Close

কে এই ইরানের বিতর্কিত রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম রাইসি? মৃত্যুতে কী প্রভাব পড়বে?

কে এই ইরানের বিতর্কিত রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম রাইসি এবং তাঁর মৃত্যুতে কী প্রভাব পড়বে?


ইরানী রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বহনকারী হেলিকপ্টারটি খারাপ আবহাওয়ার কারনে, ইরানের উত্তর-পশ্চিমে একটি পাহাড়ি ও বনাঞ্চলে রবিবার বিধ্বস্ত হয়। সারারাত উদ্ধারকাজ চলানোর পর সোমবার সকালে জানানো হয় রাইসি সহ হেলিকপ্টারে উপস্থিত সকলের মৃত্যু ঘটেছে।

১৯৬০ সালে ইরানের মাশহাদ শহরের পূর্বে একটি ধর্মপ্রাণ পরিবারে রাইসি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি অল্প বয়সেই ইরানের ইসলামিক বিপ্লবে যোগদান করে, যা ১৯৭৯ সালে দেশটির রাজতন্ত্রের পতন ঘটায় ও ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের সূচনা করে।

তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির একজন আশ্রিত, ইসলামী বিপ্লবের উত্তাল প্রথম বছরগুলিতে, তরুণ রাইসি তেহরানের শহীদ মোতাহারি বিশ্ববিদ্যালয়ে তার পড়াশোনা চালিয়ে যান, যেখানে তিনি ইসলামী আইনশাস্ত্র এবং আইনে ডক্টরেট লাভ করেন।

মাত্র ২৫ বছর বয়সে রাইসি ইরানের বিচার বিভাগের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হন। তার পর ধিরে ধিরে তিনি নিজেকে রাজনীতির মঞ্চে প্রসারিত করেন। এবং অবশেষে ২০২১ সালে তিনি ইরানের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।

ইসরায়েলকে নিয়ে সংশয়
বর্তমানে ইরান ও ইসরাইলের শত্রুতা চরম পর্যায় পৌছেছে। গত মাসে, সিরিয়ার দামাস্কাসে একটি ইরানি দূতাবাস ভবনে ইসরায়েলি হামলার পর, দুই দেশের মধ্যে সরাসরি যুদ্ধের সূচনা ঘটে।

সাংবাদিকের প্রশ্নে একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেছেন যে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা ও ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে ইসরায়েলের কোনো ভূমিকা নেই । কিন্তু প্রশ্নটি যখন করা হয়েছিল, তখন রাষ্ট্রপতি রাইসির মৃত্যু হয়েছে কিনা সেবিষয়ে সন্দেহ ছিল। এই ঘটনার ফলে ইসরাইলি সংযোগ নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করছে। তবে আপাতত সরকারিভাবে ইরানের তরফ থেকে এরকম কোনো অভিযোগ করা হয়নি।

ভারত ও বিশ্বের প্রতিক্রিয়া
ইরানের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর ঘটনায় ভারত সহ বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ শোকপ্রকাশ করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইরানী রাষ্ট্রপতির মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে বলেছেন যে তিনি “মর্মান্তিক মৃত্যুতে গভীরভাবে ব্যথিত ও মর্মাহত।

প্রয়াত সকাল বিশিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধার চিহ্ন হিসাবে ভারত সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে ২১শে মে সারা ভারতে একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হবে,”স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক”।

রাইসির মৃত্যুর পর কি হতে চলেছে ?
ইরানে সর্বচ্চ ক্ষমতার অধিকারী আয়াতুল্লাহ খামেনি যাকে সুপ্রিম লিডার অর্থাৎ সর্বোচ্চ নেতা বলে আখ্যা দেওয়া হয়। তার পর আসে রাষ্ট্রপতি। সেই কারণে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা হবার কোনো সম্ভাবনা নেই।

ইরানে, রাষ্ট্রপতি তাদের মেয়াদকালে মারা গেলে, সংবিধানের ১৩১ অনুচ্ছেদ নির্দেশ করে যে উপরাষ্ট্রপতি অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করবেন, সর্বোচ্চ নেতার দ্বারা নিশ্চিতকরণ সাপেক্ষে।

ফলে ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর পর উপরাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ মোখবার সর্বোচ্চ নেতার অনুমোদনে ইরানের নতুন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন।


রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র যিনি ভূ-রাজনীতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কে আগ্রহী। তাঁর লেখার মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক ঘটনাগুলিকে ভারতের দৃষ্টিকোণ থেকে তুলে ধরার চেষ্টা করেন।

Leave a comment
scroll to top