ভারতের অন্য রাজ্য গুলির মতো পশ্চিমবঙ্গে সিনেমা হল গুলিতেও ফিরতে চলেছে “দ্য কেরালা স্টোরি“। বৃহস্পতিবার ১৮ই মে পশ্চিমবঙ্গে সিনেমাটির নিষেধাজ্ঞা খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট।
বাঙালী পরিচালক সুদীপ্ত সেনের এই সিনেমাটির উপর পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফ থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় গত ৮ই মে।
রাজ্য সরকারের দাবি এই সিনেমায় ভুল তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে এবং ধর্মীয় বিভেদ প্রচার করা হয়েছে, তাতে বাংলার আইনশৃঙ্খলা নষ্ট হতে পারে। সিনেমাটি পরিবেশিত তথ্যের সত্যতা নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন তুলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার, রাজ্যের বুদ্ধিজীবি এবং রাজনীতিবিদদের একাংশ।
কেরালা হাইকোর্টে কেরালা সরকারের করা মামলায় পরিচালক প্রশ্নের মুখে পড়ে যে, সিনেমায় দেখানো “৩২০০” হিন্দু মহিলাকে যে জঙ্গি দলে পাঠানো হয়েছে, এই তথ্যের উৎসের হদিশ জানতে চাইলে পরিচালক সংখ্যাটি সরাসরি “৩” এ নামিয়ে আনেন। প্রশ্ন ওঠে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে সংখ্যালঘুদের প্রতি হিংসা সৃষ্টি উদ্দেশ্যে এই অতিরঞ্জনের করা হয়েছে কিনা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে “দ্য কেরালা স্টোরি” নিষিদ্ধ করার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নেটিজেনদের মধ্যে প্রবল বিরোধীতা এবং সমর্থনও কুড়ায় মমতার সরকার।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল জবাব চলাকালীন তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে রাজ্য সরকার এবং নিষিদ্ধকরণ বাতিল করা হয়। রাজ্য সরকারের হলফনামায় মহারাষ্ট্রের অশান্তির কথা উল্লেখ করলে তা কোর্টের তরফ থেকে বাতিল করা হয়।মহারাষ্ট্রে অশান্তির পরও সিনেমা নিষিদ্ধ করা হয়নি বলে কোর্টে সওয়াল করেন প্রযোজকের আইনজীবী।
প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, “নির্দিষ্ট কোথাও কিছু হলে সেখানে নিষিদ্ধ করা যেতে পারত, গোটা রাজ্যে কেন? পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ব্যানের নির্দেশের কোনও যৌক্তিকতা নেই। ভাবনার ভিত্তিতে মৌলিক অধিকার খারিজ করা যায় না।” সুপ্রিম কোর্টের সাফ নির্দেশ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে যে জনগনের দ্বারা নির্ধারিত হবে সিনেমার নিষিদ্ধকরণ, এটি জনগণের মৌলিক অধিকার।
এই রায় বেরোনোর পরই তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জানায় ,” রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা বিনষ্ট হলে রাজ্য সরকার তার দায় নেবে না।”
এছাড়াও সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, এই ছবিতে বিধিবদ্ধ সর্তকীকরণ হিসাবে লিখতে হবে প্রযোজনা সংস্থাকে যে ‘এই ছবির গল্পের সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই।’