রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রেল স্টেশন বর্ধমান স্টেশন। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ যাত্রীরা এখান থেকেই যাতায়াত করেন। চলে দূরপাল্লার ট্রেন। দুর্ঘটনাগ্রস্থ যাত্রীরা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি যাত্রাপথে এমন বিভীষিকার সম্মূখীন হতে হবে। ভর দুপুরে হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ল ওভারহেড জলের ট্যাঙ্ক। ঘটনাস্থলে মৃত ৩, আহত ৩৩। এর আগেও এমন দুর্ঘটনা বর্ধমান স্টেশনে হয়েছে। গত ২০২০ সালেই রাতের বেলা এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে অনুসন্ধান অফিসের সামনে বারান্দা চাঙড়় খসে পড়েছিল। আহত হয়েছিলেন এক পরিযায়ী শ্রমিক। আবার এবং আগের চেয়ে আরও শ্বাসরুদ্ধকর ঘটনায় যথারীতি প্রশ্ন উঠছে যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে।
আজ বুধবার, দুপুরে বর্ধমান স্টেশনের ২ প্ল্যাটফর্মে আসার কথা ছিল আপ মুজফ্ফরপুর এক্সপ্রেসের। ট্রেনের অপেক্ষায় ছিলেন বহু যাত্রী। তখনই ঠিক দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ বর্ধমান স্টেশনে ওভারহেড জলের ট্যাংক ভেঙে প্রাণ গেল ৩ যাত্রীর। আহত ৩৩ জন। প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানিয়েছেন ২ এবং ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মের মাঝে অবস্থিত ওই জলের ট্যাঙ্ক থেকে বেশ অনেকক্ষণ ধরেই জল পড়ছিল। তার পরছি হঠাৎ বিকট শব্দে ভেঙে পড়ে ট্যাঙ্ক। প্ল্যাটফর্মের শেডের ওপর ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়াতেই বিপত্তি। এই দুর্ঘটনায় তাড়াহুড়ো পালাতে গিয়েও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
কিন্তু কিভাবে ঘটল এমন ঘটনা। নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, বহু দিন ধরেই বেহাল দশা ওই ট্যাঙ্কের। রোজই ট্যাঙ্ক থেকে জল পড়ত, এমনকি ট্যাঙ্কের তলা দিয়ে আসার সময় ভিজেও যেতেন যাত্রীরা। কিন্তু তা মেরামতের কোনও উদ্যোগই নেয়নি রেল কর্তৃপক্ষ। তার জেরেই এই বিপত্তি বলে অনেকের বিশ্বাস। যদিও এই অভিযোগ মানতে নারাজ রেল। রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, বর্ধমান স্টেশনে ওই জলের ট্যাংকটি নিয়মিত পরিষ্কার করা হত। শেষবার এই ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করা হয়েছিল গত ২ ডিসেম্বর। তখন কোনও সমস্যা ছিল না। তাহলে কেন এই দুর্ঘটনা ঘটল তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।
রেল কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছে মৃতদের পরিবার পিছু ৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে। এছাড়া ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ পাবেন আহতরাও। রেলের পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে এই প্রসঙ্গে কথা বলেছেন মুখ্যসচিব। রাজ্য সরকারের তরফ থেকেও সব রকমের সাহায্যের কথা জানানো হয়েছে।