দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে আবগারি দুর্নীতির নিয়ে মামলা চলছে। এরই মাঝে কেজরির বিরুদ্ধে এনআইএ তদন্তের সুপারিশ করেছেন দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভিকে সাক্সেনা। সাক্সেনার দাবি খালিস্তানিদের থেকে টাকা নিয়েছেন আপ নেতা কেজরিওয়াল। খলিস্তানপন্থী নিষিদ্ধ সংগঠন ‘শিখস ফর জাস্টিস’ (এসএফজে)-এর থেকে অর্থসাহায্য নেওয়ার অভিযোগে ভিকে সাক্সেনা সোমবার কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে ‘জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা’ (এনআইএ) তদন্তের সুপারিশ করেছেন বলে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে।
বৃহত্তর পঞ্জাব’ নিয়ে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র খলিস্তান রাষ্ট্র গড়ার দাবিতে সক্রিয় এসএফজে নামের এই সংগঠন গত কয়েক বছর ধরেই ভারতের বিরুদ্ধে নানা নাশকতামূলক তৎপরতায় জড়িত বলে গোয়েন্দাদের মত। এরপর দ্বিতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় এসে ২০১৯ সালের ১০ জুলাই এসএফজেকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। সেইসময় কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছিল, ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতার জন্য বড়সড় হুঁশিয়ারি এই সংগঠন। এরপর ২০২০ সালে সংগঠনের নেতা সংগঠনের প্রধান গুরপতবন্ত সিংহ পন্নুনকে জঙ্গি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সেই নিয়ে ইন্টারপোলকে ‘রেড নোটিস’ জারি করার অনুরোধও জানানো হয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। কিন্তু এনআইএর বক্তব্য তার পরেও কানাডায় বসে এই সংগঠন ‘ভারত বিরোধী’ ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ প্রচার করে চলেছে।
গত সপ্তাহে মার্কিন দৈনিক ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’-এ প্রকাশিত একটি রিপোর্টে পান্নুনকে ‘ভারত বিরোধী’ বলে উল্লেখ করে দাবি করা হয় যে, আমেরিকার মাটিতে পন্নুনকে হত্যার চেষ্টা করেছিল ভারতের গুপ্তচর সংস্থা ‘র’।এর আগে গুরপতবন্ত সিংহ পন্নুন সম্প্রতি দাবি করেছিলেন, নব্বইয়ের দশকে ধৃত খলিস্তানি নেতা দেবেন্দ্র পাল সিংহ ভুল্লারকে দিল্লির জেল থেকে ছাড়ার শর্তে ২০১৪ থেকে ২০২২ পর্যন্ত প্রায় এক কোটি ৬০ লক্ষ ডলার (প্রায় ১৩৩ কোটি টাকা) অর্থ সাহায্য করা হয়েছে আপ নেতৃত্বকে। পন্নুনের ওই বিবৃতির পরেই বিজেপি এবং তার সহযোগী দলগুলি কেজরীর বিরুদ্ধে এনআইএ তদন্তের দাবি তুলে সরব হয়েছিল।
গত মার্চ মাসে পন্নুন একটি ভিডিয়ো বার্তায় দবি করেছিলেন, কেজরীওয়ালকে তাঁরা আট বছরে ১০০ কোটি টাকার বেশি অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছেন। এই ভিডিওতে পন্নুন দাবি করেছিলেন, বিনিময়ে ১৯৯৩ সালে দিল্লি বিস্ফোরণ কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত দেবেন্দ্র পাল সিংহ ভুল্লারকে ছেড়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল দিল্লির আপ সরকার। ২০২২ সালে পঞ্জাবের বিধানসভা ভোটের আগেও এসএফজের তরফে আপকে বিপুল অর্থ দেওয়া হয়েছিল বলে এসএফজে নেতৃত্বের দাবি করে। যদিও দিল্লির আপ নেতৃত্বের বক্তব্য, পন্নুন মিথ্যা বলছেন। তাঁদের দাবি, আপ দেশবিরোধী কাজ করে না এবং খালিস্তানপন্থীদের সাথে তাদের কোনো যোগাযোগ নেই।