হাওড়ার আমতায় নিহত বাম ছাত্র নেতা আনিস খানের দাদা সামসুদ্দিন খানকে এ বার পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী করেছে সিপিএম। অভিযোগ তারপর থেকেই শাসক তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা গোটা পরিবারকেই হুমকি দিচ্ছে। ভোটের মুখে এমনই অভিযোগ তুললেন আনিস এবং সামসুদ্দিনের বাবা সালেম খান। পরিবারের নিরাপত্তার জন্য তাঁরা রাজ্য নির্বাচন কমিশন এবং পুলিশেরও দ্বারস্থ হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। শাসকদল অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, সিপিআইএম আনিসের পরিবারকে ভুল বুঝিয়ে নোংরা রাজনীতি করছে।
গত বছর ১৮ ফেব্রুয়ারি আনিসকে তাঁর বাড়িতে ঢুকে খুনের অভিযোগ ওঠে আমতা থানার পুলিশের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। ঘটনার পর এক বছর পেরিয়ে গিয়েছে। আনিস হত্যার প্রতিবাদীদের সিবিআই তদন্তের দাবি মেটেনি। আনিসের মৃত্যুর বিচার চাইতে এ বার জনতার দরবারে গিয়েছেন স লেম খান ও সামসুদ্দিন খান। কুশবেড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতির ৪২ নম্বর আসনে প্রার্থী হয়েছেন সামসুদ্দিন।
আনিস খানের সালেম খানের অভিযোগ, তৃণমূলের গুন্ডারা তাঁদের হুমকি দিচ্ছেন। প্রচারেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। বুধবার দুপুরে উলুবেড়িয়ায় সাংবাদিক বৈঠকে সালেম বলেন, ‘‘বাড়ির সামনে পুলিশ পাহাড়া থাকলেও পুলিশ তৃণমূলের লোকেদের সঙ্গেই মেলামেশা করে। এতে আমাদের গোটা পরিবার আতঙ্কিত।’’ কেন্দ্রীয় নিরাপত্তারও দাবি জানিয়েছেন আনিসের বাবা। তিনি বলেন, ‘‘আমরা চাই, কেন্দ্রীয় বাহিনী ভোটের দিন আমাদের নিরাপত্তায় থাকুক। নিরাপত্তার জন্য আমরা রাজ্য নির্বাচন কমিশন, উলুবেড়িয়ার এসডিও এবং পুলিশকে চিঠি লিখেছি। কিন্তু এখনও কোনও উত্তর পাইনি।’’
প্রসঙ্গত গত বিধানসভা ভোটের সময় নির্বাচন পরবর্তী হিংসার অভিযোগে পুলিশ প্রশাসন তথা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ছাত্র নেতা আনিস। তারপরেও প্রশাসনের অসহোযোগীতার কথা সামাজিক মাধ্যমে ব্যক্ত করেছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, প্রাণ ভয়ে বার বার নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেছিলেন নিহত ছাত্রনেতা। কিন্তু লাভ হয়নি কোনও। সমাজের রক্ষকদের বিরুদ্ধেই তাকে বাড়ি ঢুকে খুন করার অভিযোগ ওঠে। এবারেও সেই একই অভিযোগে শাসক দলের গা জোয়ারি। সালেম খানের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এলাকার তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সিপিএমের হাওড়া জেলা সম্পাদক দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘‘আনিস খানের মৃত্যুর ঘটনায় ওঁর বাবা, দাদা দু’জনেই সাক্ষী। তাই ওঁদের ক্ষমতা যাতে না বাড়ে, সে জন্য এ সব করছে তৃণমূল কংগ্রেস।… ওদের নিরাপত্তা দেওয়ার দরকার। আর পুলিশ সেই নিরাপত্তা দিতে পারবে না, কারণ পুলিশই আনিসকে খুন করেছে! কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে নিরাপত্তা দিতে হবে। তৃণমূল যা করছে করুক। এর প্রতিরোধও হবে। মানুষই প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন। ভোটেই তার প্রতিফলন দেখা যাবে।’’