সংবাদসংস্থা রয়টার্স বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রকাশ করেছে যে গত ২৯শে এপ্রিল, সোমবার থেকে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় চৌহদ্দিতে আন্দোলনরত ফিলিস্তিনপন্থী ছাত্রদের বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউ ইয়র্ক সিটির ক্যাম্পাসে আন্দোলনকে ছত্রভঙ্গ করতে এবং সার্বিকভাবে ফিলিস্তিনপন্থী প্রচারণাকে কোনঠাসা করতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট নেমাত মেনোক শাফিক একটি বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে জানিয়েছেন যে দীর্ঘসময় যাবৎ শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে আন্দোলন তুলে নেওয়া এবং শিবির গুটিয়ে নেওয়া সংক্রান্ত আলোচনা ব্যার্থ হয়েছে। ফলে কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছে। বেশ কয়েকদিন যাবৎ মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ফিলিস্তিনের সপক্ষে লড়াই আন্দোলন চাগাড় দিয়ে উঠেছে। মার্কিন পুলিশ প্রচুর ছাত্রছাত্রীদের গাজার গণত্যার বিরোধীতাকারী মিছিল থেকে হেফাজতে নিয়েছে। সোমবার সকালে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি চিঠি দিয়ে বিক্ষোভকারীদের জানায় যে তারা যদি দুপুর দুটোর মধ্যে শিবির খালি না করে তবে তাদের বরখাস্তকরণ কার্যকরী হবে।
সোমবার বিকেলে একটি সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র বেন চ্যাঙ বলেন, “আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌহদ্দির মধ্যে শান্তি ও সুরক্ষা বজায় রাখার জন্য আন্দোলনকারীদের বরখাস্ত করা শুরু করেছি।” তিনি আরও বলেন, “আন্দোলনকারীদের শিবির নির্মাণ আমাদের অনেক ইহুদী শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের জন্য অগ্রহণযোগ্য পরিবেশ তৈরি করেছে। এছাড়াও আন্দোলনকারীদের চিৎকার বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠন পাঠনের ক্ষেত্রে সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে কারণ সামনেই বাৎসরিক পরীক্ষা।”
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের অন্যতম দাবি ছিল ইসরায়েল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে যাবতীয় লগ্নি তুলে নিতে হবে। এই নিয়ে শাফিক স্পষ্ট জানিয়েছে যে এইভাবে লগ্নি তুলে নেওয়া সম্ভব নয়। তার চেয়ে গাজায় ত্রাণ এবং হাসপাতাল নির্মাণে সরাসরি আরও লগ্নি করলে বিষয়টি ‘ক্লিন’ হবে। যদিও আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন যে তারা ম্যানহাটন ক্যাম্পাসে শিবির চালিয়ে যাবেন যতক্ষণ না তিনটি দাবি আদায় হয়। এই তিনটি দাবি হল, ইসরায়েল থেকে লগ্নি তুলে নেওয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে স্বচ্ছতা এবং আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের ও শিক্ষকদের জন্য সাধারণ ক্ষমা।