Close

চাবাহার বন্দর নিয়ে ভারত-ইরান চুক্তিতে নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি দিল যুক্তরাষ্ট্র

সোমবার ইরানের সঙ্গে চাবাহার বন্দর নিয়ে দশ বছরের ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ভারত। আর চুক্তিস্বাক্ষর করার কয়েক ঘন্টা পরেই আমেরিকার তরফ থেকে এল নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারির বার্তা।

ভারত ও ইরানের প্রতিনিধিরা সোমবার চাবাহার বন্দর চুক্তি সই করেন। ছবি সত্ত্ব: তেহরানে ভারতীয় দূতাবাস।

সোমবার ইরানের সঙ্গে চাবাহার বন্দর নিয়ে দশ বছরের ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ভারত। আর চুক্তি
স্বাক্ষর করার কয়েক ঘন্টা পরেই আমেরিকার তরফ থেকে এল নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারির বার্তা।
সোমবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল ইরানে যান চাবাহার বন্দর নিয়ে সেদেশের সরকারের সঙ্গে
১০ বছরের চুক্তি স্বাক্ষর করার জন্য।

এই চুক্তির মাধ্যমে ইরানের চাবাহার বন্দরের পরিচালনার দায়িত্ব
ভারতের ইন্ডিয়া পোর্ট লিমিটেড এর হাতে তুলে দেওয়া হয়। এছাড়াও ভারত ভবিষ্যতে বন্দরটিতে আরও ১২০
মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে বলে জানানো হয়।এই বন্দরের মাধ্যমে আফগানিস্তান সহ মধ্য এশিয়া, এমনকী ইউরোপের সঙ্গেও সংযোগ স্থাপন করতেপারবে ভারত।

ভারতের পরিকল্পনা, ইরানের চাবাহার বন্দরকে ইন্টারন্যাশনাল নর্থ-সাউথ ট্রান্সপোর্ট
করিডোরের সঙ্গে যুক্ত করার এবং এই করিডোরের মাধ্যমে চায়না পাকিস্তান ইকনমিক করিডোরের
অন্তর্গত গোয়াদার বন্দরকে স্টাটিজিক দিক থেকে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া।

এই নিয়ে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রিন্সিপাল ডেপুটি মুখপাত্র বেদন্ত প্যাটেল সোমবার একটি প্রেস
বিবৃতিতে বলেন, কেউ যদি ইরানের সঙ্গে ব্যবসা করার কথা ভাবে, তাহলে তাদের ওপরেও মার্কিন নিষেধাজ্ঞা
আরোপ করা হতে পারে। সেই কথাটা যেন তারা মনে রাখেন।

বেদান্ত প্যাটেল আরও বলেন, ;আমরা এই প্রতিবেদনগুলি সম্পর্কে অবগত যে ইরান এবং ভারত চাবাহার
বন্দর সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, আমি ভারত সরকারের নিজস্ব বৈদেশিক নীতি সম্পর্কে কোন
মন্তব্য করবোনা। চাবাহার বন্দরের সাথে সাথে ইরান ও ভারতের সম্পর্ক ও তাদের নিজস্ব দ্বিপাক্ষিক
সম্পর্কের আওতায়।

তবে আমি শুধু বলব…ইরানের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বহাল আছে এবং আমরা সেগুলি প্রয়োগ করতে থাকব।
তিনি বলেন ,যে কেউ ইরানের সাথে ব্যবসায় প্রবেশের কথা ভাবছেন তারা নিষেধাজ্ঞার সম্ভাব্য ঝুঁকির
সম্পর্কে নিজেকে অবগত রাখুন।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের এই হুঁশিয়ারি কে ভারত কতটা গুরুত্ব দেবে সেই নিয়ে অনেক সন্দেহ আছে। এর আগে ও
যখন ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে এস৪০০ মিসাইল সিস্টেম কিনেছিল এবং সম্প্রতি ইউক্রেনের রাশিয়া যুদ্ধ
চলাকালীন যখন ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে কম দামে অপোরিশোধিত তেল কিনে চলছে। তখনও দিল্লিকে
নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল আমেরিকা সহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলি। তবে ভারত সেই মার্কিন
হুঁশিয়ারি কে উড়িয়ে দিয়ে নিজের অবস্থানে অনড় রয়েছে ।

আর অবশেষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকেই ভারতের কৌশলগত ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনা করে পিছুপা হাঁটতে
হয়েছে। তবে কিছুদিন আগে আমারা ইরান ও রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত তিনটি ইন্ডিয়ান কম্পানির ওপর
যুক্তরাষ্ট্রকে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে দেখেছি। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে সরাসরি ভারত সরকারের ওপর
নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার মূর্খামি যুক্তরাষ্ট্র করবে না, বিশেষ করে বর্তমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র যিনি ভূ-রাজনীতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কে আগ্রহী। তাঁর লেখার মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক ঘটনাগুলিকে ভারতের দৃষ্টিকোণ থেকে তুলে ধরার চেষ্টা করেন।

Leave a comment
scroll to top