শুক্রবার, ১৩ই জানুয়ারি ২০২৩-এ, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি কেএম জোসেফ এবং বিভি নাগারথনার সমন্বয়ে গঠিত একটি বেঞ্চ বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার এক গুচ্ছ আবেদনের শুনানি চলাকালীন তুলোধুনো করেন ভারতের কিছু সংবাদমাধ্যমকে। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ প্রচারের অভিযোগ উঠেছে কিছু নির্দিষ্ট সংবাদ পরিবেশনের নামে পঞ্জীকৃত টেলিভিশন চ্যানেলের বিরুদ্ধে।
লাইভ ল জানিয়েছে যে বিদ্বেষ প্রচার নিয়ে বিচারপতি জোসেফ বলেন, “সবকিছুই টিআরপি দিকে লক্ষ্য রেখে করা হয়। চ্যানেলগুলো একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতা করছে। তারা বিষয়গুলিকে চাঞ্চল্যকর করে তোলে, এসব একটি উদ্দেশ্য পূর্ণ করার জন্য করা হয়। আপনারা ভিজ্যুয়াল উপাদানের মাধ্যমে সমাজে বিভাজন তৈরি করেন। একটি সংবাদপত্রের চেয়ে ভিজ্যুয়াল মাধ্যম আপনাদের অনেক বেশি প্রভাবিত করতে পারে… আমাদের দর্শকেরা, তারা কি এই বিষয়বস্তু দেখার জন্য যথেষ্ট পরিপক্ক?”
বিচারপতি জোসেফ নিউজ ব্রডকাস্টার এবং ডিজিটাল অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবীকে জিজ্ঞাসা করেন, “টিভি অনুষ্ঠানের সঞ্চালকেরা যদি নিজেরাই সমস্যার অংশ হয় তাহলে কী করা যায়? এনবিএসএ-র পক্ষপাতদুষ্ট হওয়া উচিত নয়। আপনি কতবার সঞ্চালকদের সরিয়ে দিয়েছেন?”
বিচারপতি জোসেফ আরো বলেন, “একটি লাইভ প্রোগ্রামে, অনুষ্ঠানের স্বচ্ছতার চাবিকাঠি সঞ্চালকের হাতে থাকে। সঞ্চালক যদি স্বচ্ছ না হয়… সঞ্চালক কিছু দিকে আলোকপাত করতে চাইবে, অন্য দিককে চেপে দেবে, এক পক্ষকে প্রশ্ন করবে না। …এটি পক্ষপাতিত্বের একটি অনস্বীকার্য চিহ্ন। মিডিয়ার লোকদের অবশ্যই শিখতে হবে… তাদের দেখতে হবে যে তারা অনেক শক্তিশালী অবস্থানে আছে এবং তারা যা বলছে তা পুরো দেশকে প্রভাবিত করছে।তাদের বুঝতে হবে যে তারা যেভাবে চায়, সেভাবে তাদের মনের কথা বলার কোন অধিকার নেই।”
বিচারপতি বিদ্বেষ প্রচারকারী চ্যানেলগুলো কে নিয়ে মতামত দেন যে আপত্তিকর সঞ্চালকদের “প্রচার বন্ধ করা উচিত” এবং যে চ্যানেলগুলি প্রোগ্রাম কোড লঙ্ঘন করছে তাদের উপর মোটা জরিমানা আরোপ করা উচিত। “যেখানেই এটি গুরুত্বপূর্ণ, আপনি তাদের আর্থিকভাবে আঘাত করুন,” তিনি বলেন।
সুদর্শন টিভি সহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম “UPSC জিহাদ” “করোনা জিহাদ” ইত্যাদি নামে বা গত বছর হরিদ্বারে ধর্ম সংসদে ও দিল্লীতে দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ প্রচারের বিরুদ্ধে এবং বিদ্বেষ প্রচার রুখতে নির্দিষ্ট বিধিমালা তৈরির জন্য একাধিক পিটিশন জমা পড়ে সুপ্রিম কোর্টে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে দিল্লী পুলিশ অভিযোগ দায়ের করলেও তদন্তের কোনো প্রগতি এখনো কেন হয়নি সেই নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে বেঞ্চ।