Close

ভোটার-টার্নআউট তথ্য প্রকাশ মামলায় এখনই হস্তক্ষেপ নয়, সুপ্রিম কোর্ট

এখন ভোট পর্বের মধ্যে এই মামলায় কোনও হস্তক্ষেপ করা হবে না। সুপ্রিম কোর্টের গ্রীষ্মাবকাশের ছুটির পরেই মামলা শোনা হবে। ফলে শুক্রবারের শুনানিতে স্বস্তিতে ভারতের নির্বাচন কমিশন।

ছবি সূত্র, নির্বাচন কমিশন

২৪ মে সুপ্রিম কোর্ট একটি এনজিওর আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে, যাতে লোকসভা নির্বাচনের প্রতিটি ধাপের ভোটের পরে বুথ অনুযায়ী রেকর্ড করা ভোটের তথ্য অর্থাৎ ফর্ম ১৭C সার্বজনীন করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে বলা হয়েছিল।

ভোটার-টার্নআউট তথ্য বিতর্ক কী ?

অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (এডিআর) সুপ্রিম কোর্টে তাদের আবেদনে বলছেন যে চলমান লোকসভা নির্বাচনে, ইসিআই বেশ কয়েকদিন বিলম্বের পরে ভোটারদের ভোটের তথ্য প্রকাশ করেছে। ১৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত প্রথম ধাপের ভোটের তথ্য ১১ দিন পরে প্রকাশিত হয়েছিল, যেখানে ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনের তথ্য ৪ দিন পরে প্রকাশিত হয়েছিল।

ইসিআই দ্বারা প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটার টার্নআউট তথ্য প্রাথমিক তথ্যের তুলনায় ৫/৬ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ায় এই বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। তবে ইসিআই এটিকে সামান্য ঘটনা বলেই আখ্যা দিয়েছে। ইসিআই এর মতে অনেক বুথ খুবই দুরদুরান্তে এবং দুর্গম অঞ্চলের অবস্থিত ফলে সেগুলিকে প্রাথমিক তথ্যে সংযোগ করা সম্ভব হয়না। যা পরবর্তীতে যোগ করা হয়।

নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় ফর্ম ১৭C কি ?

ফর্ম ১৭C তে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রের মোট ভোটার ও ভোট দানকারীর সংখ্যা সহ ইভিএম-এর শনাক্তকরণ নাম্বর, মোট প্রার্থীর সংখ্যা,রেজিস্টারে স্বাক্ষর করার পর ভোট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া মোট ভোটার, এমন ভোটার যাদের ভোট দিতে দেওয়া হয়নি এবং প্রতি ইভিএমে মোট কতগুলি ভোট পড়েছে সমস্ত তথ্য থাকে।

কেন ইসিআই ফর্ম ১৭C প্রকাশ করতে অস্বীকার করেছে ?

নির্বাচন কমিশন নিজেদের হলফনামায় সুপ্রিম কোর্টকে বলেছে, বুথ ভিত্তিক ভোটের তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করার কোনও আইন নেই। এতে ভোটাররা বিভ্রান্ত হতে পারেন। প্রার্থী বা তার এজেন্ট ছাড়া অন্য কোনও ব্যক্তিকে ফর্ম ১৭C প্রদান করা যাবে না। ইসিআই আরও বলে।

১৭C-এর সর্বজনীন করলে এটিকে কাজে লাগিয়ে অসামাজিক তত্ত্বারা ভুয়ো তথ্য ছড়াতে পারে নির্বাচনের সময়। ইসিআই আরও দাবি করেছে যে সংবিধানের ৩২৯ (B) অনুচ্ছেদের অধীনে, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বিচারিক হস্তক্ষেপ বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত নিষিদ্ধ।

ইসিআই ফর্ম ১৭C আপলোড করার ক্ষেত্রে জটিলতা এবং অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতাগুলিও ব্যাখ্যা করেছে এবং নির্বাচনের মাঝপথে আবেদনকারীদের এই প্রার্থনাগুলিকে রাজনৈতিক ভাবে অনুপ্রাণিত বলেছে।

সুপ্রিম কোর্টের রায়।

২০১৯ সালের মূল মামলা। এখনও তার নিষ্পত্তি হয়নি। তাহলে এখন আচমকাই ভোট ঘোষণার পরে কেন ফের সেই পুরনো মামলার অন্তর্বর্তী আদেশ আশা করছেন? কেন ১৬ মার্চ লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণার আগে মামলা নিয়ে উদ্যোগী হননি? শুক্রবার শুনানির এমনটাই বলেছে সুপ্রিম কোর্ট।

বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি সতীশ চন্দ্র শর্মার বেঞ্চ স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে, পাঁচ দফা ভোট হয়ে গিয়েছে। শনিবার ষষ্ঠ দফার ভোট। তাই এখন ভোট পর্বের মধ্যে এই মামলায় কোনও হস্তক্ষেপ করা হবে না। সুপ্রিম কোর্টের গ্রীষ্মাবকাশের ছুটির পরেই তা শোনা হবে। ফলে শুক্রবারের শুনানিতে স্বস্তিতে ভারতের নির্বাচন কমিশন। আবেদনকারী তৃণমূলের মহুয়া মৈত্র এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মসের (এডিআর) দাবি মতো তাদের ফর্ম ১৭C র তথ্য আপলোড করতে হচ্ছে না।


রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র যিনি ভূ-রাজনীতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কে আগ্রহী। তাঁর লেখার মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক ঘটনাগুলিকে ভারতের দৃষ্টিকোণ থেকে তুলে ধরার চেষ্টা করেন।

Leave a comment
scroll to top