে ট্রাম্প অনবরত কমলার সমালোচনা করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা একজন মার্ক্সবাদী প্রেসিডেন্টের জন্য প্রস্তুত নই। মিথ্যাবাদী কমলা একজন কট্টর বামপন্থী মার্ক্সবাদী।’
কমলা প্রথম শ্যামলা বর্নের নারী, প্রথম এশিয়ান-আমেরিকান, যিনি মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন। ৫ই নভেম্বরের নির্বাচনে জয়ী হলে তিনি হবেন প্রথম নারী মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
আগামী ৫ ই নভেম্বর হতে চলা মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিসের বিদ্যুতের বেগে উত্থান রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের কপালে জমা ঘামের কারণ হয়ে উঠছে।