মানবাধিকার কর্মী এ. ভাসু, যাকে ‘গ্রো’ ভাসু বলেও সম্বোধন করা হয়, আরও কিছু সময়ের জন্য বন্দী থাকতে পারেন কারণ, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি প্রত্যাহার করার জন্য আদালতে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। রাজ্যের শীর্ষ আইনি অফিসারদের মতে, যখন মামলাটি আগামী সপ্তাহে বিবেচনার জন্য আদালতে উপস্থাপন করা হবে, কেরলের রাজ্য সরকার অবশ্য তার বয়স এবং অন্যান্য বিষয় বিবেচনা করে তার প্রতি “সহানুভূতিশীল এবং নম্র” অবস্থান নেবে বলেই মনে হয়।
৯৪ বছর বয়সী প্রাক্তন নকশাল নেতা, যিনি সম্প্রতি ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪১ এবং ৩৫৩ ধারার আওতা গ্রেপ্তার হয়েছেন। সংশ্লিষ্ট ধারা অনুযায়ী, বেআইনি সমাবেশ এবং আক্রমণ বা অপরাধমূলক বল প্রয়োগ করে একজন সরকারী কর্মচারীকে তার দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখা এর অন্তর্ভুক্ত অপরাধগুলির অন্যতম। তাছাড়া তিনি মামলা সংক্রান্ত নথিপত্রে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করেন এবং পুলিশ তাকে বিচারবিভাগীয় তদন্তের জন্য আদালতে হাজির করলে তিনি জামিন না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
কোঝিকোড় মেডিক্যাল কলেজ পুলিশ, নীলাম্বুরে সিপিআই (মাওবাদী) কর্মী কপ্পাম দেবরাজন এবং অজিথার কথিত এনকাউন্টার হত্যার বিরুদ্ধে নভেম্বর ২০১৬ সালে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে বিক্ষোভ করার জন্য তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাকে চিহ্নিত করে গত শনিবার তাকে গ্রেপ্তার করেছিল। আদালতে হাজির করা হলে বিচারক ভাসু-কে জানান যে তিনি তার ব্যক্তিগত জামিনে মুক্তি পেতে পারেন। তবে জামিন নেওয়ার বদলে জেল হেফাজতই বেছে নেন তিনি। পরে, আদালত তাকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠায়। তাকে কোঝিকোড়ের সাব জেলে নিয়ে যাওয়া হয়।
রাজ্য সরকার মানবাধিকার কর্মী ভাসুর বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের জন্য আদালতে যাবে না কারণ এটি সাধারণের কাছে একটি ভুল সংকেত পাঠাবে এবং একটি ভুল নজির স্থাপন করবে বলে তারা মনে করে। এই ধরনের পদক্ষেপ আইনের শাসনের উপরও প্রশ্ন উত্থাপন করবে বলে রাজ্যের শীর্ষস্থানীয় আইনী কর্মকর্তা বলেছেন। প্রসিকিউশন প্রত্যাহার শুধুমাত্র আদালতের সন্তুষ্টির জন্য করা যেতে পারে। এটিও একটি সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া, তিনি বলেন। মামলা প্রত্যাহারের আবেদন নিয়ে এখনও পর্যন্ত কেউ রাজ্য সরকারের কাছে যাননি। যদিও রাজ্য সরকার তার প্রতি অত্যন্ত নম্র ও সহানুভূতিশীল পন্থা অবলম্বন করেছে বলে জানা গিয়েছে। তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী তাকে অব্যাহতি দিতে বা খালাস দিতেও এর কোনো আপত্তি নেই। প্রসঙ্গত, কয়েকজন সমাজকর্মী ভাসু-র বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে প্রকাশ্যে প্রচারণা শুরু করেছেন বলে জানা গিয়েছে।