Close

শান্তিনিকেতন ইউনেস্কোর হেরিটেজ তকমা পেল

বাংলার মুকুটে নয়া পালক। ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তকমা পেল বিশ্বভারতী শান্তিনিকেতন। একজোগে উচ্ছসিত টুইট করলেন মোদী-মমতা।

বাংলার মুকুটে নয়া পালক। ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তকমা পেল বিশ্বভারতী শান্তিনিকেতন। একজোগে উচ্ছসিত টুইট করলেন মোদী-মমতা।

ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তালিকায় স্থান পেল বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতন। রবিবার এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে ঘোষণা করল ইউনেস্কো। বীরভূমের শান্তিনিকেতন যে বিশ্ব ঐতিহ্যশালী স্থানের তালিকায় স্থান পেতে চলেছে, সেই ইঙ্গিত আগেই পাওয়া গিয়েছিল। আর এই রবিবার সেটাই ঘোষণা করল ইউনেস্কো।


এর পরেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পর পর এক্সে নিজস্ব বার্তা লেখেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘আমি খুব আনন্দিত এবং গর্বিত যে গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শহর শান্তিনিকেতন এখন ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বিশ্ববাংলার গর্ব, শান্তিনিকেতনকে লালন করেছেন কবি। প্রজন্মের পর প্রজন্ম একে সমর্থন করে গিয়েছেন বাংলার মানুষ।’’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একই সাথে এও জানিয়েছেন যে, পশ্চিমবঙ্গের সরকার গত ১২ বছর ধরে এর পরিকাঠামো উন্নয়নের করে গিয়েছে, বর্তমানে যাকে স্বীকৃতি দিল ইউনেস্কো।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এর প্রতিক্রিয়ায় এক্সে লিখেছেন, “(আমি) আনন্দিত যে শান্তিনিকেতন, গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দর্শন এবং ভারতের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মূর্ত প্রতীক, ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান পেয়েছে। এটি সমস্ত ভারতীয়দের জন্য একটি গর্বের মুহূর্ত।”


এক্সে ইউনেস্কোর এই স্বীকৃতির কথা পোস্ট করেছে বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসও।

ইউনেস্কোর হেরিটেজের তালিকায় যে নাম উঠতে পারে শান্তিনিকেতন-এর, তা চলতি বছরে রবীন্দ্রজয়ন্তীর পরের দিনই ইঙ্গিত দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি এক্সে লিখেছিলেন, ‘‘গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তীতে সারা দেশের জন্য সুখবর। শান্তিনিকেতন-কে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তালিকায় রাখার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।’’ এই প্রস্তাব দিয়েছিল ইউনেস্কোর উপদেষ্টা সংগঠন ইকোমস। কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক এবং দেশের পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের হয়ে শান্তিনিকেতনের জন্য দাবিপত্রটি সংরক্ষণ স্থপতি আভা নারায়ণ লাম্বা এবং মনীশ চক্রবর্তী মিলে তৈরি করেছিলেন।

শান্তিনিকেতন বিশ্বের ঐতিহ্যশালী স্থানের তকমা পেল। (এক্সে ইউনেস্কোর পোস্ট থেকে।)
শান্তিনিকেতন বিশ্বের ঐতিহ্যশালী স্থানের তকমা পেল। (এক্সে ইউনেস্কোর পোস্ট থেকে।)


কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রেড্ডি তখন জানিয়েছিলেন যে, বিশ্বভারতী শান্তিনিকেতন আনুষ্ঠানিক ভাবে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তালিকায় ঠাঁই পেল কি না, তা সেপ্টেম্বর মাসে সৌদি আরবের রিয়াধে একটি সভায় আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করা হবে। শেষ পর্যন্ত সেপ্টেম্বরেই সেই ঘোষণা করল ইউনেস্কো। ১৯০১ সালে প্রায় ১৩০ বছর আগে শান্তিনিকেতনে স্কুল এবং ১৯২১ সালে বিশ্বভারতীর পথ চলা শুরু। ১৯৫১ সালে এই প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি পায়।

তবে গত কয়েক বছর ধরেই এই প্রতিষ্ঠান নিয়ে নানা বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। সমস্যা দেখা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে কেন্দ্র করে। এই মাসেই “রবীন্দ্রনাথ অশিক্ষিত” এমন মন্তব্য করে লাইম লাইটে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তবে এই বিতর্কের মধ্যেই এমন খবর নিয়ে খুশি হয়েছে ছাত্র ছাত্রীরাও। এদিকে এর আগে, আবহমান সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসাবে দুর্গাপুজোকেও স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো। এ বার শান্তিনিকেতন, ইউনেস্কোর হেরিটেজ তালিকায় একক ভাবেই জায়গা করে নিল।

Leave a comment
scroll to top