‘জয় শ্রীরাম’ বলতে জোর করায় বদলি সেনা অফিসার। কাশ্মীরে পুলওয়ামার গনাই মহল্লা এলাকায় একটি মসজিদে ফজরের নামাজের সময় জোর করে ঢুকে প্রার্থনা করতে আসা মানুষদের ‘জয় শ্রীরাম’ ও ‘ভারত মাতা কি জয়’ স্লোগান দিতে বাধ্য করা হয়। এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় সংখ্যালঘু মহলে। অবশেষে এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করল সেনা। শনিবার ভোরে জাদুরা গ্রামের মসজিদে ওই ঘটনার পরে এক নিরাপত্তা অফিসারকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিয়ে সেনা সরকারি ভাবে কোনও বিবৃতি না দিলেও তাদের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, তদন্ত করে প্রকৃত বিষয়টি দেখা হবে। দোষীদের ছাড়া হবে না বলেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে সেনা সূত্রে।
গত শনিবার ভোরের ওই ঘটনা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কাশ্মীরের তিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী গুলাম নবি আজ়াদ, মেহবুবা মুফতি এবং ওমর আবদুল্লা। গোটা ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত করে দোষীদের কঠোর সাজার দাবি তুলেছেন উপত্যকার অনেকেই। সে দিন মসজিদে উপস্থিত ভক্তদের অনেকেই অভিযোগ করেছেন, জওয়ানেরা তাঁদের রীতিমতো শারিরীক নিগ্রহ করে স্লোগান দিতে বাধ্য করেছেন। বিষয়টি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে উচ্চপদস্থ কর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁদের আশ্বস্ত করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, ঘটনার দিন তাঁরা যখন প্রার্থনা করছিলেন, সে সময়ে টহলরত বাহিনীর কয়েক জন হঠাৎ ওই মসজিদে ঢুকে পড়ে। বাকিরা মসজিদটি ঘিরে ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য। অভিযোগ, ভিতরে ঢুকে জওয়ানেরা প্রার্থনারত ভক্তদের ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিতে বাধ্য করে। প্রার্থনার মধ্যে ওই কথা মানতে রাজি না হওয়ায় কয়েক জনকে মারধর করারও অভিযোগ ওঠে। পাশাপাশি ‘ভারত মাতা কি জয়’ ধ্বনিও দিতে বাধ্য করা হয়। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির অভিযোগ, ৫০ নম্বর রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের একটি দল ওই ঘটনায় জড়িত। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা ওই ঘটনা নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং-কে অবিলম্বে পদক্ষেপ করার দাবি জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সদ্যসমাপ্ত আমেরিকা সফরের সময়েই প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ভারতে সংখ্যালঘুদের উপর শাসক দলের আচরণের হালহকিকত তুলে ধরে তীব্র সমালোচনা করছেন ভারত সরকারকে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় মোদী সরকারের দুই মন্ত্রী ওবামাকে আক্রমণ করেছেন। কিন্তু তার মধ্যেই এই ঘটনা অস্বস্তিতে ফেলেছে গেরুয়া শিবিরকে। তাতেই কি তড়িঘড়ি এই সিদ্ধান্ত? জানা যায়নি।