ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গে এখনও বর্ষা না ঢুকলেও গত তিন-চার দিন ধরে প্রবল বর্ষণ সিকিম সহ উত্তরবঙ্গে। গতকাল থেকে মেঘভাঙা বৃষ্টির ফলে কার্যত ভেসে যাচ্ছে সিকিম। উত্তাল তুং নদী, ভেসে গেল রাস্তা, আটকে বহু পর্যটক।
হিমালয়ের পাদদেশে বর্ষা থিতু। সেই কারণে প্রয়োজনের অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত সিকিমে। বৃহস্পতিবার রাতে মেঘভাঙা বৃষ্টির ফলে হড়পা বান সিকিমের পেগং-এ। বানের ফলে ভেসে গিয়েছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। উত্তর সিকিমের বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট বড় ধসের খবর।
এই অতিবৃষ্টির ফলে রাজধানী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে লাচেন্ ও লাচুং-এর মতো পর্যটন কেন্দ্র। সিকিমের সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছে, আকস্মিক বন্যার কারণে সড়কের অবকাঠামো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ। এই দুর্যোগকে উপেক্ষা করে কোনও মতেই মূল শহরাঞ্চলের সাথে যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব নয়। সূত্রের খবর আজ সকালে ব্রিজ পার করতে গিয়ে তুং নদীতে তলিয়ে যায় একটি গাড়ি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত উত্তর সিকিমের সমস্ত পর্যটন কেন্দ্র ভ্রমণের পারমিট বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে বাড়ছে জল, বাড়ছে ভয়। উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির জেরে হলুদ সতর্কতা জারি তিস্তা নদীতে। জলপাইগুড়ির ডোমহানি থেকে কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত তিস্তা নদীর অরক্ষিত এলাকায় এই সতর্কতা প্রযোজ্য। নদীর জল বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানিয়েছে সেচ দপ্তর। এছাড়াও, এই অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
সেচ দপ্তরের ফ্লাড কন্ট্রোলরুম সূত্রে খবর, শুক্রবার সকালে ব্যারেজ থেকে ছাড়া হয়েছে ২৬৪৭.৬৩ কিউমেক জল। বেলা ১২টার সময় এই পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৩১৭৩.৭৪ কিউমেক। ক্রমবর্ধমান জলতলের জন্য আতঙ্কিত এলাকাবাসী। প্রায় প্রতিবছর বর্ষা কালে বন্যা হয় উত্তর বঙ্গে। কিন্তু দক্ষিণবঙ্গ কেন্দ্রীক সংবাদের ঘনঘটায় আড়ালেই থেকে যায় উত্তরবঙ্গের ‘দুঃখ’। এই নিয়ে দিনকে দিন ক্ষোভ আরও বাড়ছে উত্তরবঙ্গের মানুষের মনে।