সিরিয়ায় ইরানের সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে মার্কিন হামলাকে ঘিরে ইরান আর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাগযুদ্ধ চরমে উঠল। গত শুক্রবার, ২৪শে মার্চ, ইরানকে অভিযুক্ত করে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ একটি বিবৃতি পেশ করে বলে যে উত্তর পূর্ব সিরিয়ার হাসাকায় একটি মার্কিন সামরিক জোটের ঘাঁটিতে ইরান ড্রোন হামলা চালিয়েছে।
মার্কিন বিবৃতি থেকে জানতে পারা যায় যে ইরানের এই তথাকথিত ড্রোন হামলায় একজন মার্কিন কর্মী নিহত হন ও ছয়জন আহত হন। ড্রোন হামলার জন্য এরপর ইরানকে অভিযুক্ত করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জানায় যে গত শুক্রবার, ভোর ২.৪০ নাগাদ বেশ কয়েটি মার্কিন এফ ১৫ বোমারু বিমান সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডস (IRGC) এর সামরিক ঘাঁটিগুলি লক্ষ্য করে হামলা চালায়।
সিরিয়ায় এই মার্কিন হামলার সপক্ষে যুক্তি দিয়ে বিবৃতিটির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র জানায় যে ইরানের তথাকথিত ড্রোন হামলার প্রতিশোধ নিতেই তারা আকাশপথে হামলা চালিয়েছে। সিরিয়ায় এই মার্কিন হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ তুলে জানিয়েছে যে গত শুক্রবার সকালেও মার্কিন জোটের সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে IRGC রকেট হামলা চালিয়েছে। যদিও সেই রকেট হামলায় কোনো হতাহতের খবর নেই বলেই জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
সিরিয়ায় এই মার্কিন হামলার পর সংবাদমাধ্যম আল আরবিয়া ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে উদ্ধৃত করে জানায় যে মার্কিন হামলার ফলে ইরানের ১৯ জন যোদ্ধার মৃত্যু হয়েছে।
সিরিয়ায় এই মার্কিন হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সংবাদমাধ্যম নূর নিউজ কে ইরান প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র কেইভান খোসরাভি জানান, “আমরা শুধুমাত্র সিরিয়ার সরকারের অনুরোধেই ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া (ISIS) র সন্ত্রাসবাদকে মোকাবিলা করার জন্য সিরিয়ায় সামরিক ঘাঁটি রেখেছি। এই সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে আমাদের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধকে দুর্বল করার চেষ্টা করা হলে আমাদের তরফ থেকে প্রত্যাঘাত আসবে।” খোসরাভি বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রকে সিরিয়ায় দখলদারী করার দায়েও অভিযুক্ত করেন।
এদিকে সিরিয়ার সংবাদমাধ্যমগুলি যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের এই বাগযুদ্ধে নিরপেক্ষ থাকলেও সিরিয়ায় মার্কিন হামলার পরে সংবাদমাধ্যম সানা অভিযোগ জানিয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্র গত শুক্রবার সিরিয়ার তেল সমৃদ্ধ জাজিরা অঞ্চল থেকে ৮০ টি তেলের ট্যাঙ্কার চুরি করে ইরাকে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে নিয়ে গেছে।