সৌদি আরবের সংবাদপত্র আশরাক আল-আওসাত সূত্রে খবর, হুতি কর্মকর্তাদের সঙ্গে স্থায়ী শান্তিচুক্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আগামি সপ্তাহে একটি সৌদি-ওমানি প্রতিনিধি দল বৈঠকে বসতে চলেছেন। এ বিষয়ে সৌদি এবং ইয়েমেন দু সরকারের তরফেই কোন মন্তব্য করতে অস্বীকার করা হয়েছে।
২০১৪ তে মান্য প্রেসিডেন্ট হাদির সরকারকে রাজধানী সানা থেকে ক্ষমতাচ্যুত করে ইরান সমর্থিত হুতিরা কার্যত উত্তর ইয়েমেনে কর্তৃত্বের আসনে। তারা বলে তাদের উত্থান দূর্নীতিগ্রস্থ ব্যবস্থা এবং বিদেশী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে।
২০১৫ পরবর্তী সময়ে প্রতক্ষ কিংবা পরোক্ষ ভাবে চার লক্ষাধীক মানুষ নিহত হয়েছেন, তার শেষ ঘোষনা করতে এই প্রস্তাব করেছে জাতিপুঞ্জ, যা তিন দফায় কার্যকর করার কথা ভাবা হয়েছে।
হুতি ও সৌদি-ওমানি শান্তিচুক্তির প্রথম দফায়, দেশ জুড়ে যুদ্ধবিরতি, স্থল-জল-আকাশ পথ খুলে দেওয়ার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলো কে সংযুক্তিকরণ এবং বন্দি বিনিময়ের মতো বিষয়গুলো জায়গা পেয়েছে। রয়টার্স সূত্রের খবর, যদি শান্তিচুক্তি সম্ভব হয় তাহলে ২০শে এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া ইসলামের ঈদ-উল-ফিতরের ছুটির আগে লাগু হতে পারে।
যদিও বিশ্লেষকেরা মনে করছেন এই প্রকৃয়ায় বাধা আসতে পারে আমেরিকা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের পক্ষ থেকে।
সংযুক্ত আরব আমিরাত দক্ষিণ ইয়েমেনের অধিকাংশ বন্দর নিয়ন্ত্রণ করে, যেখান থেকে ইয়েমেনি তেল রপ্তানি হয়। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারনে বেশ কিছু জরুরি সমুদ্র তীরবর্তি অঞ্চল তাদের দখলে এবং ইয়েমেনি জলপথে তাদের নিয়ন্ত্রণ রাখতে চাইছে। বিশ্লেষকদের মতে এই শান্তি চুক্তিতে তারা খুশি হবেন না।
এই সংঘর্ষের ফলে আমেরিকা যে মুনাফা তুলছিল অস্ত্র বেচে তা ব্যহত হবে এই চুক্তিতে। আমেরিকা সকারের রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৫ থেকে ৫৪ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রি করেছে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতকে। যা তাদের বৈদেশিক অস্ত্র বিক্রয় প্রকৃয়ারা ১৭ শতাংশ।
মূল আলোচ্য বিষয়গুলি হল ইয়েমেনের বন্দর এবং বিমানবন্দরগুলি সম্পূর্ণরূপে পুনরায় চালু করা, সরকারী কর্মচারীদের জন্য মজুরি প্রদান করা, একটি পুনর্নির্মাণ প্রক্রিয়ার পরিকাঠামো নির্মাণ করা এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তনে দৃষ্টি দেওয়া।
সৌদি জোট ইয়েমেনের দক্ষিণ বন্দরগুলির দিকে আমদানির উপর আট বছরের পুরনো নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। এর পর ফেব্রুয়ারী মাসে দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর, হুথি-অধিকৃত পশ্চিমাঞ্চলীয় বন্দর হোদেইদাহতে বাণিজ্যিক পণ্য প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে।
ইয়েমেনি সরকার বৃহস্পতিবার বলেছে বাণিজ্যিক জাহাজগুলিকে এডেন সহ দক্ষিণের বন্দরে সরাসরি ডক করার অনুমতি দেওয়া হবে এবং কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া সমস্ত পণ্য খালি করা হবে।
ইয়েমেনের চেম্বারস অফ কমার্সের ডেপুটি হেড আবু বকর আবেদ রয়টার্সকে বলেছেন যে, ২০১৫ সালে আরব জোট ইয়েমেনে হস্তক্ষেপ করার পর, প্রথমবারের মতো নিরাপত্তা পরীক্ষার জন্য জেদ্দার সৌদি লোহিত সাগর বন্দরে জাহাজ থামতে হবে না।
আবেদ বলেন, দক্ষিণ বন্দরগুলির মাধ্যমে ইয়েমেনে সার এবং ব্যাটারি সহ ৫০০ টিরও বেশি পণ্য নিষিদ্ধ পণ্যের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে।