তাপপ্রবাহের জেরে মৃত্যু মিছিল উত্তরপ্রদেশে। ৫৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন ইতিমধ্যেই। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ৪০০-র বেশি মানুষ। সেই আবহেই বড় ধরনের বিপত্তি থেকে একটুর জন্য রক্ষা পেল যোগীরাজ্য। লক্ষনৌ-এ প্রবল গরমে সেখানে রেলের লাইন বেঁকে গিয়ে বিপত্তি। ট্রেনের চালকই দেখতে পেয়ে তড়িঘড়ি ট্রেন থামান। তাতেই এড়ানো সম্ভব হয় বিপদ।
উত্তরপ্রদেশের রাজধানী লখনৌ-এর নিগোহাঁ স্টেশনে শনিবার বিকাল ৫টা নাগাদ স্টেশনে ঢুকছিল নীলাঞ্চল এক্সপ্রেস। সূত্রের খবর, মেন লাইনের পরিবর্তে লুপ লাইনে ঢোকানো হয় ট্রেনটিকে। কিন্তু ট্রেনের চাকার ছোঁয়া লাগা মাত্রই লোহার রেললাইন চ্যাপ্টা হয়ে, এঁকেবেঁকে যায়। তীব্র গরমে লাইন গলে গিয়েছে বলে বুঝতে পারেন চালক। তৎক্ষণাৎ ব্রেক চাপেন তিনি। তাতেই দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় ট্রেনটি।
এরপর ওই ট্রেনের লোকোপাইলট লক্ষনৌ জংশন কন্ট্রোল রুমে ফোন করে বিষয়টি জানান। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন রেলের ইঞ্জিনিয়াররা। রেললাইন মেরামতের কাজ শুরু হয়। পরে লখনৌ জংশনে পৌঁছে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন নীলাঞ্চল এক্সপ্রেসের লোকোপাইলট। রেলের শীর্ষস্তরীয় আধিকারিকদের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেন তিনি। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
শনিবার এই ঘটনার পর এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। লখনৌয়ে রেলের ডিভিশনাল ম্যানেজার সুরেশ সাপরা এই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু বিষয়টি আগে কারও নজরে পড়ল না কেন, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। আপাতত ওই লুপ লাইনটি বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রেললাইনের রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি ঠিক মতো। লোহা দুর্বল হয়ে পড়েছিল। তাতেই তীব্র গরমে গলে গিয়েছে লাইন। শনিবার সন্ধ্যায় মেইন লাইনে অন্য একটি ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকাতেই নীলাঞ্চল এক্সপ্রেসকে লুপ লাইনে ঢোকানো হয় বলে জানা গিয়েছে।
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ওড়িশার করমন্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘনার রেশ এখনও কাটেনি। সরকারি ভাবে ৩০০-র কাছাকাছি মানুষ প্রাণ হারান তাতে। আহত হন ১ হাজাররে বেশি মানুষ। সেবারও করমণ্ডল এক্সপ্রেসকে লুপ লাইনে ঢোকানো হয় বলে অভিযোগ সামনে আসে। করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার তদন্ত এখনও চলছে। তার মধ্যেই লখনৌতে রেল লাইন গলে ট্রেন দুর্ঘটনার খবরে কপালে ভাঁজ যাত্রীদের।