Close

হনুমানই বিজেপির অনুপ্রেরণা, মোদী বললেন দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে

বিজেপি প্রতিষ্ঠা দিবসে মোদীর ভাষণে বিদ্ধ হল বিরোধীরা। মোদী অভিযোগ করেন যে "বাদশাহী মানসিকতার" বিরোধীরা তাঁর "কবর খোঁড়ার" ষড়যন্ত্র করছে।

বিজেপি প্রতিষ্ঠা দিবসে মোদীর ভাষণে বিরোধীদের প্রতি তীক্ষ সমালোচনা

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অভিযোগ করেছেন যে বিরোধীরা নাকি তাঁর “কবর খোঁড়ার” হুমকি দিচ্ছে। বৃহস্পতিবার, ৬ই এপ্রিল, ইউনিয়নের রাজধানী নয়া দিল্লীতে শাসক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) ৪৪তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে তাঁর ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এই অভিযোগ করেন। তিনি অভিযোগ করেন যে “কিছু লোকের (বিরোধীদের) বাদশাহী মানসিকতা রয়েছে” এবং তাঁরা নাকি জনগণ কে নিজেদের “গোলাম মনে করেন”। বিজেপি প্রতিষ্ঠা দিবসে মোদীর ভাষণে বিরোধীদের প্রতি তীক্ষ সমালোচনা ছাড়াও ছিল তাঁর সরকারের ভূয়সী প্রশংসা।

মোদী বলেন, “আত্মস্বার্থহীন ভাবে রাষ্ট্রের সেবা করা——যা প্রভু হনুমানের একটি গুণ——বিজেপি ক্যাডারদের অনুপ্রেরণা”। এই দিন একই সাথে হনুমান জয়ন্তী হওয়ায় বিজেপি এক সাথে দুটিই পালন করছে। মোদী বলেন যে বিরোধীরা নাকি অস্তিত্ব সঙ্কটে ভুগছে। তিনি অভিযোগ করেন যে, “তারা (বিজেপির বিরোধীরা) এখন এতটাই মরিয়া যে তারা প্রকাশ্যে ‘মোদী তোর কবর খোঁড়া হবে’ বলে। কিন্তু আমি বলতে চাই এই লোকেরা আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাবেই, কিন্তু তারা জানে না গরীব, বঞ্চিত, দলিত, আদিবাসীরা ‘পদ্ম’ (বিজেপির নির্বাচনী চিহ্ন) কে রক্ষা করছে।”

বিজেপি প্রতিষ্ঠা দিবসে মোদীর ভাষণে কংগ্রেস কে তীক্ষ সমালোচনা করা হয়। মোদী অভিযোগ করেন যে কংগ্রেস দুর্নীতিগ্রস্ত একটি দল যা স্বজনপোষণ করায় বিশ্বাস করে। তিনি বলেন, “কংগ্রেসের সংস্কৃতি কী? শুধুই বংশগত রাজনীতি। বিপরীতে, বিজেপির রাজনৈতিক সংস্কৃতি হল সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলা, বড় স্বপ্ন দেখা এবং আরও বড় অর্জন করা।”

কংগ্রেস কে বিদ্ধ করে মোদী বলেন, “২০১৪ সালে যা ঘটেছিল তা ভারতে নিছক শাসক পরিবর্তন ছিল না, বরং ভারত শতাব্দীর দাসত্ব থেকে বেরিয়ে এসে একটি নতুন যুগের সূচনা করেছিল। ব্রিটিশরা ১৯৪৭ সালে দেশ ছেড়েছিল, কিন্তু তারা কিছু মানুষের মধ্যে দাসত্বের মানসিকতা রেখে গেছিল। তারা বাদশাহী মানসিকতা লালন-পালন করে এবং দেশের মানুষকে তাদের ‘গোলাম’ মনে করে।

উল্লেখ্য কংগ্রেস ও অন্যান্য বিরোধী দলগুলো প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে এবং মোদী কে তাঁর সাথে বিতর্কিত ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থা আদানি গোষ্ঠির কর্ণধার গৌতম আদানির সম্পর্কের বিষয়টি দেশের সামনে স্পষ্ট করে তুলে ধরার দাবি করেছে। কংগ্রেসের অভিযোগ বিজেপি নিজের দুর্নীতি ঢাকতে বিরোধীদের বিরুদ্ধে লাগাতার কুৎসা করছে এবং ‘চক্রান্ত’ করে কংগ্রেসের প্রাক্তন প্রধান রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ করে দিয়েছে।

বিরোধীদের উদ্দেশ্যে তীব্র আক্রমণ ছাড়াও দিন বিজেপি প্রতিষ্ঠা দিবসে মোদীর ভাষণে ছিল বিজেপির জন্যে আগামীর পথ চলার বার্তা। মোদী বলেন দল কে শুধু নির্বাচন জেতার উপর জোর দিলে হবে না বরং তার সাথে হৃদয়ও জয় করতে হবে। তিনি বলেন যে আগামী দিনে প্রযুক্তি আরও বড় ভূমিকা পালন করবে মানুষের জীবনে এবং ইউটিউব, ইনস্টাগ্রামের মতন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে আরও বেশি করে যুবরা আসবেন। উল্লেখ্য, বিরোধীরা অভিযোগ করে থাকে যে ভারতে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করার ক্ষেত্রে অন্যান্য দলের থেকে বিজেপি অনেক সুবিধাজনক পরিস্থিতিতে আছে ইউনিয়নে ক্ষমতায় থাকার কারণে।

১৯৮০ সালের ৬ই এপ্রিল অটল বিহারী বাজপেয়ী, লাল কৃষ্ণ আডবাণী, মুরলী মনোহর যোশী, প্রভৃতি প্রাক্তন জন সঙ্ঘ নেতারা জরুরী অবস্থার সময়ে গঠিত কংগ্রেস-বিরোধী জনতা পার্টির থেকে বেরিয়ে এসে বিজেপি গঠন করেন হিন্দু জাতীয়তাবাদের স্লোগান তুলে। বিজেপি প্রতিষ্ঠা দিবসে মোদীর ভাষণে পার্টির কর্মীরা উৎসাহিত হবেন বলে আশা করে দলটির সভাপতি জেপি নাড্ডা বলেন “প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি যুগান্তকারী সাফল্য অর্জন করেছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছি।”

Leave a comment
scroll to top